নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: ১৪ বছরের স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানের বয়স যখন ১১ বছর, তখন এ ধর্ষণের দায়ে বরগুনায় একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডিতকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আজ বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল মালেক (৩৬)। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার আমতলী গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে। বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্কের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী ও এ মামলার বাদী।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পূর্বপরিচিত আব্দুল মালেক বিয়ের প্রলোভনে ২০০৯ সালের ৩০ জুন রাতে পাশবিক নির্যাতন করেন এ মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীকে। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর আব্দুল মালেক তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ২১ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর আব্দুল মালেক ও তার বাবা আমিন উদ্দিন ও তার মা আলেয়া বেগমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী।

পরে মামলার তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মালেককে অভিযুক্ত করে তার বাবা ও মাকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন বরগুনা সদর থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আইয়ুব আলী শরীফ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলা করার পর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আটজন সাক্ষী ও একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রী। সেই সন্তানের বয়স এখন ১১ বছর।

এ বিষয়ে আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের বরিশালটাইমসকে বলেন, মামলার রায়ে অভিযুক্ত আব্দুল মালেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডও প্রদান করেন আদালত। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই জরিমানার টাকা ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার সন্তানকে প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগভাবে জরিমানার টাকা আদায় করে ভুক্তভোগী ও তার সন্তানকে পরিশোধের কথাও বলা হয়েছে।’