নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শ্রমিকলীগ নেতা লিটন মোল্লাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে চাঁদাবাজ চেয়ারম্যান লিটন মোল্লা পলাতক রয়েছে।

এর আগে শনিবার (৮ আগস্ট) সকালে লিটন মোল্লার শ্যালক কামরুল হাসানকে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বিএমএফ পরিবহনের কাউন্টারে চাঁদাবাজির সময় আটক করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় রোববার সংশ্লিষ্ট থানায় কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রমিকলীগ নেতা কামাল হোসেন লিটন মোল্লাসহ আরো ৫ জনকে আসামী করে মামলা করেছে পুলিশ।

বিষয়টি বরিশালটাইমসকে নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ খাইরুল আলম জানান, শনিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের বরিশাল-কাঠালবাড়ী গামী বিএমএফ পরিবনের কাউন্টারে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় বিএমএফ পরিবহনের (রংপুর মেট্রো-ব-০২-০০১) সুপারভাইজার শাহীন সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় শাহীন জানায়, তার গাড়ীতে মোট ৩১ টি সিট আছে। প্রতিটি সিট ৩২০ টাকা হারে মোট ৯৯২০ টাকা হয়েছে। ওই টাকা থেকে সিটি টোল বাবদ ৪০ টাকা কেটে রাখার পরে শাহীন ফেরত পাবেন ৯৮৮০ টাকা। কিন্তু তাকে ফেরত দেয়া হয় ৮ হাজার ৩৮০ টাকা। পরে জানা গেছে, ওই টাকা থেকে ১৫০০ টাকা চাঁদা কেটে রাখা হয়েছে। এ সময় বিএমএফ পরিবহনের কাউন্টার থেকে কামরুল হাসানকে ১৫০০ টাকাসহ হাতে-নাতে আটক করা হয়।

উপ-পুলিশ কমিশনার আরও জানান, আটকের পর কামরুল হাসান জানায়, তিনি কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও শ্রমিকলীগ নেতা কামাল হোসেন লিটন মোল্লা তার ভগ্নিপতি। তার নির্দেশেই বিএমএফ পরিবহনের প্রতিটি ট্রিপ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়ে লিটন মোল্লার কাছে দেয়া হয়। এ ঘটনায় কামরুল হাসান ও ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মোল্লাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মোঃ সাইদ (৪২), মোঃ শাহজাহান (৪০) ও মোঃ কালু (৪০)।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চাঁদাবাজির মূল নিয়ন্ত্রক লিটন মোল্লা। তার ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরেই বাস কাউন্টার থেকে একটি সু-সংগঠিত চাঁদাবাজ বাহিনী বিভিন্ন পরিবহন ও মাইক্রোবাস থেকে নিয়মিত চাঁদা উত্তোলন করে। এমনকি ওই বাহিনীর সদস্যরা ইয়াবা-ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত রয়েছে। বেশ কয়েকদিন আগে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সুপার ভাইজার শহিদুল ইসলাম চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে পিটিয়ে আহত করে লিটন মোল্লার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী। যার প্রেক্ষিতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে নেমেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগ।