হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১৫টি ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই সব ট্রলারে থাকা অন্তত আড়াইশ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। অপর একটি ট্রলারের ১০ জেলে উদ্ধার হলেও ট্রলারসহ চার জেলে নিখোঁজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে ফেয়ারওয়ে বয়া, নারিকেলবাড়িয়া, দুবলাসহ একাধিক জায়গায় পৃথক ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে।

কুয়াকাটায় মাছ ধরতে গিয়ে ৩৩ জে‌লে নিখোঁজ

বিকেলে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডুবে যাওয়া ট্রলারের মধ্যে জালাল মোল্লার মালিকানা এফবি মায়ের দোয়া, আহম্মদ মিস্ত্রির এফবি তাজেনুর, খলিল ফকিরের এফবি মীম-২, দুলাল মিয়ার এফবি মায়ের দোয়া, ছগির পহলানের এফবি আরমান আলীর নাম জানা গেছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারের মালিক ও জেলেদের বাড়ি বরগুনা ও পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকায়।

মোস্তফা চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়। আবহাওয়া খারাপ দেখে সাগরে থাকা মাছ ধরা ট্রলারগুলো নিরাপদে আসার পথে ফেয়ারওয়ে বয়া, নারিকেলবাড়িয়া, দুবলাসহ একাধিক জায়গায় পৃথক অন্তত ১৫টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবে যায়। এতে প্রায় আড়াইশ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।

এছাড়া ডুবে যাওয়া এফবি আরমান ট্রলারের জেলে ভাসমান ১০ জেলেকে আবু বকর মোল্লার মালিকানা এফবি সোনারতরী ট্রলারের মাঝি কবিরসহ তার ট্রলারে থাকা জেলেরা উদ্ধার করলেও ট্রলার মালিক ছগির পহলানসহ চার জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে গভীর সমুদ্রে ডুবে যাওয়া ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধারের বরগুনা জেলা প্রশাসন, পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসনসহ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসন থেকে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীকে উদ্ধার অভিযান চালাতে অনুরোধ করেছেন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে ডুবে যাওয়া ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধারের জন্য বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযানে নেমেছে।

কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেনেন্ট মাহমুদ আলী বলেন, সুন্দরবনের আউটপোস্টে ক্যাম্পগুলোকে উদ্ধার অভিযানে নামতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘দেয়ি’ গভীর নিম্নচাপ হিসেবে ভারতের দক্ষিণ উড়িষ্যা ও তৎসংগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগরে উত্তাল থাকায় রাতেই শতাধিক ট্রলার সুন্দরবনের মান্দারবাড়িরয়া, আলোরকোল, দুবলা খালে আশ্রয় নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা ফিশিংট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া।