বার্তা পরিবেশক, কুয়াকাটা:: কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশের দোকানঘর ভাড়া নেওয়ার নাম করে জমি দখল এবং পৌরসভার প্রবাহমান খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে কৃষকের সর্বনাশ করার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রোববার সকাল ১১ টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে ওই জমির ও দোকান ঘরের মালিকের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশতাধিক কৃষক এমন অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হয়।

এসময় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এনায়েত উদ্দিন দুলাল বলেন, বিএনপি সরকার আমলে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আঃ রশিদ হাওলাদারের দোকানঘর ভাড়া নিয়ে দখলে রেখেছে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর ও তার বাবা হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদার। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অবৈধ দখলে থাকলেও অদ্যবদি দখলমুক্ত করা যায়নি। সর্বশেষ বিএস জরিপও সম্পন্ন হয়েছে রশিদ হাওলাদারের নামে। সাংবাদিকদের প্রশ্নে রশিদ হাওলাদারের ছোট ভাই মন্নান বলেন, প্রতিকার চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। তদন্তেও বেরিয়ে এসেছে দখলদাররা অবৈধভাবে রয়েছে। একই সাথে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান দখলদার জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও তার বাবা হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদারের কাছে দোকান ঘরে মালিকানার স্বপক্ষে কাগজপত্র চাইলেও তা দেখাতে পারেনি। এরপর ঘরে তালা দিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর তোফায়েলের কাছে চাবি বুঝিয়ে দিয়েছে। উল্টো আঃ রশিদ ও তার আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে ওই দোকান ঘরের মালামাল চুরির অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নতুন সৃজিত ১১৬০/১ খতিয়ান মূলে ওই জমির মালিকানা দাবীদার হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদার। উক্ত খতিয়ানটি আদালত কর্তৃক বাতিল হলেও তারা এখনও দখলে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রবাহমান খাল পুনরুদ্ধার কমিটির সভাপতি মোঃ শাহজাহান মৃধা বলেন, ওই ভূমি খেকো চক্রের হোতা বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর ও তার বাবা হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদারের কাছে জিম্মি সাধারণ মানুষ। তারা জাল-জালিয়াতি চক্রের সাথে যুক্ত রয়েছে। স্থানীয় ভূমি প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জাল জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরী করে কচ্ছপখালী খালে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে ভোগদখল করছে। পৌর এলাকার একমাত্র পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে মাছ চাষ করছে। এর অগেও ওই চক্রের বিরুদ্ধে এলকাবাসী মানববন্ধনসহ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করে। সরেজমিনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন। তবুও ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিকার পায়নি বলে দাবি তাদের। এবিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, ১৯৯৮ সালে জমি ক্রয় করে নিজেরাই ব্যবসা করে আসছি। এছাড়া একই বিষয়ে তাদের সাথে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। অন্যদিকে খাল দখল নয়, তাদের রেকর্ডিয় জমিতে খাল থাকার দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর।

মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, রশিদ হাওলাদার পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাবরে জমি দখলের কথা উল্লেখ করে একটি আবেদন করে। এর তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হলে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।