চাকরির মেয়াদ নেই, তবুও অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল তবিয়তে

মো. জসীম উদ্দিন, বাউফল:: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কেশবপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু’র চাকরির মেয়াদ নেই তবুও অধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। নিয়মিত কলেজের সকল নথিপত্রে স্বাক্ষর করছেন তিনি। কলেজের সকল বিলও পাশ হচ্ছে তার স্বাক্ষরে।

অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫১৩০ নং স্বারকের চিঠিতে সালেহ উদ্দিন পিকুকে অবহিত করা হয় বিধি মোতাবেক আবেদন না করায় অধ্যক্ষ হিসেবে তার চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই চিঠি ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু বরাবর প্রেরণ করা হয়। চিঠিটি দীর্ঘদিন গোপন রাখা হলেও সম্প্রতি একটি সূত্র বরিশালটাইমস প্রতিনিধির কাছে চিঠিটি পাঠায়।

বরিশালটাইমসের অনুসন্ধান শুরু করলে প্রকাশ্যে আসে চিঠির বিষয়টি। এরপরে বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ নেই তবুও কিভাবে তিনি এখনো অধ্যক্ষ পদে চাকরি করছেন এবং এই চিঠি এতোদিন কিভাবে গোপন রাখা হয়েছে তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে।

বরিশালটাইমসের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ সালের পহেলা জুলাই কেশবপুর কলেজের অধ্যক্ষ পদে চাকুরির মেয়াদ শেষ হয় কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন পিকু’র। এরপরে চাকুরির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন তিনি। বিধি মোতাবেক আবেদন না করায়, তার চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি হয়নি। এ সংক্রান্ত বিষয় তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। তবুও বর্তমানে তিনি অধ্যক্ষ পদে চাকুরি করছেন।

এ বিষয়ে কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কেশবপুর কলেজ অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু বলেন, এরকম কোনো চিঠিতো আমাকে দেয়নি। ২০২১ সালের ২৮ মার্চ মন্ত্রণালয়ের একটি সার্কুলার আছে। আমি ওই সার্কুলার বলে, গভর্নিং বডি’র রেজুলেশন সাপেক্ষে চাকুরি করছি।

বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেশবপুর কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল আমিন বলেন, আমি সম্প্রতি ওই চিঠির বিষয়ে শুনেছি এবং চিঠিটি দেখেছি৷ আমি চিঠিটা ক্রস-চেক করতেছি। সত্যতা পেলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে চিঠির প্রেরক, জাতীয় বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমরা শুনেছি তিনি এখনও চাকুরি করছেন। এ বিষয়ে আমরা তাকে পুনঃরায় চিঠি পাঠাবো। তবুও তিনি না শুনলে, ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গভর্নিং বডি’কে আমরা চিঠি দেবো।’

চিঠির বিষয়ে কলেজ সভাপতি জানে না কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে ফাহিমা সুলতানা বলেন, আমরা কলেজকে যত চিঠি দেই সবগুলো সভাপতিকে পৌঁছানো কলেজের দায়িত্ব। তাছাড়া এতো বড় একটা আলোচিত বিষয় সভাপতি হিসেবে তিনি জানবেন না কেনো, আমি বিষয়টি বুঝতেছি না। তিনি (সভাপতি) হয়তো বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছেন।’