২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ভোলায় চেয়ারম্যান মেম্বার দ্বন্দ্বে জেলেদের চাল বিতরণ বন্ধ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:০৭ অপরাহ্ণ, ১৮ মে ২০১৭

মেঘনা নদীর উপকূলীয় ২৮০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছিলো সরকার। এই দুই মাস জেলেদের পুনর্বাসনের জন্যে সরকার জনপ্রতি ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে। যা মার্চ মাস থেকে বিতরণ করার কথা ছিলো। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার সময় সীমা শেষ হলেও ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নে পুনর্বাসনের চাল এখনো বিতরণ করা হয়নি।

শুধু জেলে পুনর্বাসনের চালই নয়, ভিজিডির চালও বিতরণ বন্ধ রয়েছে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে- স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণেই বন্ধ রয়েছে চাল বিতরণ।

এই কারণে খাদ্য গুদাম থেকেও গুদাম কর্মকর্তা ইউপি চেয়ারম্যানকে ওই চাল দিচ্ছেন না। ফলে সাধারণ জেলেরা পুনর্বাসনের চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করেন, ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণে তারা জেলে পুনর্বাসনের চাল পাচ্ছেন না।

তবে চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে মোট জেলের সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার। এরমধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা রয়েছে দুই হাজার ৮০০। মার্চ ও এপ্রিল মাসের মৎস্যজীবী জেলে পুনর্বাসনের ১২৯ টন চাল ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চার মাসের ভিজিডি ৭ টন ২০০ কেজি চাল তার নামে ডিও লেটার হলেও খাদ্যগুদাম থেকে তাকে দেওয়া হচ্ছে না।

তার নামে বরাদ্দ দেয়া ওই চাল তিনি বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাক নিয়ে দৌলতখান উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে আনতে গেলে গুদাম কর্মকর্তা মো. আ. রহমান চাল দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

গুদাম কর্মকর্তা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনকে চাল দিতে নিষেধ করেছেন। যে কারণে তিনি চেয়ারম্যানকে চাল দেননি।

ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, তাকে না জানিয়ে ইউপি সচিব সাহাদাত হোসেন রুবেলের সঙ্গে যোগসাজশ করে ইউপি মেম্বাররা দুই দফায় জেলের বিশেষ বরাদ্দসহ ৪১০ বস্তা চাল আত্মসাত করেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনকে জানালেও রহস্যজনক কারণে তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান জানান, চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মেম্বারদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাই চেয়ারম্যানকে ইউএনও ওই চাল দিতে নিষেধ করেছেন।

তবে যেহেতু চেয়ারম্যানের নামে চাল বরাদ্দের ডিও হয়েছে সেহেতু আইনগতভাবে চেয়ারম্যানের চাল পাওয়ার কথা।

এ ব্যাপারে জানতে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল উদ্দিনকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মেম্বারদের দ্বন্দ্ব রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এর আগে মেম্বাররা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন।

ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণে উন্নয়ন কাজ বন্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করে স্থানীয় এমপি আলী আজম মুকুল বলেন, এ বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে। দ্বন্দ্ব নিরসনে এবং এলাকার উন্নয়ন কাজ তরান্বিত করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন