২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বিসিসির প্রকৌশলী লাঞ্ছিত : যুবদল নেতা মোনেমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:২৮ অপরাহ্ণ, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীকে গুলি করে হত্যার হুমকিসহ লাঞ্ছিত করার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিচুজ্জামান বাদী হয়ে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আহসান হাবিব কামালের আস্থাভাজন ‘মেসার্স মিতুসী ট্রেডার্স’র সত্ত্বাধিকারী ঠিকাদার মোমেন সিকদারসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই ডায়েরি করা হয়েছে।’

বিসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিচুজ্জামান বরিশালটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচুজ্জামানকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে নগর ভবনে প্রতিবাদ সভা করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাছাড়া ঘটনার বিচার দাবিতে বিকাল গতকাল ৪টায় নগর ভবনের সামনে মানববন্ধনও করেছে তারা।

বিসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান বলেন, নগরীর আমির কুটির ও কাউনিয়া জানুকি সিংহ রোডের হরিজন কলোনীতে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকায় পুকুরের ঘাটলা ও প্রাচীর নির্মাণ এবং সড়ক পাকাকরণ কাজের ঠিকাদার মোমেন সিকদার। ৩৩ পার্সেন্ট লেস দিয়ে মোমেন সিকদার ওই কাজটি নিয়ে নেন।

প্রথম দফায় কাজ শুরুর আগেই চার লাখ টাকা অগ্রিম বিল দাবি করেন মোমেন সিকদার। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচুজ্জামান তাকে ফিরিয়ে দেন। এর পর বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি তিনি ফের কাজ শুরু করেন। ওই কাজের এখন পর্যন্ত ২০ ভাগও সম্পন্ন হয়নি। তার মধ্যেই মোমেন সিকদার ১ কোটি টাকা বিল দাবি করেন। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী কাজের অতিরিক্ত কোন বিল দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এনিয়ে সোমবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মোমেন সিকদার নগর ভবনে গিয়ে প্রথমে সহকারী প্রকৌশলী মামুনর রশিদের সঙ্গে বাতবিতান্ডায় লিপ্ত হন। পরে নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচুজ্জামানের কক্ষে গিয়ে তার সঙ্গে বাকবিতান্ডার একপর্যায়ে মোমেন সিকদার উত্তেজিত হয়ে তাকে গালিগালাস করেন।

তিনি একাধিকবার তাকে মারতে তেড়ে যান এবং গুলি করে আনিচুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেন। একই সময় তিনি তার সহোদর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহিন সিকদারকে নগর ভবনে ডেকে নেন। তিনিও সেখানে ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে বিকবিতন্ডায় লিপ্ত হন।

উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তারা ঠিকাদার ও যুবদল নেতা মোমেন সিকদারকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। প্রায় আধাঘন্টা উত্তেজিত পরিস্থিতির মধ্যে অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে ছুটে আসলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মোমেন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

বিসিসি’র সহকারী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ বলেন, ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার কাজটি ৩৩ ভাগ লেস দিয়ে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নেন মোমেন সিকদার। এ কাজে নিশ্চিত লোকসান বুঝতে পেরে তিনি আগাম বিল তুলে নিতে তৎপর হন। সম্প্রতি বিসিসিতে সোয়া ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে। তা জানতে পেরে মোমেন সিকদার হরিজন পল্লীর কাজের বিপরীতে ১ কোটি টাকা বিল দেওয়ার জন্য প্রকৌশল বিভাগে চাপ প্রয়োগ শুরু করে।

নগর ভবন ত্যাগ করার পর পরই মোমেন সিকদার মুঠোফোন বন্ধ করে দেয়। যে কারনে বহু চেষ্টা করেও তার বক্তব্য জানা যায়নি। বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াজিদুজ্জামান জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচুজ্জামান তার কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে ঠিকাদার মোমেন সিকদার তাকে লাঞ্ছিত করেছে বলে উল্লেখ্য করেছে। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিধি মোতাবেক এই বিষয়ে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন