পটুয়াখালী/ খাল পারাপারে ড্রামের ভেলাই শেষ ভরসা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বড়হরপাড়া ও পৌরঘোজা গ্রামের মাঝে বয়ে গেছে দীর্ঘ এক খাল। খালের ওপর নির্মিত আয়রন সেতুটি ভেঙে গেছে অনেক আগে। নতুন সেতুর জন্য অপসারণ করা হয়েছে ভেঙে যাওয়া সেতুর মালামাল।

এখন খালের দুপাশে বসবাসরত ৬-৭টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন ড্রামের ওপরে তক্তা দিয়ে তৈরি বিশেষ ভেলা। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।

এই ড্রামের ভেলায় দীর্ঘ খাল পার হতে হয় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের, ব্যবসায়ী, অসুস্থ রোগীসহ হাজারো মানুষের। আশপাশের গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এই ভেলায় চড়ে খাল পারাপার হয়।

স্থানীয়রা জানান, ২০ বছর আগে বড়হর খালের ওপর নির্মিত হয় বড়হরপাড়া সেতু। নির্মাণের পর কয়েক বছর ভালো থাকলেও ৪-৫ বছর আগ থেকেই সেতুর বিভিন্ন স্থান থেকে খসে পড়ে বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা। শুধু তাই নয় আয়রন সেতুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যাওয়ায় এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ছয় মাস আগে সেতুটি অপসারণ করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

বৃষ্টি হলে এই খাল পার হওয়া আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তবে গ্রামবাসীর জন্য ইউনিয়নের বাজার বা উপজেলা শহরে যাতায়েতের এটিই সহজ পথ। এই খালের উপরে যে রশি টানা খেয়াটি রয়েছে তাতে নেই কোনো মাঝি।

স্থানীয় রহিমা বেগম বরিশালটাইমসকে বলেন, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। প্রায় সময় এখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। স্কুলপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটা খুবই বিপদজ্জনক।

অনেক ছাত্র-ছাত্রীরা সাঁতার জানে না। আমার ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে তবুও প্রতিদিন আমি তাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা করি। কারণ ও এই খাল একা পার হতে পারে না।

ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে হনুফা বেগম বরিশালটাইমসকে বলেন, আমি খুব অসুস্থ মানুষ তবুও কষ্ট করে আমাকে সপ্তাহে তিনদিন ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কিন্তু এই খালে ব্রিজ না থাকায় আমরা চরম দুর্ভোগে আমি। এই ড্রামের উপরের তক্তায় উঠতে নামতে খুব কষ্ট হয়।

লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা বরিশালটাইমসকে বলেন, পরিত্যক্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ সেতুটি অপসারণ করে নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখনো কেন হচ্ছে না তা নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।

কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ন বরিশালটাইমসকে বলেন, নতুন সেতু নির্মাণে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে। নয়তো আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।