বরগুনা/ কলেজছাত্রকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও বরগুনা >> বরগুনার পাথরঘাটায় এক কলেজছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসিবুর রহমান নামের কলেজছাত্রের সঙ্গে এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক থাকার জেরে তাঁকে ওই ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার (০৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় হাসিবুর রহমানের মা হেলেনা বেগম পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। ফাঁসানোর অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির হোসাইন, তাঁর বাবা হুমায়ুন কবিরসহ পাঁচজনের নামে পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ এপ্রিল মামলা করেছেন হেলেনা বেগম।

হেলেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে হাসিবুর রহমান গত শুক্রবার বিকেলে বাড়ির কাছেই বলেশ্বর নদের তীরে ঘুরতে যায়। সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে হুমায়ুন কবির, সাব্বির হোসাইন, মিরাজ হাওলাদার, আবদুর রহিম, আল আমিন ওরফে গরুয়া আলামিনসহ ৮/১০ জনে হাসিবুরকে ধরে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যান। ওই বাড়িতে হাসিবুরকে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে খুন-জখমের হুমকি দেন। এ সময় আমার ছেলের পকেটে ২৮টি ইয়াবা ঢুকিয়ে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়া হয়।’

এ ঘটনায় পাথরঘাটা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে হাসিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় হাসিবুরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরগুনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হাসিবুর রহমান (২০) পাথরঘাটা উপজেলার সৈয়দ ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি একই উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের মৃত এনায়েত হোসেনের ছোট ছেলে।

ইয়াবার বিষয়ে জানতে গত সোমবার ওই এলাকায় গেলে কাঁঠালতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাইনুল ইসলাম, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খালেকুজ্জামান, এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক, শামসুল হক ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য পরিতোষ সিকদার কলেজছাত্র হাসিবুরকে নির্দোষ দাবি করেন। সেই সঙ্গে এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে হাসিবুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে ফোনে কথা বলব না, সরাসরি এলে কথা হবে।’

মামলার বাদী ও পাথরঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক বেলায়েত হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, হাসিবুরের জিনসের প্যান্টের পকেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ওই এলাকার লোকজন ধরে খবর দিলে তাঁকে আটক করে আনা হয়। তবে এখন শোনা যাচ্ছে, হাসিবুরকে ফাঁসানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হাসিবুর রহমানের বড় ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন মিরাজ হাওলাদার ও আবদুর রহিম মিলে হাসিবুরকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করেন। ইয়াবার কথা স্বীকার না করলে সেই ভিডিও অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দেন। একই সঙ্গে একটা ইয়াবা বড়ি পানিতে গুলিয়ে জোর করে হাসিবুরকে খাইয়ে দিয়েছে।’