১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

মাদকাসক্ত জুয়েল!, এর আগেও একাধিক গৃহকর্মীকে নির্যাতন করেছিলেন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:৩২ অপরাহ্ণ, ১০ মার্চ ২০১৮

সম্প্রতি দুই গৃহপরিচারিকাকে বাসায় আটকে নির্যাতন করে আলোচনায় আসা জুয়েল আহমেদের রাতারাতি অর্থবিত্তের মালিক বনে যাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। একজন বেকার যুবক মাত্র ৫ থেকে ৭ বছরের ব্যবধানে কীভাবে নিজেকে ধনাঢ্যের তালিকায় নিয়ে আসলেন এনিয়ে সরব বাজার রোড। বিশেষ করে হার্ডওয়ারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে এভাবে ফুলেফেপে ওঠায় ওই এলাকার খোদ ব্যবসায়িরাও অবাক হয়েছেন।

এই অল্প সময়ের মধ্যে বরিশাল শহরে করেছেন একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। তাছাড়া কোটি টাকার জমিও কিনেছেন। বাজার রোডের ব্যবসায়িক পাড়ায় কান পাতলেই এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ফলে তার কোটিপতি বনে যাওয়া নিয়ে চলছে কানাঘুষা। যদিও এমন বাস্তবতায় কেউ কেউ বলছেন হার্ডওয়ারের ব্যবসার অন্তরালে রয়েছে জুয়েলের মাদক ব্যবসা।

আবার অনেকে বলছেন তিনি ভেজাল রঙের ব্যবসা করে টাকা কামিয়েছেন। যা দিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন জমি। একেক জন একেক কথা বললেন জুয়েলের কোটিপতি হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া এই ব্যক্তির বিবাহ প্রতারণার বিষয়টিও এখন সামনে এসেছে। তিনি শহরের পুলিশ লাইনস এলাকার এক প্রভাবশালীর বাংলো বাড়ি দেখিয়ে ইসরাত জাহান দিনারকে বিবাহ করেছিলেন।

পরবর্তীতে এই বিষয়টি জানাজানি হলে তার সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু ওই সময় তার পক্ষে বিশেষ ব্যক্তির অবস্থান থাকায় বিষয়টি আর বেশিদূরে গড়ায়নি। বাজার রোডের এক ব্যবসায়ি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন- জুয়েলের বাবা এসহাক খানের ‘‘এসহাক অ্যান্ড সন্স’’ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল। সেই প্রতিষ্ঠানটির নাম পাল্টে ব্যবসা শুরু করেন জুয়েল। কিন্তু অল্পদিনের ব্যবধানে তিনি কোটিপতি বনে গেছেন। শহরের লাইন রোডও এলাকায়ও করেছেন একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ক্রয় করেছেন জমি। অথচ এই জুয়েল ৫ থেকে ৭ বছর আগেও বেকার ঘুরতেন। সেই সময়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী (র‌্যাবের ক্রোসফায়ারে নিহত) পানামা ফারুকের সাথে থাকতেন। অভিযোগ রয়েছে- ওই সময় জুয়েল মাদকের ব্যবসা করতেন। কিন্তু তার চাচাতো ভাই পানামা ফারুক নিহত হওয়ার কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরে বরিশালে ফিরে বাবার ব্যবসা শুরু করেন।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে- ওই ব্যবসার আড়ালে জুয়েল সেই পুরানো মাদকের ব্যবসা চালিয়েছেন। তাছাড়া তিনি মাদকসেবন করতেন। মূলত তিনি মাদকাসক্ত হয়েই গৃহকর্মীদের মারধর করতেন। অবশ্য গৃহকর্মী মারধরের অভিযোগ এবারই তার বিরুদ্ধে প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার একাধিক গৃহকর্মীকে নির্যাতন করেছিলেন। ওই নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকে বাসা থেকে পালিয়েও গেছে।

অভিযোগ রয়েছে- স্বামীর সাথে সমান তালে গৃহকর্মী নির্যাতন করতেন স্ত্রী ইসরাত জাহান দিনার। আসফিয়া নামের একটি মেয়েকে দেড় বছরের বেশি সময় বাসায় আটকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন করলেন। মূলত ওই ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরপরই জুয়েলে অন্তধন রহস্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। বর্তমানে জুয়েল ও তার স্ত্রী গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় কারাগারে রয়েছেন।

বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হবে। এমতাবস্থায় এলাকাবাসী ও বাজার রোডের ব্যবসায়িরা জোর দাবি রেখেছেন জুয়েলের রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার এই বিষয়টি তদন্ত করে সামনে নিয়ে আসার।’’

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন