বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। তবে সেখানে গত দুদিন ধরে তিনি কি কি করছেন, সেটা জানার আগ্রহ রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

কারা সূত্র জানায়, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পাশাপাশি এবাদত-বন্দেগি করেন তিনি। শনিবার ভোরে ফজর নামাজ পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সকালে নাস্তা করেছেন তিনি।

কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূলফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে।

সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, টিভি ও দুটি ফ্যান রয়েছে। দেয়া হয়েছে টেলিভিশন, তবে সেখানে দেখানো হবে শুধু বিটিভি। পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।

তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভিআইপি বন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। সকালে তাকে তিনটি জাতীয় দৈনিক পড়তে দেয়া হচ্ছে।

ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকবেন। এছাড়া তার চাহিদা অনুযায়ী একটি জাতীয় দৈনিক সরবরাহ করা হবে। ভিআইপি বন্দি ও জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

কারা সূত্রে আরো জানা গেছে, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কারাগারে খালেদা জিয়া প্রথম রাতে ভাত, মাছ ও সবজি খেয়েছেন। সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া রুটি-সবজি দিয়ে নাস্তা করেন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের ৮ ফেব্রুয়ারি  প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক জানান, সামাজিক অবস্থান এবং বয়স বিবেচনায় মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়।

এছাড়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ আসামিকে অর্থদণ্ডসহ ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরা বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল,

সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন এবং কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন।

রায় শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, রায়ের কপি হাতে পাওয়া পর উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। অন্যদিকে, মামলার রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবিরা।

এরপর পৌনে তিনটার দিকে বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার ভবনে নেয়া হয়।

গত ২৫ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের তেসোরা জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ মোট ৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।