বার্তা পরিবেশক, অনলাইন:: যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আফরোজ বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ও একটি বাল্যবিয়ের আয়োজন করার অপরাধে পৃথকভাবে বিভিন্ন মেয়াদে মোট পাঁচজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের শালবরাট গ্রামের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে যশোরের কেশবপুর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের অনাথ দেবনাথের ছেলে অসীম দেবনাথের সাথে বিয়ের আয়োজন করে ওই ছাত্রীর পরিবার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি এ খবর জানতে পেরে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওসি জসীম উদ্দীনকে সাথে নিয়ে সেখানে হাজির হন। এ সময় বাল্যবিয়ের আয়োজন করার অপরাধে মেয়ের দাদা (মনোরঞ্জণ দেবনাথ) ও মেয়ের মাকে (সুনিতা রানী) আটক করা হয়। এ খবর ছেলে পক্ষের কাছে পৌঁছালে তারা বরযাত্রী নিয়ে মাঝ পথ থেকে বাড়ি ফিরে যান।

বৃহস্পতিবার সকালে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭-এর ৮ ধারায় মেয়ের দাদাকে এক মাস ও মেয়ের মাকে সাতদিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন তিনি।

এদিকে একই দিন বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের ঠাকুর কাঠি গ্রামে বাল্যবিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে ছুটে যান তিনি। তারা পৌঁছানোর আগেই বর পক্ষ বউ নিয়ে চলে যায়। এ সময় তারা জানতে পারেন নড়াইল সদর উপজেলার চাঁচড়া বিলপাড়ার নূর ইসলামের ৩৮ বছরের ছেলে হোসেন আলীর সাথে বিয়ে হয় ঠাকুরকাঠি গ্রামের ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ের।

এ সময় বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে ওই মেয়ের বাবাকে আটক করা হয়। একই সাথে বাল্যবিয়েতে সহযোগিতার অভিযোগে আটক হয় একই গ্রামের মৃত ছবদেল মোল্যার ছেলে মনিরুল ইসলাম ও সালাম শেখের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন।

বুধবার নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আফরোজের আদালত মেয়ের বাবাকে এক মাস ও বাল্যবিয়েতে সহযোগিতার অভিযোগে মনিরুল ও সাজ্জাদকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

সাজাপ্রাপ্তদের বৃহস্পতিার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দীন।

এদিকে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানিয়া আফরোজ বলেন, মনিরুল ও সাজ্জাদের বাল্যবিয়েতে সহযোগিতার বিষয় নতুন নয়। অভিযোগ রয়েছে এর আগেও তারা একাধিক বাল্যবিয়েতে সহযোগিতা করে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন সব সময় কঠোর ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি।