ঝালকাঠির নলছিটিতে ইউপি সচিব ও চৌকিদারের বিরুদ্ধে এক নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাধিকার সনদে স্বাক্ষর আনতে গেলে তারা ওই নারীকে মারধর ও টেনেহিচড়ে কাপড় খোলার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ওই নারীকে ঘন্টা খানেক আটকে রেখে সচিব ও চৌকিদারের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ক্ষমা চাওয়ার পরও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না দেয়ার অসহায় ওই নারীকে পুলিশে সোপর্দ করেন তিনি। উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে রাতে সাড়ে ৮টার দিকে থানা থেকে ওই নারীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিকদের জানান, উত্তরাধিকার সনদে স্বাক্ষর নিতে একাধিকবার কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদারের কাছে গেলেও তিনি তা দেননি। উল্টো তিনি তার সঙ্গে অসংলগ্ন আচারণ ও অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। ওই দিন ফের তার কক্ষে গেলে সচিব অসংলগ্ন আচরণ শুরু করেন। একপর্যায় সচিব তাকে গালাগাল দিয়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনি এর প্রতিবাদ করলে জুয়েল নামের এক চৌকিদার তার মাথায় আঘাত করে ও শরীরে হাত দিয়ে জোরপূর্বক কক্ষের বাহিরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর সচিব, জুয়েল চৌকিদার ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাকে এলোপাতারি মারধর শুরু করে। ওড়না টেনে নিয়ে তার শরীরে থাকা কাপড় খুলে ফেলার চেষ্টা করেন তারা। এসময় ভ্যানিটি ব্যাগ বুকে আগলে তিনি নিজের সম্ভ্রম বাচানোর চেষ্টা করলে সেটিও টেনে ছিড়ে ফেলেন সচিব। পরে তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে সচিব ও চৌকিদারের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন ওই ইউনয়নের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর শিকদার। এ ঘটনায় পরবর্তীতে যাতে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারে সেজন্য তাকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলা হয়। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে পুলিশে দেওয়া হয়।

অভিযোগ স্বীকার করে ইউপি সচিব মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, ওই নারী একজন উত্তরাধিকারীকে বাদ দিয়ে উত্তরাধিকার সনদে স্বাক্ষর নিতে এসেছিল। তখন তাকে এটি সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বারের স্বাক্ষরসহ ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেয়ার জন্য বলা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায় তিনি জুয়েল নামে এক চৌকিদারকে জুতাপেটা করেন। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

চৌকিদার জুয়েল বলেন, ওই মহিলা আমাকে মারধর করেছে। আমরা কেউ তাকে আঘাত করিনি।

কুশঙ্গল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর শিকদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে নারীর শ্লীলতাহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই নারী পোষাক পরিহিত এক চৌকিদারকে জুতাপেটা করায় পুলিশে দেয়া হয়েছে।

নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, কোন পক্ষের অভিযোগ না থাকায় ওই নারীকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার খালা ও বোনের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।