২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

ভোলার মেয়ে রাজধানীতে খুন, স্বামী-শ্বাশুড়ি আটক

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৪২ অপরাহ্ণ, ১১ এপ্রিল ২০১৬

বরিশাল: ভোলার মেয়ে শিরিন আক্তার মিনা ওরফে অথই (১৮) রাজধানীর উত্তরায় স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পিয়াস রহমান (২৬) এবং শাশুড়ি পারুল বেগমকে (৪৬) আটক করেছ পুলিশ।

সোমবার (১১ এপ্রিল) ভোরে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাসা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। গৃহবধূ শিরিন আক্তার মিনা ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানাধীন দক্ষিণ বাটা বাজার নামক গ্রামের মো. নুরুল আমিনের মেয়ে।

তার শ্বশুরের নাম মো. আতা রহমান। তাদের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার নিশিদারা মন্ডল পাড়ায়।

তার পরিবার  বর্তমানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন ধানমন্ডিস্থ রায়ের বাজার এলাকার ৩৮ নম্বর বাসায় থাকেন।

উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গতকাল রোববার গভীর রাতে নিহতের লাশ উদ্ধার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

এসময় নিহতের গলায় দাগ, হাতে কামড়ের দাগ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

নিহতের বাবা মো. নুরুল আমিন ভারাক্রান্ত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, প্রেম ভালবাসার মাধ্যমে গত বছরের নভেম্বর মাসের ১৮ তারিখে বিয়ে হয় অথই এবং পিয়াসের। বিয়ের পর থেকেই একটু সুযোগ পেলেই অথইকে মারধর করত স্বামী এবং শাশুড়ি। কিছু হলেই ছোটলোকের বাচ্চা বলে গালিগালাজ করে যৌতুক দাবি করত। প্রায়ই স্বামী এবং শাশুড়ি যৌতুক দাবি করে বলত, ‘তুই মরে যা, নাহলে বাবার বাড়ি চলে যা’।

সর্বশেষ, গত শনিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় ধানমন্ডির বাড়িতে চলে যায় অথই। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে জানা যায়, তাকে প্রচণ্ড মারধরের কারণে সে চলে এসেছে। পরের দিন রোববার পিয়াস তাকে ফোন করে ফুসলিয়ে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যায়। সারাদিন পিয়াস বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডা শেষে বাসায় ফেরে।

নুরুল আমিন বলেন, ‘ওই যাওয়াই অথইয়ের শেষ যাওয়া। সে রাতেই পিয়াসের বাসা থেকে আমাদের কাছে ফোন আসে। ফোনে মেয়ে গুরুতর অসুস্থ, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানায়। খবর পাওয়ার সাথে সাথেই বড় মেয়ে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে অথইকে মৃত দেখতে পায়।’

তিনি সাংবাদিকদের আরো জানান, ফুসলিয়ে মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছিল পিয়াস ও তার মা। যৌতুকের জন্যই তাকে খুন করা হয়েছে। পূর্বে তাকে প্রায়ই বলত, তুই মরে যা, নইলে বাবার বাড়িতে চলে যা। কোনটাই না করার কারণে অবশেষে তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে।’

এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানার ডিউটি অফিসার (এসআই) হেদায়েত সাংবাদিকদের জানান, গৃহবধূ নিহতের ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং-০৯ (তারিখ- ১১-০৪-২০১৬)।

তিনি সাংবাদিকদের আরো জানান, এ ঘটনায় পিয়াস এবং পারুল নামে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে রয়েছে।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন