পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের তালশাঁস এখন রাজধানীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: অতিরিক্ত গরমে তালের শাঁসের কদর দীর্ঘদিনের। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় তাঁলশাস রাজধানী ঢাকায় যেত না। এই প্রথম পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের তালশাঁস যাচ্ছে ঢাকায়। এতে গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে বলে মনে করছেন বরগুনার আমতলীর ব্যবসায়ীরা।

এক বছর আগেও আমতলীর ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে তালের শাঁস সংগ্রহ করে উপজেলা ও জেলা শহরের অলিগলিতে বিক্রি করতেন। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় তালশাঁস রাজধানীতে যেত না। এ বছরই প্রথম পদ্মা সেতু পার হয়ে রাজধানীতে যাচ্ছে।

জেলার তালতলী উপজেলার পশ্চিম গাবতলী গ্রামের তালগাছ চাষি কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আগে কেউ তালশাঁস কিনত না। গাছে থেকে তাল পেকে মাটিতে পচে যেত। এ বছরই ব্যবসায়ীরা তালশাঁস কিনে নিতে আগাম টাকা দিচ্ছেন। তাঁরা ওই তাল ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।’

ব্যবসায়ী দেলোয়ার মোল্লা বলেন, ‘পদ্মা সেতু পার হয়ে ট্রাকে করে তালশাঁস ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেছি। ভালোই লাভ হয়েছে।’ মহিষকাটা গ্রামের ব্যবসায়ী রুবেল গাজী বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে গ্রাম থেকে তালশাঁস কিনে গাড়িতে ঢাকায় পাঠাচ্ছি। ওইখানে ভালো দামে বিক্রি করছি। আগে এই অঞ্চলের তাল ঢাকায় যেত না। এখন পদ্মা সেতুর কারণে খুব সহজে গাড়িতে তাল ঢাকায় পাঠানো যায়। এতে গ্রামের তালচাষিদের বেশ টাকা আয় হচ্ছে। আগে এত টাকা আয় হতো না।’

হলদিয়া ইউনিয়নের তুজির বাজার এলাকার তাল ব্যবসায়ী মন্টু মোল্লা বলেন, গ্রাম থেকে তাল কিনে ভ্যানে গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। প্রতি পিস তাল কিনতে হয় প্রকারভেদে ৩ থেকে ৭ টাকায়। বিক্রি করি ৫ থেকে ১২ টাকা। গত ১৫ দিন ধরে বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু পার হয়ে তাল রাজধানীতে যাওয়ায় এখন দাম অনেক বেশি। আগে চাষিরা তালের শাঁস বিক্রি করতেন না। তাঁরা এখন বেশি দাম পেয়ে বিক্রি করছেন।আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে। আগে তালশাঁস গ্রামীণ অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব ফেলত না। এই প্রথম দক্ষিণাঞ্চলের তালশাঁস গাড়িতে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক সারা ফেলেছে।