২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সাদিক আব্দুল্লাহ’র বরিশালে ফেরা নিয়ে ধুম্রজাল

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, ২৯ মার্চ ২০১৮

সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হলেও পুরো সংগঠনের নিয়ন্ত্রক তিনি। অবশ্য নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে গোটা বরিশালের নেতাকর্মীদের এককাতারে নিয়েও আসেন। সাবেক জনপ্রিয় সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পরে বরিশাল আ’লীগকে সুসংগঠিত করেছেন। পর্যায়ক্রমে সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশের সমর্থনে প্রভাবশালী নেতায় পরিনত হন সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র পুত্র সাদিক আব্দুল্লাহ। এই নেতা আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীতার প্রবল ইচ্ছা নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন।

যেই বিষয়টি গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল শহরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে নেতাকর্মীদের সমাগমের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু সেই সমাবেশের ২/৩ দিন পরে তিনি আমেরিকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এরপরে দেশে ফেরার ক্ষেত্রে অন্তত ৫ দফা তারিখ দিয়েছেন। তবে ফিরছেন না তিনি। এদিকে বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়ে মাঠে রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম ও আ’লীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন। ফলে সাদিকের দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে বরিশালে তার বিরোধী শিবিরে নানা গুঞ্জন চলছে। সেই গুঞ্জন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে তার অনুসারীরা।

বিশেষ করে নেতা না ফেরার বিষয়ে তারা অনুসারীরা এক ধরনের বিচলিত। তাছাড়া দফায় দফায় ফেরার তারিখ পরিবর্তন করায় এই বিষয়টি নিয়ে বরিশালের নেতাকর্মীদের মাঝে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় বিরোধী শিবির অর্থাৎ দল থেকে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা বা তাদের অনুসারীদের ভাষ্য হচ্ছে- গত ৮ ফেব্র“য়ারি বরিশাল সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাদিককে কোন গ্রীণ সিগনাল দেননি। তাছাড়া বরিশাল শহরে তার একক আধিপত্যের কারণে সভানেত্রী ভিষণ ক্ষুব্ধ। যেই বিষয়টি ওই সমাবেশের দিন প্রধানমন্ত্রী কিছুটা প্রকাশ করেছিলেন।

এমন বাস্তবতায় সাদিক ঘনিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরের ২/১ দিন পরেই তাদের নেতা আমেরিকার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। প্রায় ২ মাস হয়ে আসলেও তার বরিশালে ফেরার বিষয়টি নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে এই সময়ের মধ্যে বরিশালে আ’লীগের কর্মসূচি বা জাতীয় কোন দিবস পালিত হলেও তা তেমন একটা উৎসবমুখর ছিল না। এক কথায় বলা চলে সাদিক বিহীন বরিশাল আ’লীগ অবস্থা অনেকটা লেজেগোবরে। সর্বশেষ গত ২৩ মার্চ তার দাদির মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে বরিশালে ফেরার একটি দিনক্ষণ জানিয়েছিলেন সাদিক। কিন্তু সেই দিনও তিনি ফেরেননি। যদিও এর আগে আরও অন্তত ৪টি তারিখ রেখেছিলেন। তাছাড়া আমেরিকা থেকেও বরিশালের নেতাকর্মীদের সাথে সাদিক এখন অনেকটা যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ফলে সাদিকের দেশে ফেরা না ফেরার বিষয়টি অতটা সহজভাবে নিতে পারছে না অনুসারীরা। খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই নেতা দেশত্যাগের আগে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাতের কাছে রেখে গেছেন।

মূলত আমেরিকায় অবস্থান করার পরপর ছাত্রলীগের এই নেতার সাথেই যোগাযোগ রাখছিলেন সাদিক। কিন্তু বেশ কয়েকদিন যাবত তার সাথেও যোগাযোগ নেই বলে জানা গেছে। এমন বাস্তবতায় সাদিক বিরোধীরা মাঠে জোরালোভাবে আওয়াজ তুলেছেন আগামী সিটি নির্বাচনে জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম বা মহানগর আ’লীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন টিকিট পেতে যাচ্ছেন। মূলত সেই খবর নিশ্চিত হয়েই সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে ফেরার ক্ষেত্রে কালক্ষেপন করছেন।

যদিও সাদিকের আস্থাভাজন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাত জানিয়েছেন তাদের নেতা দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে তিনি দেশে ফিরতে পারেন। তবে একাধিকবার সময় পরিবর্তন’র বিষয়টি নিয়ে তিনিও দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।”

11 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন