২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিএনপি নেতার মেয়ে অপহরণে অসিম আটক, বরিশালে নানা প্রশ্ন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩৮ অপরাহ্ণ, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র বিএনপি নেতা কে এম শহিদুল্লাহর মেয়ে উদ্ধার ও সাধারণ সম্পাদক অসিম দেওয়ানকে অস্ত্রসহ গ্রেফতারের বিষয়টি এখন রীতিমত আলোচনার খোরাক।

কারণ ওই ছাত্রলীগ নেতা এর মধ্যে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে পদ-পদবীও হারিয়ে ফেলেছেন, অর্থাৎ তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এই বিষয়ে কোন কালক্ষেপন না করে সোমবার রাতে আটকে ঘন্টাখানেকের মাথায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

কিন্তু এখন বরিশালে আলোচনার বিষয় হচ্ছে কি ঘটেছিল? এবং কেনই মেয়র কন্যা বোল পাল্টালেন বা অসিমকে পুলিশ আটক করলো। এমন প্রশ্ন ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।

এমতাবস্থায় অনুসন্ধানী সূত্র বলছে, অপহরণ নয়, প্যানেল মেয়র বিএনপি নেতা কে.এম শহিদুল্লাহর হাত থেকে বাঁচতেই পালাচ্ছিল সামন্তা ও অসিম দেওয়ান।

কিন্তু পথিমধ্যে দুজনের মতের অমিল হলে ঝগড়া করছিলেন তারা। ঝগড়ায় সামন্তা উঁচু স্বরে কথা বলায় ফেরির স্টাফরা তাদের পাকরাও করে পুলিশে ন্যস্ত করে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, সামন্তার সাথে ২০১১ সালের শেষের দিকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন অসিম দেওয়ান। এমনকি উভয়ে ঢাকায় স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে পরিচিত ছিল।

অসিম দেওয়ানের এক বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন- সামন্তা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে থাকতেন। অসিম দেওয়ান থাকতেন কলাবাগান এলাকায়। সামন্তা কলাবাগান এলাকার দিকে তেমন একটা না গেলেও অসিম দেওয়ান প্রায় নিয়মিতই সামন্তার ফ্ল্যাটে যেতেন।

এমনকি প্রায় দিনই ২ থেকে ৩ ঘন্টা একই কক্ষে সময় কাটাতেন সামন্তা ও অসিম দেওয়ান। তাদের প্রায়ই যমুনা ফিউচার পার্কের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সময় কাটাতে দেখা যেত।

বিষয়টি সম্পর্কে প্যানেল মেয়র শহিদুল্লাহ অবহিত হলেও অসিমের সাথে সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিলেন না। বরং অসিমের সঙ্গ না ছাড়লে সামন্তার মাকে তালাক ও ভাই ছাদ্দামকে ত্যাজ্য করে দিবেন বলে হুমকি দিতেন।

তারই ধারাবাহিকতায় গত রমজান মাসে শহিদুল্লাহ সামন্তার জন্য অন্যত্র বিয়ের পাত্র দেখা ঠিক করেন। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেন নি অসিম দেওয়ান। এমন সংবাদ শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে সামন্তার বসুন্ধরার বাসায় গিয়ে হট্টোগোল করেন অসিম।

ওই সূত্রটির দাবি, আলোচনার একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে অলিখিত চুক্তি হয় ৬ মাসের মধ্যে তারা কোর্ট ম্যারেজ করে রাখবেন। কোর্ট ম্যারেজের বিষয়ে সামন্তা এগিয়েছে এমন তথ্য জানতে পেরে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান শহিদুল্লাহ।

আরও জানা গেছে, এর পরই বিভিন্ন কৌশলে মেয়ের ও তার স্ত্রীর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করেন।

এদিকে রূপগঞ্জ থানার নির্ভরযোগ্য এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মূলত ভিকটিম যে মেয়ে তার বক্তব্যের বাইরে আমাদের বলার কিছু নেই।

থানায় নিয়ে আসার পরে ভিকটিম আমাদের কাছে স্বীকার করেছিল আটক তার পরিচিত ও দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সর্ম্পক রয়েছে। তবে ভিকটিম তার পরিবারের সাথে কথা বলার পর দাবি করেছেন যে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।

তবে সূত্র বলছে, প্রেম বা অপহরণের চেয়েও আটকের কাছে যে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি পাওয়া গেছে সেটি এই মূহূর্তে প্রাধান্য পাচ্ছে।

এক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কের টানপোড়েন নিয়ে উভয়ই শঙ্কিত ছিল। সেই অবস্থা থেকে অনিয়ন্ত্রিত আলোচনা করতে গিয়ে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির তৈরী হয়েছে।

নয়তো দীর্ঘ দিনের প্রেমিক অসিম দেওয়ান হঠাৎ করে অপহরণ করবে কি কারনে সেই প্রশ্ন নিয়েও চলছে জোর আলোচনা।’’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন