২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিশ্বকাপে দেশপ্রেম দেখাতে গিয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:২৬ অপরাহ্ণ, ২৪ জুন ২০১৮

ফুটবলে অনেক সময়ই জাতীয়তাবাদ একাকার হয়ে যায়। দেশের হয়ে খেললে এর মাত্রা বাড়ে। এটা খুবই স্বাভাবিক। জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েই তো দেশের জার্সিতে খেলতে হয়। দেশপ্রেমের আবেগই তো দেশেরই হয়ে খেলার মূল পুঁজি। কিন্তু দেশপ্রেমের আবেগ যে অনেক সময় বড় বিপদের কারণ হয়, সেটা এখন বুঝতে পারছেন সুইজারল্যান্ডের দুই তারকা জেদরান শাকিরি ও গ্রানিত শাকা। সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল করে এই দুজনই নিজেদের জন্মস্থানের সঙ্গে সার্বিয়ানদের রক্তাক্ত ইতিহাসকে মনে করে দিয়েছেন। ব্যাপারটি পছন্দ করেনি ফিফা।

শাকিরির জন্মস্থান কসোভো। শাকার আলবেনিয়া। কসোভো আর আলবেনিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার টানাপোড়েন অনেক পুরোনো। সার্বিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়েই তো জন্ম হয়েছে কসোভোর। আলবেনিয়াতে ১৯৯৯ সালে সার্ব বাহিনী চালিয়েছিল আগ্রাসন। ২০০৮ সালে স্বাধীন হলেও বেলগ্রেডের (সার্বিয়ার রাজধানী) স্বীকৃতি এখনো মেলেনি। সুইজারল্যান্ডের হয়ে খেললেও সুইস দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়ের নাড়ি পোঁতা আছে কিন্তু কসোভো আর আলবেনিয়াতেই। শাকিরি শাকা ছাড়াও আছেন ব্লেরিম জেমাইলি প্রমুখ।

নব্বইয়ের রক্তক্ষয়ী বলকান যুদ্ধে সার্বিয়ানদের হত্যাযজ্ঞের হাত থেকে বাঁচার জন্য শাকা-শাকিরির বাবা–মা চলে আসেন সুইজারল্যান্ডে। ভুলে যাওয়ার মতো শৈশব কাটিয়েছিলেন শাকা-শাকিরিরা, সেই দুঃখ আর দারিদ্র্য ভুলতেই ফুটবলের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তাঁরা। এখন সুইস দলে খেলা এই দুজন কিন্তু ভোলেননি সেই যন্ত্রণাময় অতীতের কথা। আর তাঁরা যে ভোলেননি, তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল সার্বিয়ার বিপক্ষে তাঁদের গোল উদ্‌যাপনে।

ফুটবল মাঠে রাজনীতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে চায় ফিফা। শাকিরিদের বিতর্কিত উদ্‌যাপন ফিফার এই নীতিকে আঘাত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেটি হলে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন সুইস ফুটবলের এই দুই মূল ভরসা। গ্রুপপর্বের মহাগুরুত্বপূর্ণ শেষ ম্যাচের আগে অবশ্যই সুইজারল্যান্ড কোচ ভ্লাদিমির পেতকোভিচ এমন কোনো খবর শুনতে চান না!

সেদিন মাঠে থাকা সার্বিয়ান দর্শকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ফিফা। সেদিন তারাও নানা ধরনের ব্যানার-ফেস্টুনে মাঠে তৈরি করেছিল অস্থিরতা!

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন