নিজস্ব প্রতিবেদক, বরগুনা:: পানি ওঠানো পাম্প মেশিন পুড়ে যাওয়ায় বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৬ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগী, রোগীর স্বজন ও কোয়ার্টারে বসবসরত হাসপাতালের ২০টি পরিবার। দ্রুত নতুন পাম্প মেশিন স্থাপন করে পানি সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি সরবরাহ পাম্প মেশিন স্থাপন করে। গত ৩১ বছর ধরে ওই পাম্প মেশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পাম্প মেশিন স্থাপনের ৫ বছরের মাথায় মেশিনে ত্রুটি দেখা দেয়। গত ৩১ বছরে প্রায় ৫০ বার পানি ওঠানো পাম্প মেশিন বিকল হয়ে হাসপাতালের পানি সরবরাহ বন্ধ থাকে। এতে প্রায়ই দুর্ভাগের শিকার হয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী, রোগীর স্বজন ও স্টাফরা। প্রতিবারই পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হাসপাতালে নিরলস পানি সরবরাহের জন্য নতুন পাম্প মেশিন স্থাপন না করে জোরাতালি দিয়ে পুরাতন মেশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করে আসছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে পাম্পটি পুড়ে যায়। এতে গত ৬ দিন ধরে হাসপাতালে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ভর্তি হওয়া রোগী, রোগীর স্বজন ও হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা। বর্তমানে হাসপাতালের রোগীদের গোসল ও শৌচাগার প্রায় বন্ধ রয়েছে। রোগীদের স্বজনদের বাইরের টিউবয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। পানি সংকটে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। দ্রুত পানি সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

অপরদিকে হাসপাতালের পানি সরবরাহের পাম্প মেশিনটি পুড়ে যাওয়ার খবর পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগকে জানানো হলেও তারা গত ৬দিনে নুতন পাম্প স্থাপনের কোন উদ্যোগ নেয়নি এমন অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

হাসপাতালে ভর্তি পিয়ারা ও ফরিদাসহ একাধিক রোগীরা বরিশালটাইমসকে বলেন, গত ৬ দিন ধরে হাসপাতালে পানি সরবরাহ নেই। পানি না থাকায় গোসল ও শৌচাগারে যেতে খুব সমস্যা হচ্ছে। তারা দ্রুত পানি সরবরাহের দাবি জানান।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন শাহ আলম বরিশালটাইমসকে বলেন, হাসপাতালে পানি না থাকার খবর শুনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বরিশালটাইমসকে বলেন, হাসপাতালে পানি সরবরাহ না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ভর্তি রোগী ও হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের পানির সমস্যার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে পানি ওঠানো পাম্প পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে এবং নতুন পাম্প মেশিন স্থাপনের জন্য পত্র দেয়া হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে পাম্প মেশিন স্থাপন করে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে।

পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক মুঠোফোনে বরিশালটাইমসকে বলেন, পানি ওঠানো পাম্প মেশিন পুড়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে নতুন মেশিন ক্রয়ের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। খুব দ্রুত মেশিন স্থাপন করে পানি সমস্যার সমাধান করা হবে।’