১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপে আগ্নেয়গিরিতে প্রকৃতির খেলা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৫১ অপরাহ্ণ, ২০ মে ২০১৮

মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কিলাওয়েয়া হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে ওঠে।

জ্বালামুখ থেকে উদগীরন হতে থাকে টগবগ করে ফুটতে থাকা লাভা, ছাই, ধোঁয়ার কুণ্ডলী আর গ্যাস। দু সপ্তাহ পর এখনো অগ্ন্যুৎপাত। এই আগ্নেয়গিরির নাটকীয় কিছু ছবি এরপর থেকে বিস্ময় তৈরি করেছে অনেকের মধ্যে।

আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ তামসিন মাথার ও ডেভিড পাইল আগ্নেয়গিরির নাটকীয় এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করেন।

সৃষ্টি আর ধ্বংস

হাওয়াই দ্বীপের সবচাইতে শক্তিশালী আগ্নেয়গিরি হলো এই কিলাওয়েয়া। ১৯৮৩ সাল থেকে এর পূর্ব অংশ থেকে সারাক্ষণই লাভা বের হয়। সেই লাভার ঝরনা আর তার স্রোতে ১৪৪ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা চাপা পড়ে গেছে।

প্রায় সাড়ে ১৪ কিলোমিটার রাস্তা ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু আগ্নেয়গিরিটির কারণে দ্বীপের সাথে নতুন জমিও তৈরি হয়েছে।

জ্বালামুখ ও লাভা লেক

২০০৮ সালে গ্যাস বের হওয়ার নতুন মুখ তৈরি হতে থাকে। কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে আগ্নেয়গিরিটির জ্বালামুখে রীতিমতো লাভার লেক তৈরি হয়ে গেছে। এ বছরের মার্চ ও এপ্রিলে বন্যার পানির মতো গনগনে সেই লাভার উচ্চতা বাড়তে থাকে। আবার কয়েক সপ্তাহ পর আবার তা নেমে যায়।

লাভার স্রোত

কিলাওয়েয়ার লাভাকে বলা হয় বিশ্বের সবচাইতে গরম। জ্বালামুখের আশপাশে রয়েছে নালার মতো। সেগুলো থেকে ধীরে ধীরে যখন লাভার স্রোত নামতে থাকে তার উপরের অংশে আস্তরণ তৈরি হয়। কিন্তু নিচের দিকে ঠিকই চলে লাল গনগনে লাভার স্রোত।

একইসঙ্গে আস্তে আস্তে স্তর পরে যাওয়া কালো শুকনো লাভা সামনে এগুতে থাকে। মনে হয় যেন সিমেন্টের ব্লক কিন্তু অনেক বেশি কালো তার রং। তার নিচে ধ্বংস হতে থাকে জমি। কখনো স্তর ভেঙে বেরিয়ে আসে নতুন সরু ধারা।

আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ

ভূতাত্ত্বিকরা ১৯৯২ সাল থেকে কিলাওয়েয়া আগ্নেয়গিরির উপর নজর রাখছেন। কিভাবে পৃথিবীর মাটির আবরণের নিচে এর কার্যক্রম চলে সে সম্পর্কে তাদের বেশ ধারণা হয়েছে। তাদের মতে উদগীরনের ধাপে ধাপে ভূপৃষ্ঠে নতুন ফাটল দেখা দেয়।

এর কোনটা দিয়ে গরম গ্যাস বের হয়। আবার কোথাও থেকে জ্বলন্ত লাভা। আস্তে আস্তে লাভা লেকে লাভার উচ্চতা কমতে থাকে এবং তা ভূপৃষ্ঠের পানির স্তরে নেমে যায়। এ সময় বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ভূপৃষ্ঠের পানির সাথে মিশে গেলে ধোঁয়ার বিস্ফোরণ ঘটে।

এতে তৈরি হওয়া গ্যাসে থাকে সালফার ডাই-অক্সাইড। যা বাতাসের মান নষ্ট করে দেয়। তার ফলে শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার প্রকোপ বাড়ে। আগ্নেয়গিরি নিয়ে বহু গবেষণা হলেও এর অনেক আচরণ এখনো সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন