১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

শিরোনাম

স্বাগত ১৪২৫

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৯ অপরাহ্ণ, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

এসেছে বৈশাখ, বর্ণিল পহেলা বৈশাখ/ঘরে-বাইরে প্রাণেতে জেগেছে প্রাণের উচ্ছ্বাস/এসেছে বৈশাখ, স্বপ্নের পহেলা বৈশাখ/জরা জীর্ণ গ্লানি মুছে হোক মঙ্গল উদ্ভাস। চির নতুনকে আহ্বান জানাতে বছর ঘুরে আবার আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে পয়লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। শুভ বঙ্গাব্দ ১৪২৫। পয়লা বৈশাখ পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে বরণ করার দিন। আজ স্বপ্নময় নতুন বছরের শুভযাত্রায় আমাদের প্রাণে প্রাণে বাজুক নবআনন্দ। প্রত্যাশার নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হোক চারদিক। পাখিডাকা নতুন ভোরের সূর্যোদয়ে স্বাগত নতুন বছর। ‘এসো হে বৈশাখ এসো সো’/‘হে নূতন, হে রুদ্র বৈশাখ’।

পয়লা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসবের দিন। আবহমান লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যে বর্ষবরণ উৎসবে আজ মেতে উঠবে নগর থেকে গ্রাম, শহর থেকে বন্দর। বরিশালে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান এখন আর কেবল প্রাণকেন্দ্রকে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে নগরজুড়ে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারাবেলা বরিশাল পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে। বর্ষবরণের আনন্দ-উৎসবে মুখরিত থাকে সমগ্র জেলায়।

পয়লা বৈশাখ বাঙালির নবজাগৃতির, নবজীবনের প্রতীক। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের স্মারক। এই দিনটি কেবল নতুন সম্ভাবনা ও প্রত্যাশার স্বপ্ন নিয়ে নতুন একটি বছরের যাত্রা শুরু নয়, আমাদের আপন শিকড়ের সন্ধানে নতুন প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত হওয়ার দিন। পয়লা বৈশাখ স্মরণ করিয়ে দেয়, আমরা বাঙালি, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, আমরা বাঙালি সংস্কৃতির উত্তরাধিকার। সম্প্রতি ধর্মের দোহাই দিয়ে একটি মহলের পক্ষ থেকে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের বিরোধিতা করা হচ্ছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অথচ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলা নববর্ষ বাঙালির। আমরা দলমত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করি। নববর্ষ উদ্যাপন বা মঙ্গল শোভাযাত্রা কোনো ধর্মীয় বিষয় নয়। মূলত যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ উৎসবের সঙ্গে কোনো ধর্মের সংঘাত নেই, কোনো ধর্মের সম্পৃক্ততাও নেই। এটা সম্পূর্ণ বাঙালি সংস্কৃতি, বাঙালির সাংস্কৃতিক চর্চার অংশ। এ উৎসব দেশের ঐতিহ্য, আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই একটা সর্বজনীন উৎসব, যেখানে বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ এক হয়ে একসঙ্গে উদ্যাপন করে। বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ঐতিহ্যগত সম্পর্ক ও হালখাতার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

মঙ্গল সংগীত ও শোভাযাত্রা, হালখাতা, মিষ্টিমুখ, নতুন কাপড়, ভূরিভোজ, বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি অনুষঙ্গ পয়লা বৈশাখকে বাঙালির চিরন্তন উৎসব, সর্বজনীন উৎসবে পরিণত করলেও এখন উৎসবটি অনেকটা বার্ষিক আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে। সারা বছর আমরা দৈনন্দিন জীবন ও জীবিকায় বঙ্গাব্দকে এড়িয়ে গিয়ে খ্রিস্টাব্দ অনুসরণ করলেও, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি আমাদের অন্যরকম এক আবেগে আপ্লুত করে।

কৃষিকাজ, গ্রামীণ সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে শহুরে জীবনে আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি পয়লা বৈশাখের। সবার প্রত্যাশা, আজ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করব। নতুন বছর, দেশ ও দশের জন্য কল্যাণকর, মঙ্গলময় ও শান্তিময় হবে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি জোগাবে পয়লা বৈশাখ।”

10 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন