দুর্নীতির অভিযোগে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সরকারী মো. শাহজাহান মীরাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি প্রদানের পরেও নতুন প্রধান সহকারীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও কর্মস্থলে অনানুমোদিত অনুপস্থিত থাকার কারণে মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মুশফিকুর রহমান রাজিব ও আয়া হালিমা বেগমের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার প্রধান সহকারীকে অব্যাহতি প্রদান ও অপর দু’জনের কাছে কৈফিয়ত তলবের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু।

জানা গেছে, সম্প্রতি প্রধান সহকারী মো. শাহজাহান মীরার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ঝালকাঠি জেলা সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) মো. মাহবুবুর রহমান কাছে অভিযুক্ত মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৮ মার্চ বরিশাল বিভাগীয় অফিস থেকে প্রেরিত এক পত্রে (স্মারক নং-ডিএইচ/বরিশাল/পার-৩/২০১৮/৩৭৬) মো. শাহজাহানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে নতুন প্রধান সহকারী হিসেবে মো. শাহআলমকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে চাকরির নিয়ম-নীতির কোন তোয়াক্কা না করে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন শাহজাহান।

এদিকে দুর্নীতিবাজ ওই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি প্রদান করায় সন্তোষ প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস এক চিঠিতে মো. শাহজাহানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের আদেশ দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করছেন না। বরং প্রধান সহকারীর জন্য নির্ধারিত কক্ষে বসে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

অপরদিকে গত ১ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত অনানুমোদিত অনুপস্থিতের কারণে ডা. মো. মুশফিকুর রহমান রাজিব ও গত ১৮ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত অনানুমোদিত অনুপস্থিতের কারণে আয়া হালিমা বেগমের কাছে গত ২১ জুন কৈফিয়ত তলব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু।

এ ব্যাপারে অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী মো. শাহজাহান মীরা বলেন, ‘অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে আমাকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। তদন্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো বলে আশা করি।’

সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী মো. শাহআলম বলেন, অব্যাহতির আদেশের পর ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাকে পুরোপুরি দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।

নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, বিভাগীয় অফিসের আদেশ পাওয়ার পর মো. শাহজাহানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কর্মস্থলে অনানুমোদিত অনুপস্থিতের কারণে একজন চিকিৎসক ও একজন আয়ার কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত পত্র প্রাপ্তির ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।