বন্ধ একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের ছাদের কোণায় দাঁড়িয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন ২৫ বছর বয়সী এক তরুণী। সেই চিৎকার শুনে নীচের রাস্তায় ততক্ষণে উৎসুক জনতার ভিড় জমে গেছে।

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই খবর যায় পুলিশে। শেষে তারা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর পুলিশ বাঙালি ওই তরুণীর কাছ থেকে জানতে পারে, তাকে মার্কেট কমপ্লেক্সের একটি ঘরে আটকে রেখে দিনের পর দিন সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে।

ভারতের ওড়িশার পুরী জেলার কোণার্কে ঘটেছে ঘটনাটি। উদ্ধার হওয়া ওই তরুণী কলকাতার বাসিন্দা। টানা ১০ দিন ধরে তাকে ওই মার্কেট কমপ্লেস্কের ছাদের একটি ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। আপাতত পুরী জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ওই তরুণী। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্তরা এখনো পলাতক।

পুলিশের কাছে অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, কাজল নামে তার পরিচিত এক নারী কাজের কথা বলে তাকে পুরীতে নিয়ে আসেন। সেখানেই সুভাষ বেহরা নামে কাজলের এক বন্ধুর সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। এর পর কাজল এবং সুভাষ তাকে দেহ ব্যবসায় নামানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি।

কিন্তু, তরুণী রাজি না হওয়ায় ওই মার্কেট কমপ্লেক্সের একটি ঘরে তাকে আটকে রেখে গণধর্ষণ করা হয়।

উদ্ধার হওয়া তরুণীর অভিযোগ, গত ১০ দিনে সুভাষ-সহ অন্তত ১৫ জন তাকে ধর্ষণ করেছে। বুধবার কোনো রকমে ঘরের তালা ভেঙে তিনি ছাদে আসতে পারেন। তার পরই চিৎকার করে লোকজন ডাকেন।

পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ওই ঘরে আরো অনেককে আটকে রেখে একইভাবে নির্যাতন চালানো হয়। পুলিশ যদিও অন্য কাউকে খুঁজে পায়নি। তবে ওই ছাদ থেকে নারী ও পুরুষের প্রচুর জামাকাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর মদের বোতল। তাতে পুলিশের সন্দেহ, ওই ঘরে নিয়মিত দেহ ব্যবসার আসর বসত।

পুরীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্যাগারিন মোহান্তি জানিয়েছেন, ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত কাজল এবং সুভাষের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি ওই তরুণীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

অন্য দিকে, ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিজেপির স্থানীয় মহিলা মোর্চার নেত্রীরা হাসপাতালে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করেন। তারা সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। কংগ্রেসের নারী প্রতিনিধিদের একটি দলও তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের তরফেও কলকাতায় যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস।