ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুঞ্জেরহাট এলাকা থেকে কথিত জ্বীনের বাদশা ইব্রাহীমকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কুঞ্জেরহাট এলাকার কাচিয়া ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড মালেক হুজুরের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

এ সময় তার কাছে নিজের হাতে মাটির তৈরি বেশ কিছু তাবিজ, জার্মান কালি, চাল, সুগন্ধি, সিঁদুর এবং একটি লাঠি উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, ইব্রাহীম দীর্ঘদিন ধরে তার ঘরের ভেতরে ছোট একটি রুম তৈরি করে চারপাশে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে। গ্রামের সহজ সরল লোকজন তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসলে সে তার অন্ধকার রুমটিতে এনে প্রথমে রোগীর মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। পরে নাকের ভেতর কাপড় দিয়ে জ্বীনের মত করে কথা বলে লাঠি দিয়ে টিনের বেড়াতে আঘাত করে বলে আয় বাবা আয়…আমার আসনে বস, আমাকে দুটি কথা বলে যায়। এই বলে নিজেই বিকৃত ভাষায় কথা বলে রোগীদেরকে বোঝানো হয় তাবিজ করা হয়েছ। এখন এর কাটাছিড়া করতে হবে। এই বলে প্রতি রোগীর কাছ থেকে ছয় হাজার থেকে আট হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

তথ্য ও অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, কয়েক বছর আগে ইব্রাহীম পোশাক তৈরি কারিগরের কাজ করে তার সংসার চালাতো। এরপর আদম ব্যবসায় নামে। প্রায় এক বছর বিদেশে অবস্থানের পর দেশে এসে চট্টগ্রামে গিয়ে এই জ্বীনের প্রশিক্ষণ নিয়ে এই রমরমা ব্যবসায় চালিয়ে আসছে।

সে প্রথমে লালমোহনের কর্তারহাট এলাকায় পরে একই এলাকার প্রবাসী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। বর্তমানে ঢাকায় সেই স্ত্রীকে ফ্লাট বাসায় আলিশান কায়দায় রেখেছে।

রোগী হালিমা, মর্জিনা ও খলিল জানান, তারা মানুষের কাছে শুনেছেন ওনার সাথে জ্বীন আছে। তাই চিকিৎসার জন্য আসছি। কোনো উপকার পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা জানান, এই প্রথম এসেছি।

এদিকে ইব্রাহীমের আটকের খবর শুনে তার সহযোগিরা গা ঢাকা দিয়ে বিভিন্ন প্রকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাকে ছাড়ানোর জন্যে।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুল গৌফুর চৌধুরী জানান, জ্বীনের বাদশা কিনা জানিনা তবে সে খনকারী করে এইটা জানি।

ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রব কাজী জানান, আসলে ইব্রাহীম একজন দর্জি এবং খনকারী করে। তবে জ্বীনের বাদশা কিনা তা আমার জানা নেই।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসিম কুমার শিকদার জানান, ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’