আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সংস্থা সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ সোমবার রাতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের ল্যাবে যে ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে, তাতে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।”
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসে তনুর লাশ পাওয়ার পর থানা পুলিশ ও ডিবির হাত ঘুরে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া সিআইডি কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসে।
সিআইডির কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা বিশেষ সুপার নাজমুল করিম খান বলেন, “ডিএনএ পরীক্ষায় কয়েকজন পুরুষের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।”
তনু হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ধর্ষণের সন্দেহের কথা জানালেও ১৫ দিন পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক দল ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে সেই ধরনের আলামত না পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।
এরপর আদালতের আদেশে কবর থেকে লাশ তুলে তনুর দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয়। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা কাহহার।
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর খুনি কাউকে তিন মাসেও শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।
সেনানিবাসের এই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে; যদিও সেনাবাহিনী থেকে তদন্তে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
সেনানিবাসের ভেতরে একটি স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তনু। হত্যাকাণ্ডের দিন সন্ধ্যায় ৩০০ গজ দূরে আরেকটি স্টাফ কোয়ার্টারে ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন তিনি।
সেখান থেকে না ফেরার রাতে ইয়ার হোসেন মেয়েকে খুঁজতে বের হন। দুই স্টাফ কোয়ার্টারের মাঝের অনেকটা নির্জন পথের ধারে ঝোঁপের মধ্যে অচেতন অবস্থায় তনুকে পান তিনি।
তনুকে পাওয়ার আগে খোঁজার সময় অপরিচিত কয়েক যুবককে দ্রুত সরে পড়তে দেখেছিলেন বলে ইয়ার হোসেন জানান।
এতদিনেও খুনি শনাক্ত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর মা আনোয়ারা বেগম সম্প্রতি দুই সেনা সসদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তুলে বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
নিম্নবিত্তের পরিবারের সন্তান তনু টিউশনী করে তার পড়ার খরচ জোগানোর পাশাপাশি নাট্য সংগঠনে যুক্ত ছিলেন।