২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

বুধবার থেকে সারাদেশে নৌ-যান ধর্মঘট

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৫৫ অপরাহ্ণ, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং ডাকাতি বন্ধসহ ১৫দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে বুধবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে অনিদিষ্টকালের জন্য নৌ-যান ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার বরিশাল নগরীর বান্দ রোডস্থ সংগঠনটির আঞ্চলিক কার্যালয়ে সভা করে এখানকার নেতারা স্বত:ষ্ফুর্তভাবে এ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন।

 

ওই সভায় সংগঠনটির সভাপতি শেখ আবুল হাসেম মাস্টারের সভাপতিত্বে বক্তাব্য রাখেন, সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী মাস্টার, সাধরণ সম্পাদক সিকদার আবুল হাসেম মাস্টার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. একীন আলী মাস্টার, হাজী মো. লাল মিয়া মাস্টার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম মাস্টার প্রমূখ।’

 

সভা শেষে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. একীন আলী মাস্টার বলেন, ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এ যৌক্তিক দাবিগুলো সরকার এবং সংশি¬ষ্ট মন্ত্রণালয় বাস্তবায়নে প্রতিশ্র“তি দিলেও কার্যকরি কোন ভুমিকা দৃশ্যমান নয়। বিশেষ করে একই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে গত ২৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে সারাদেশে নৌ-যান ধর্মঘট পালনের ডাক দিয়েছিলো সংগঠনটি। এমনকি এদিন তারা স্বত:ষ্ফুর্তভাবে তা পালন করায় সারাদেশে নৌ যোগাযোগে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয়।

 

ফলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওইদিনই বেলা ২টার দিকে নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান জরুরী সভা ডেকে সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকে বসেন। এসময় দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে ধর্মঘট তুলে নেয়ার অনুরোধ রাখেন তিনি। যার প্রেক্ষিতে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট তুলে নেন। কিন্তু এর পরে দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এসব দাবি বাস্তবায়নে কোন ভুমিকা রাখা হয়নি। উল্টো নানা ধরণের টালবাহানা করা হয়। যা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন শ্রমিক নেতারা।’ এমতাবস্থায় ফের দাবিগুলো বাস্তবায়নের লক্ষে বুধবার মধ্যরাত অর্থাৎ ১২টা ১মিনিট থেকে ধর্মঘটের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছেন।

 

তবে এবার তাদের এ যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এক পাও পিছু হাটবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।’ কেন্দ্রীয় নেতাদের বরাত দিয়ে একীন আলী মাস্টার জানান, এ দাবিগুলো বাস্তবায়নের লক্ষে গত ১০ এপ্রিল রাজধানীতে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর পরে সরকার বা সংশি¬ষ্ট মন্ত্রণালয়ের কোন কর্তা তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। যে কারণে এবার কঠোর সিদ্ধান্তে যেতে শ্রমিকরা বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি।’

 

নৌ-যান শ্রমিকদের অন্য দাবিগুলো হলো, প্রত্যেক নৌ-যান শ্রমিককে নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেয়া। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জাতীয় বেতন স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নৌ-যান শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা, পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের পরিকল্পনা বাতিল করা, শ্রমিকদের ৪৫ দিন অর্জিত ছুটি, ১৫ দিন নৈমিত্তিক ছুটি ও ১৫ দিনের চিকিৎসা ছুটি গেজেটের মাধ্যমে ঘোষণা করা, প্রতি ঈদে এক মাসের মূল বেতনের সমান উৎসব বোনাস, কর্মস্থলে আহত শ্রমিকদের সব চিকিৎসা ব্যয় এবং চিকিৎসাকালীন বেতন মালিকদের পরিশোধ করা, দুর্ঘটনায় ও কর্মস্থলে নিহত শ্রমিকদের মৃতদেহ মালিকের খরচে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো এবং পরিবারকে ১০ লাখ টাকা প্রদান, মাস্টার ও ড্রাইভার পরীক্ষায় দুর্নীতি এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের সব অনিয়ম বন্ধ করা, নদীর নাব্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় খাল খননের ব্যবস্থা করা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও মংলাসহ সব নদী ও সমুদ্রবন্দরে জাহাজ বাঁধার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক মুরিং বয়া স্থাপন করা।

17 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন