বিশেষ বার্তা পরিবেশক:: বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিলো। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক দেশে রুপ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। সেদিনের হামলায় হামলায় আহত তৎকালীন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি পংকজ দেবনাথের মন্তব্য এমনটাই।

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের সেই ভয়ানক গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে পংকজ দেবনাথ একটি অনলাইন পত্রিকাকে এসব কথা বলেন। বরিশাল ৫ আসনের (মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা) এই এমপি বলেন, গ্রেনেডের স্প্লিন্টার আমার পায়ে ঢুকে গেলেও আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। মানুষ চারিদিকে দৌড়াদৌড়ি করছে, তখনও বুঝতে পারিনি কী হয়েছে।

সে এক গভীর ষড়যন্ত্রের আলামত তুলে ধরে বলেন- সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ছিলো। বিকেল ৫টা ২০ বা ২১ মিনিটের দিকে নেত্রী বক্তৃতা শেষ করে ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চ থেকে নামছেন, এমন সময় ফটো সাংবাদিকরা ছবি তুলছিলো। নেত্রী দাঁড়ালেন আর গ্রেনেড প্রকান্ড বিস্ফোরণের শব্দ। আসলে গ্রেনেড হামলা বা বিস্ফোরণের শব্দ সম্পর্কে তো অভিজ্ঞতা ছিলো না। ফলে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কী হলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আমি ছিলাম ট্রাকের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মঞ্চের পাশে, যেখানে নেত্রীর গাড়ি রাখা হয়েছিলো। আমরা গাড়ি ঘিরে রেখেছিলাম। মিছিল বের হবে, আমরা গাড়ির সঙ্গে ৩২ নম্বর পর্যন্ত যাবো এই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। একের পর এক গ্রেনেডের শব্দ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখালাম হাজার হাজার মানুষ ছোটাছুটি শুরু করে দিলো। ট্রাকের ওপর মঞ্চে সিনিয়র নেতারা দেখলাম নেত্রীকে ঘিরে রেখেছেন। তারা মানবঢাল তৈরি করে নেত্রীকে রক্ষা করেছিলেন।

পঙ্কজ দেবনাথ বলেন- আমার কী হয়েছে তা বুঝতেই পারিনি। বিস্ফোরণের শব্দ থেমে গেলো। হুড়োহুড়ির মধ্যে নেত্রীকে ঘিরে দ্রুত গাড়িতে তোলা হলো। আবার হামলা হলো, বিকট শব্দ। তখন আমি বুঝলাম, বাম পায়ে শক্তি পাচ্ছি না। আমার প্যান্ট রক্তে ভিজে গেছে, আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। পাশেই মোস্তাক আহমেদ সেন্টু ও কুদ্দুস মারা গেলো।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির পক্ষে ছিলো এই মিছিল-সমাবেশ। এই সমাবেশে হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে রাজনীতিকে মেধাশূন্য এবং বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়ছিলো। ওই মঞ্চে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। হাওয়া ভবন থেকে এই ষড়যন্ত্র হয়েছিলো, বিএনপি নেতা তারেক রহমান জাড়িত ছিলো এটা মামলার বিচারের তদন্তেও উঠে এসেছে। তারা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালির বাতিঘর শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিলো।’