২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

গৌরনদীতে আসামিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাদী ধর্ষিতা নারী

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে ওই মামলার আসামি স্থানীয় এক গ্রাম পুলিশ।

প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে- ২৯ আগস্ট রাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার একটি গ্রামের এক দিনমজুরের স্ত্রী (৪০) ধর্ষণের শিকার হন। ওই দিন রাতে গৃহবধূর স্বামী গ্রামের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন।

এই সুযোগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণ কান্ত (৫০) ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে মারধর করেন। ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁকে মুখে কাপড় গুজে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় পরদিন গৃহবধূ বাদী হয়ে কৃষ্ণ কান্তের বিরুদ্ধে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন। কিন্তু আজও আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

গৃহবধূ বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণ কান্ত আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তোকে ধর্ষণ করে আমি জেলে যাব না। মামলা না ওঠালে (প্রত্যাহার না করলে) তোকে হত্যা করে আমি জেলে যাব।’

গৃহবধূ আরও বলেন, ‘আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও এই দুই মাসেও তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

উল্টো মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আসামির অব্যাহত হুমকির মুখে আমি আত্মগোপনে আছি।

বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

গত বৃহস্পতিবার আমি থানায় গিয়ে বিষয়টি জানাতে চাইলে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। পুলিশের পক্ষপাতিত্বের কারণে আমি থানা-পুলিশের কাছ থেকে নিরাপত্তা ও বিচার কিছুই পাব না।’

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে আসামি কৃষ্ণ কান্ত বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’

রতœপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, কৃষ্ণ কান্ত দীর্ঘ দিন ধরে ওই গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ ঘটনায় তিনি একাধিকবার সালিস করেছেন।

সেখানে গ্রাম পুলিশ কৃষ্ণকে তিনি সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠার পর কৃষ্ণকে তিনি ইউপিতে আসতে বারণ করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আসামি পলাতক। তা ছাড়া বাদীকে সাক্ষী নিয়ে থানায় আসতে বলা হয়েছে কিন্তু আসেননি।

আমি বাদীর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে খুঁজে পাচ্ছি না। তাঁকে আসামির পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আমি অবহিত নই।’

আগৈলঝাড়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক মোল্লা বরিশালটাইমসকে বলেন- ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

পেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন