আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদের পর নিজ হাতে কাজ করে আলোচনায় আসলেন ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল।  সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা বোরহানউদ্দিনের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝের ময়লা নিজ হাতে পরিষ্কার করে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচীতে অংশ নেন এমপি মুকুল। হাসপাতালটির বেহাল দশা দেখে তিনি নিজেই এর পরিচর্যায় অংশ নেন। এরই ফাঁকে ক্যামেরা বন্দি হয়ে সে ছবি ফেজবুকে পোস্ট করার পর সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বেশ কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বেহাল দশা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ এর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় কোন উদ্যোগ নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল কোন ঘোষণা ছাড়াই ১৬ জুলাই হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। হাসপাতালের বেহাল দশা দেখে ঘোষণা দেন নিজ উদ্যোগে প্রতি মাসে অন্তত একবার হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নিবেন। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার হাসপাতালে গিয়ে নিজ হাতে মেঝেসহ বেড পরিষ্কারে অংশ নেন।

এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল কুদ্দুস, বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মাহমুদুর রহমান, বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি তদন্ত) অসিম কুমার সিকদারসহ স্থানীয় আ’লীগ ও তার অংগ সংগঠনের নেতারা।

এ বিষয়ে ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল তার ব্যক্তিগত ফেজবুকে এক স্টেটাস বলেন, মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন অভিযোগ চোখে পড়ে আমার। যা আমাকে রীতিমত পীড়া দেয়। আজ কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হাসপাতাল পরিদর্শনে বের হয়েছিলাম। সেবার মান সন্তোষজনক হলেও পরিবেশগত দিকের কারণে তা বদনামে পরিণত হচ্ছে।

হাসপাতালে ভর্তি প্রতিটা রোগীর সাথে কথা বলেছি, হাসপাতালের রান্না ঘরেও ঢুকেছি। শুধু সরকারি বরাদ্দের দিকে তাকিয়ে থাকলে এই নোংরা পরিবেশ থেকে আমরা কখনোই বেড়িয়ে আসতে পারবো না।

তাই আমার নিজের ব্যাক্তিগত উদ্যোগেই আগামীকাল থেকে প্রতি মাসে অন্তত ১ বার আমি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতায় অংশ নেব। আমার সাথে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ ইচ্ছা থাকলে অংশ গ্রহণ করতে পারেন এই কাজে।

আমরা যখন সমাজের প্রতিটি মানুষের হাতকে এক জায়গায় রাখতে পারব তখনই আমরা স্বপ্ন দেখতে পারব। আসুন নিজের চারপাশটাকে নিজেই পরিষ্কার রাখি। রোগ মুক্ত একটি সুস্থ সমাজ গড়ি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝের ময়লা এমপির নিজ হাতে পরিষ্কার করার ছবি ফেজবুকে পোস্ট করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে উপজেলার অভিভাবকের এই কাজটিকে মহৎ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন এ কাজটি আরো আগে শুরু করা উচিত ছিলো। অন্যদিকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আলোচনায় আসার জন্য তার এই উদ্যোগ বলে মনে করেন অনেকে। তবে সে যাই হোক না কেন দীর্ঘ দিনের জড়াজীর্ণ এই হাসপাতালটির সুদিন ফিরে আসবে এমনটাই মনে করেন উপজেলাবাসী।