১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বাল্য বিবাহ ঠেকাতে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:২৯ অপরাহ্ণ, ২৪ এপ্রিল ২০১৬

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রানাপাশায় মহব্বত আলী স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী মোসাঃ মেরিনা আক্তারের (১৩) বাল্য বিবাহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জমায়েত ও প্রতিবাদের মুখে বানচাল হয়ে গেছে। উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের দক্ষিন রানাপাশা গ্রামে রবিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কলেজের অধ্যক্ষ মোসাঃ শাহনাজ পারভীন ও সহপাটিরা জানিয়েছে। বাল্য বিবাহ ঠেকাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এ ব্যতিক্রমী পদক্ষেপে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

 
জানাগেছে, নলবুনিয়া গ্রামের দিনমজুর আঃ রাজ্জাক হাওলাদারের কন্যা ও মহব্বত আলী স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী মোসাঃ মেরিনা আক্তার (১৩) কে বিয়ের উদ্দেশ্যে আঃ রব সিকদারের পূত্র মোঃ রিয়াজ সিকদার(৩২) গত শনিবার রাতে দেখতে এসে পছন্দ করলে আংটি বদল হয়। পারিবারিক ভাবে রাতে বিবাহ রেজিষ্ট্রির আয়োজন করলে এলাকার সচেতন কয়েক ব্যক্তি বিবাহ রেজিষ্টার কাজী আঃ রাজ্জাক আকনের কাছে সরকারী আইন অমান্য করে বিবাহ পড়ানোর বিষয় জানতে চাইলে সে কৌশলে বিয়ে বাড়ী থেকে সটকে পড়ে।
এ অবস্থায় ছেলে ও মেয়ের পরিবার পরের দিন রবিবার সকালে পুনরায় অন্য কাজী এনে কাবিন-রেজিষ্ট্রির উদ্দোগ নেয়ার খবর পেয়ে উক্ত কলেজের অধ্যাক্ষ মোসাঃ শাহনাজ পারভীনের নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিয়ের পিড়িতে বসা নাবালিকা ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী মেরিনা আক্তারের বাড়ীতে অবস্থান নেয়। তার মেরিনার বাবা-মায়ের সাথে আলা করে বাল্য বিয়ে না দেয়ার পরামর্শ দেয় ও তাকে লেখাপড়ার করানোর আহব্বান জানায়।
এমন কি তিনি মেরিনার জন্য সরকারী সকল সাহায্য সহযোগিতায় ও বিনা খরচে লেখা পড়ার খরচ বহন করার আশ্বাস দেয়।অন্যদিকে মেরিনার বাড়ীতে অবস্থানরত ছাত্র-ছাত্রীরা ‘বল্য বিয়ে প্রতিরোধ করি! নতুন ভাবে জীবন গড়ি’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এসময় মেরিনা তার সহপাঠি, অন্যান্য শিক্ষাথী সহ শিক্ষকদের তার বাড়ীতে উপস্থিতি দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ও বাল্য বিবাহের প্রচেষ্টা পন্ড হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আমরা প্রতি মাসে গনপ্রতিনিধি ও শিক্ষকদের সাথে বাল্য বিয়ে, যৌতুক সহ নানা সামাজিক অপরাধ কর্মের বিষয়ে সচেতনতা মূলক কর্মশালা করে আসছি। এরফলে সামজিক পর্যায়ে তার প্রতিফলন ঘটছে ও আমরা তার বাস্তবায়নের সুফল পাচ্ছি। এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বাল্য বিয়ে সহ অনেক সমাজিক অপরাধের প্রতিরোধ সম্ভব হবে।

13 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন