নিজস্ব বার্তা পরিবেশক:: বরগুনায় পাথরঘাটা উপজেলার কাঠাঁলতলী সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে বহুতল স্কুল ভবন নির্মাণ করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্কুলের আশেপাশে জমি থাকলেও ঠিকাদার মাহাবুব খামখেয়ালী করে মাঠের মাঝখানেই নির্মাণকাজ কাজ শুরু করেন। গত কয়েকদিনের চলমান এ নির্মাণ কাজ ও ঠিকাদারের সেচ্ছাচারিতার ইতোমধ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবসহ পুরো এলাকাবাসী। প্রতিবাদস্বরুপ স্কুলমাঠেই করেছে মানববন্ধন কর্মসূচি। সেই সাথে ঐতিহ্যবাহী স্কুলমাঠটি রক্ষায় আগামীতে বড় ধরনের আন্দোলনের ঘোষণাও দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি ঠিকাদার নির্মাণ কাজ চলমান রাখায় পাথরঘাটার কাঠাঁলতলী সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজ এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে অসন্তোস বেড়েই চলছে। স্থানীয় একটি সূত্র এমন তথ্য দিয়ে জানিয়েছে- মাহাবুব তার অবস্থান থেকে পিছু না হঠলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে এলাকবাসী স্কুলমাঠে নির্মাণকাজ বন্ধে মাঠে নামবে।

জানা গেছে- জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ সংশ্লিষ্ট একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু কিছুদিন পূর্বে শুরু হয়েছে। কিন্তু ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কাঠামোগত কোন নির্দেশনা মানা হয়নি, হচ্ছে না। কাজপ্রাপ্ত ঠিকাদার মাহাবুব নিজের ইচ্ছেমত ভবনটি স্কুলমাঠের মাঝেই নির্মাণ শুরু করেন।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানায়- নির্মাণ কাজ শুরু দিন ঠিকাদারকে পুরাতন ভবনের পাশে খোলা স্থানটি দেখিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাহাবুব তা শোনেনি, বরং নিজের খেয়াল খুশি ও খামখেয়ালি করে মাঠের মাঝেই নির্মাণ করে যাচ্ছেন। অথচ স্কুলমাঠে ধংস করে কোন প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও বিধি নিষেধ রয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশনা মোটেও মানা হচ্ছে না। এমনকি ঠিকাদার কারও কথা শোনছেনও না। স্থানীয় এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের লোক পরিচয় দিয়ে যা খুশি করে চলছে। এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ চরম আকারে ধারণ করেছে।

তবে এই বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মাহাবুবের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি কাজটি প্রাপ্ত নন দাবি করেন। কিন্তু পরক্ষণে আবার বলছেন- একাধিক জনে মিলে ভবনটির নির্মাণ কাজ করছেন, এতে তিনিও কিছুটা জড়িত রয়েছেন।

স্কুলমাঠে কেন ভবন নির্মাণ হচ্ছে এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখলে মাহাবুব বরিশালটাইমসকে বলেন- জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাঠ রক্ষায় পরবর্তীতে পুরাতন ভবন যেটি রয়েছে, সেটি ভেঙে দেওয়া হবে।

ঠিকাদারের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বরগুনা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার ভাষ্যায়, ঠিকাদার কেন পুরাতন ভাঙার সক্ষমতা শিক্ষা প্রকৌশলও রাখে না। সরকারি যেকোন ভবন ভাঙার ক্ষেত্রে অনেক বিধি নিষেধ রয়েছে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন- যদিও স্কুলমাঠে ভবন নির্মাণ করা হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে ভবনের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তও গৃহীত হতে পারে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জাফর হাওলাদার বরিশালটাইমসকে জানান, ভবনটি নির্মাণের শুরুতেই অন্যত্র সরিয়ে করতে ঠিকাদার মাহাবুবকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেননি। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবক প্রতিবাদস্বরুপ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এবং মাঠে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ না করলে সেখান থেকে আরও বড় আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষকেরাও সহমত পোষণ করেছেন।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়- ঠিকাদার স্কুলমাঠে ভবন নির্মাণের কারণ হচ্ছে আশেপাশে যে জাগায় রয়েছে তা সেখানকার চেয়ে অধিক নিচু। সেই জায়গায় ভবন করতে বেশি ব্যয় হওয়ার সম্ভবনায় তিনি উঁচু স্থানে অর্থাৎ মাঠের মাঝেই ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন।

তবে এমনটি অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার মাহাবুব। তার দাবি জায়গা কম থাকায় মাঠের এক কোনে ভবন নির্মাণ করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক একটি মহল তাকে সামাজিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতি করতে স্কুলমাঠেই ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ ভেগ অভিযোগ তুলছেন।’