২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

মাদক ব্যবসায়ি মনির মোল্লাকে নিয়ে বরিশাল আ’লীগে অস্বস্তি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বর্তমান সময়ে ক্ষমতাসীন দলীয় নেতা জাহিদুর রহমান মনির মোল্লা নিয়ে বরিশাল নগরীতে তোলপাড় অবস্থা চলছে। আকস্মিক এই নেতার মাদক বাণিজ্যের পুরো বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন আলোচনা সমালোচনার কেন্দুবিন্দুতে রয়েছেন। বরিশাল শহরের রুপাতলী এলাকার বাসিন্দা যুব বয়সী মনির মোল্লার এই মাদক কেলেঙ্কারি নগর আওয়ামী লীগের ইমেজের প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।

বিশেষ করে এই ঘটনাটি দলের শীর্ষ নেতাদের অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। যদিও দলটি শীর্ষ সারির নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মাদক ব্যবসায়ি কোন ব্যক্তি আ’লীগে স্থান পাবে না। মাদক সংক্রান্ত কোন বিষয় আ’লীগ প্রশ্রয় দেবে না। মনির মোল্লার বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বিষয়টি পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পাওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারাও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এই বাণিজ্যে তার জড়িত থাকার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনায় প্রকাশ শুক্রবার (২২ সেপ্টম্বর) বরিশাল মহানগরের রূপাতলী ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বিশ্রামাগারের একটি রুমে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান মনির মোল্লার আস্তানায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ।

ওই সময় মনির মোল্লাসহ তার আরও তিন সহযোগীকে আটক করার পাশপাশি ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু অর্থসমঝোতায় কৌশলে এই নেতা ডিবি পুলিশের জাল থেকে বেড়িয়ে যেতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে তার তিন সহযোগীকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গেলে সেখানেও ছাড়িয়ে নিতে চলে রফাদফা।

কিন্তু মিডিয়াকর্মীদের দৌড়ঝাপে সেই মিশনে আর সফল হতে পারেন নি তিনি। বিষয়টি একপর্যায়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিনের কানে পৌছলে ডিবি পুলিশ বাধ্য হয়ে ওই দিন রাত ১২টার দিকে তিনজনকে আটকের খবর দেয়। এমনকি ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করে মিডিয়ার কাছে ৪০০ পিসের খবর প্রকাশ করে।

পরদিন শনিবার বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে মনির মোল্লার তিন সহযোগীকে সোপর্দ করে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- মনির মোল্লা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ওজোপাডিকোর ওই বিশ্রামাগারটি নিজের দখলে নেন।

পরবর্তীতে সেখানে নিরাপদ একটি মাদকের স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন। এমনকি তার ভাই ছাত্রদল নেতা মামুনও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা নিশ্চিত করেছেন। এক্ষেত্রে বলা চলে দুই ভাই মিলে রুপাতলী এলাকাতে মাদকের হোলসেল পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে।

এমতাবস্থায় অস্বস্তিতে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বরিশাল মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলছেন- পত্রপত্রিকার কল্যাণে কেন্দ্রীয় নেতারাও খবরটি পেয়েছেন। সেখান থেকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানানো হয়েছে।

কিন্তু সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বর্তমানে ঢাকায় থাকায় কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি ফিরলে আলোচনা এই বিতর্কের বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে আসতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে আ’লীগ নেতা মনির মোল্লা বরাবরই মাদকের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি মিডিয়ার কাছে অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলছেন- আগামী সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়ার পরই একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’’

 

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন