অবশেষ চালু হতে যাচ্ছে লঞ্চ ও দূরপাল্লার যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল >> মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দূরপাল্লার বাস ও নৌযান চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ শনিবার (২২ মে) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামীকাল রোববার (২৩ মে) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে কাজ করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’-এর ওপর বেশি জোর দেয়া হবে। গণপরিবহন চালু হলে কতটা আসন ফাঁকা রাখা হবে, সে বিষয়টিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী রোববার অথবা সোমবার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, আগামী সোমবার থেকে সারা দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তঃজেলা বাস চলতে পারবে। তবে এসব বাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়বে। প্রতি যাত্রার (ট্রিপ) শুরু এবং শেষে জীবাণুনাশক দিয়ে গাড়ি জীবাণুমুক্ত এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও যাত্রীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ সাংবাদিকদের জানান, তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেছেন। গত এপ্রিল মাসে গণপরিবহন চালুর কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। তবে আগামী ২৪ মে থেকে গণপরিবহন যাতে চালু করা যায়, সে বিষয়ে তারা জোর দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে নৌযান চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সরকার যদি চায়, তবে যথাযথভাবে স্বাস্থবিধি মেনে নৌযান চালু করা হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব এবং নো মাস্ক নো সার্ভিস মানতে হবে। নৌ যান চালুর বিষয়ে আগামীকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠক রয়েছে। আশা করি, বৈঠকে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।

অপরদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূরপাল্লার বাস ও নৌযান বন্ধ থাকায় মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি করোনাভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা বেড়ে গেছে। কারণ সীমিত পরিসরে দূরপাল্লার বাস ও নৌযান চালু রাখা হলে মানুষকে এত গাদাগাদি করে গ্রামে ফিরতে হতো না। এরফলে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

এর আগে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে সকল যাত্রীবাহী নৌযান বন্ধ রয়েছে। তবে মালবাহী জাহাজ চলাচল করছে। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহন। পরে জেলায় জেলায় গণপরিবহন চালু করা হলেও এখনো বন্ধ রয়েছে আন্তঃজেলা বাস।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। এরপর এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত প্রাণসংহারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে ১২ হাজার ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৬ জন।’