২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

সেই ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে নামবে ডিএমপি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ২৫ মে ২০১৮

পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একজন সংবাদপাঠিকাকে ৬৪ টুকরো করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ মে) এ সম্পর্কিত একটি চিঠি ডিএমপিতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র এ তথ্যের সত্যতা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, মিজানুর রহমানকে ডিএমপিতে তাঁর আগের পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি এখন পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত আছেন। তাঁকে সংবাদপাঠিকাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডিএমপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি এখন নির্ধারিত একটি তারিখে তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ে গোপন রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসন ব্যবহার ও নানা অন্যায়ের অভিযোগ আছে। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদ পাঠিকাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অডিও ছড়িয়ে পড়ে। একটি জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) ওই সংবাদ পাঠিকা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। গত কয়েকমাস ধরে তিনি ও তাঁর প্রকৌশলী স্বামী বাড়ি থেকে বের হতে পারছিলেন না। প্রচন্ড চাপে সম্প্রতি তাঁর স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে মিজানুর রহমানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, দুর্নীতি দমন কমিশনে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় সংবাদ পাঠিকাকে হুমকির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিজান দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘আই অ্যাম সরি।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে মিজান বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সে কমিটি সবকিছু খতিয়ে দেখবে।

ডিআইজি মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানুরের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- ব্যাংক কর্মকর্তা মরিয়ম আক্তারকে গত বছরের জুলাই মাসে বিয়ে করেন মিজানুর রহমান। ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেই কথা গোপন রাখার শর্ত দিয়েছিলেন স্ত্রীকে। মরিয়ম রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি গত ১২ ডিসেম্বর পুলিশ পাঠিয়ে মরিয়মকে গ্রেপ্তার করান।

মিজানুর রহমান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন- সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায় পুলিশের তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।

সবশেষ মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন। ওই সংবাদ পাঠিকা প্রথমে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, মিজানুর রহমান মুঠোফোনে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বাড়ির বাইরে বের হলে তাঁকে হেনস্তা করবেন ও অশ্লীল ছবি তৈরি করে প্রচার করবেন। ১০ এপ্রিল তিনি তাঁর নামে খোলা একটি ফেসবুক পেজের কথা জানতে পারেন।

তিনি দেখতে পান, ওই পেজটি তাঁর নামে খোলা এবং সেখানে তাঁর ছবির সঙ্গে অশ্লীল ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে সংবাদ পাঠিকা অভিযোগ জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন।’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন