নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাতিল করার প্রতিশ্রুতিসহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে দেশটির প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘দিদির ১০ শপথ’ শিরোনামের এই ইশতেহারে নারী-যুব সমাজ, কৃষক ছাড়াও সবধর্ম ও বর্ণের অধিকার নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) শুরু হতে যাচ্ছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। কেন্দ্রে কে ক্ষমতায় বসবে সেটা নির্ধারণ করার নির্বাচন। আর সেই জাতীয় নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় গেলে আগামী ৫ বছর গোটা দেশের মানুষের জন্যই কী করবে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিপত্রে সেটাই এবার প্রকাশ করেছে।

দলটির ঘোষিত ইশতেহারের ৯ নম্বর ক্লজে পরিষ্কার করে বলা হয়, তৃণমূল ক্ষমতায় এলে মোদি সরকারের তৈরি করা ধোয়াশা যুক্ত সিএএ আইন এবং এন আর সি বাতিল করা হবে। শুধু তাই নয়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি ছাড়াও যুবসমাজ, নারী সমাজ এবং কৃষকশ্রেণির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হবে। এছাড়া দেয়া হবে বিনামূল্যে গ্যাস, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বিস্তারে ইতিবাচক পদক্ষেপও নেয়া হবে।

যদিও তৃণমূলের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তেমন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এরইমধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মন্ডলসহ একাধিক তৃণমূল ঘনিষ্ট আমলা দুর্নীতির দায়ে জেল খাটছেন। তাই তৃণমূল দুর্নীতি নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করবে না।

বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে নরেন্দ্র মোদি সিএএ আইন বাস্তবায়ন, গৃহহীনদের ৪ কোটি বাড়ি তৈরি, একশো দিনের কাজ, নারী-যুব সমাজ কিংবা কৃষক শ্রেণির উন্নয়নের ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোদির দেয়া সেই গ্যারান্টির পাল্টা জবাব হিসেবেই এবার ‘দিদির ১০ শপথ’ মমতার।

তবে, যে কোনো আইন বাতিল করতে হলে যেতে হবে কেন্দ্র ক্ষমতায়- মমতার রাজ্যে মাত্র ৪২ আসন। তাই সব আসনে জয় পেলেও মমতার পক্ষে কেন্দ্রে ক্ষমতায় যাওয়া কতটা সম্ভব সেটা নিয়েও রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ।

মোদি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটও দুর্নীতির দায়ে কার্যত নাস্তানাবুদ অবস্থায়। জোটের বড় শরিক কংগ্রেস সব আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি। কিন্তু জোটগত ভাবেও বিজেপির সাথে টক্কর দিয়ে কেন্দ্র ক্ষমতায় যেতে পারবে কিনা সেটা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।