তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির পর ইজতেমা আয়োজনকে কন্দ্রে করে আদালতের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করাকে ‘লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানিকালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রিটটির শুনানি করেন।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন শাহ মো. নুরুল আমিন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

গত ২১ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস মোল্লা। রিট আবেদনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ তিন জনকে বিবাদী করা হয়।

রিটকারীর আইনজীবী শাহ মো. নুরুল আমিন আদালতের সামনে মামলার বিবরণীর ওপর শুনানি করেন। শুনানির এক পর্যায়ে আদালত রিটকারী পক্ষের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা নিজেরা দুই ভাগে বিভক্ত হলে দ্বীনের প্রচার করবেন কীভাবে? নিজেদের মধ্যে মারামারি করবেন, আবার ইজতেমা পালনের জন্য আদালতে রিট দায়ের করবেন, এটা লজ্জার। আগে নিজেরা সংশোধন হন, সুস্থ হন এবং নিজেদের মধ্যকার বিভেদ নিরসন করুন। তারপরই আপনাদের আবেদন শুনবো।’

এরপর শাহ মো.নুরুল আমিন আদালতকে বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা চলছে। তবে দ্বন্দ্ব নিরসন সম্ভব না হলে সরকার দুই পক্ষকে আলাদা-আলাদাভাবে ইজতেমা পালনের যে নির্দেশনা দিয়েছেন তাই পালন করা হবে।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু আদালতকে জানান, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বুধবার (আজ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি সভার তারিখ নির্ধারণ রয়েছে। ইজতেমার বিষয়ে সেখান থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসতে পারে।’

রাষ্ট্রপক্ষের এই শুনানির পর রিটটির পরবর্তী শুনানি ও শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামী রবিবার (২৭ জানুয়ারি) তারিখ নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মুসলিম জমায়েত ‘বিশ্ব ইজতেমা’ প্রতিবছর টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি তাবলীগ জামাতের মধ্যে দৃশ্যমান বিভক্তি চাড়া দিয়ে ওঠে। ফলে সংগঠনের দুটি গ্রুপের মধ্যে দেশের প্রায় সব এলাকায় বিবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। টঙ্গীতে দু গ্রপের মারামারিতে প্রাণহানিও হয়েছে। এ অবস্থায় দেশের জনগণের জানমালের

নিরাপত্তা, ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখা তথা সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।