বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, কিন্তু…

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বাড়লেও কিছুটা বাধার মুখে পড়লেই অনেকে সব ছেড়ে ছুটছেন অন্য পেশায়। অবশ্য যারা এই বাধা অতিক্রম করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেন, তারা সাহস হারান না। তারাই একদিন সফল উদ্যোক্তা হন। তবে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে প্রয়োজন সৃজনশীল মনোভাব, নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং উচ্চাকাঙ্খার। আর সব জেনেই ‘ বাংলাদেশ উদ্যোক্তা’র পরিচালক (Md Rijvi Ahamed) মো. রিজভী আহমেদ বেছে নিয়েছেন এই পথ। রিজভী আহমেদ ২০০৫ সালের ২০ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা।

রিজভীর নেশা-পেশা যেন প্রযুক্তি নিয়েই। প্রযুক্তির প্রতি তার ভালোবাসা দিন দিন বাড়তে থাকে। তাই গ্রামের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে পড়াশোনার পাশাপাশি মাত্র ১৯ বছর বয়সে তার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু হয়।

রিজভী আহমেদ বলেন- “যখনই আমি কোনো বিশেষ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি, তখনই আমি আমার নিজের সমস্যা প্রকাশ করিনি। পরিবর্তে, আমি সমাধানটি বের করতে পেরেছি এবং অভিযোগ ছাড়াই এগিয়ে যেতে থাকি।

সর্বোপরি, আপনি জীবনে কিছু অর্জন করতে পারবেন না যদি আপনার ধৈর্য না থাকে জিনিসগুলি দেখার এবং শান্তভাবে কাজ করার, ধাপে ধাপে সবকিছু সমাধানযোগ্য। এই সমস্ত কাজ একদিন সফল হওয়ার পরিমাণ। যদিও আমি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের জন্য কাজ করার সময় আমার কোন সমর্থন ছিল না, আমি কখনই বিশ্বাস হারাইনি। কারণ আমার হৃদয় জানত যে আমার যাত্রা সবে শুরু হয়েছে।

রিজভী আহমেদ বাংলাদেশি উদ্যোক্তা, সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকারী হিসাবে পরিচিত। তার প্রতিটি প্রচেষ্টাই সার্থক হতে চলেছে।

তরুণদের উদ্দেশে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর সময় ব্যয় করি। যদি সময়টুকু নতুন কিছু শেখার পেছনে ব্যয় করা যেতো তাহলে আমরা অনেকেই হয়তো স্বপ্নের চেয়েও বহুদূর যেতে পারতাম। বর্তমানে অনলাইনে কোটি কোটি ফ্রি রিসোর্স, ইউটিউবে ভিডিও টিউটোরিয়াল ইত্যাদি আছে। তাই শেখার মাধ্যম আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘অনলাইনে প্রথম মাসে কোনোই আয় ছিলো না। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় মাস থেকেই আমার আয়ের পথ খুলেছে। কিছুদিন পরে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিতে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এর মাধ্যমে লিড জেনারেশন, ডাটা এন্ট্রি, অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট, ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দিচ্ছি। এখন মাসে আয় লাখ টাকা পার হয়ে যায়। করোনাকালে পৃথিবী যখন থমকে গিয়েছে, একটুও থেমে থাকিনি। প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করেছি নিজের সঙ্গে, প্রতিদিন নিজেকে গড়ে তুলেছি। পরিশ্রম করেই নিজেকে দক্ষ করে তুলেছি। একটা কথা আছে পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি। এখন কথাটি সত্য মনে হয়।’

আহমেদ আরও বলেন, ‘বর্তমানে চাকরি পাওয়া খুবই কঠিন। হাজার হাজার বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথচ অনলাইনে প্রচুর কাজ। এখান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে সঠিক পথে পরিশ্রম করে কাজ করে সাবলম্বী হওয়া যায়।’

যারা কাজ শিখতে চান তাদের উদ্দেশে মি. আহমেদ বলেন, ‘প্রথমে কাজ শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। শুধু ক্লিক করে টাকা ইনকাম করা যায় না। এমন একটা কাজ শিখতে হবে যাতে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, কিন্তু কাজের চাহিদা বাড়তে থাকবে। আমার ক্ষেত্রে দীর্ঘ রাত জাগা পরিশ্রমের পর যখন আয়ের পথ খুঁজে পেলাম এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।’