নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি হয়েই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামিম। ভাঙনকবলিত কীর্তনখোলা নদীতীর বরিশাল-৫ (সদর) আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্ব পেয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ চমক ধরে রাখার পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের মন জয়ে কাজ করছেন তিনি। অবশ্য ইতিমধ্যে তিনি তার বেশকিছু প্রমাণও দিয়েছেন।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সপ্তাহে ছুটির দুই দিন নির্বাচনী এলাকা বরিশালে এসে সাধারণ মানুষের সুখ দুখের কথাও শুনছেন। পাশাপাশি সরকারের চলামান সকল উন্নয়নমূলক কাজও তদারকি করছেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার তিনি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়ে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়টি অবহিত করেন।

রেবাবার (১৭ মার্চ) বরিশালটাইমসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক বলেন- এলাকার মানুষের ভোটে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মন্ত্রিত্ব উপহার পেয়ে আমি ভাগ্যবান। এখন এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে চাই। আবার মন্ত্রী হওয়ার কারণে আমি এখন শুধু বরিশালের নই, সারাদেশের মন্ত্রী।

তাই নির্বাচনী এলাকা, মন্ত্রণালয় এবং সারাদেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুবিধার্থে প্রতিটি সপ্তাহকে ভাগ করেছি। এর অংশ হিসেবে সপ্তাহে তিন দিন মাঠ (মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প এলাকা) ঘুরে দেখব, দুই দিন মন্ত্রণালয়ে অফিস করব এবং ছুটির দুই দিন নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে মানুষের কথা শুনে কাজ করব।

মন্ত্রী বলেন- গত ১০ বছরে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। সুনামের সঙ্গে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তবে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের বড় সমস্যা নদীভাঙন। ভোট চাইতে গিয়ে দেখেছি এলাকার মানুষ টাকা-পয়সা চান না, নদীভাঙন প্রতিরোধের আশ্বাস চেয়েছেন। যারা নদীভাঙনের কবলে পড়েছেন তারাই এর কষ্ট বোঝেন। নদীভাঙনে অনেক জমিজমার মালিক এখন ঢাকা শহরে রিকশা চালাচ্ছেন। শুধু বরিশাল কেন? দেশের কোথায়ও যেন নদীতীরের মানুষ বাস্তুচ্যুত না হয়, সেভাবে কাজ করতে চাই।

২০১৭ সালের সিলেটের হাওর অঞ্চলের বন্যায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিরূপ অভিজ্ঞতার আলোকে এবার কী ধরনের আগাম বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাওরে উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। আমি গত মাসে সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানকার কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন উন্নয়ন কাজে কোন ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি না হয়।

একইভাবে সারাদেশে যেসব এলাকায় প্রকল্পের কাজ চলছে বা প্রকল্প গ্রহণ করা জরুরি, সেসব বিষয়ে মাঠপর্যায়ের সব প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা এই মাসের মধ্যে সরেজমিন প্রতিবেদন জমা দেবেন। প্রতিবেদন দেখে স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেখানে বর্ষার আগে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেখানে বর্ষার আগেই কাজ শেষ করা হবে। পাশাপাশি ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোয় যেসব প্রকল্প চলছে, তা কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শেষ করা হবে।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জাহিদ ফারুক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কেন এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন তা জানি না। তিনি আমার প্রতি যে বিরল সম্মান দিয়েছেন, আস্থা রেখেছেন কাজের মধ্য দিয়ে সেই আস্থাটা ধরে রাখতে চাই।’