২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পটুয়াখালীর গৃহপরিচারিকা আদুরি নির্যাতনে গৃহকর্ত্রীর যাবজ্জীবন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ, ১৮ জুলাই ২০১৭

মৃত ভেবে শিশু গৃহকর্মী আদুরিকে (১১) ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার মামলায় গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। অপর আসামি নওরীন জাহান নদীর মা ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, চার বছর আগে ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরিকে। উ দ্ধারের সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীরে আঘাত, মাথায় কোপ, খেতে না দেয়া- কিছুই বাদ যায়নি নির্যাতনের তালিকা থেকে।

প্রায় দেড় মাস আদুরিকে চিকিৎসা দেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুস্থ অবস্থায় যখন তাকে রিলিজ দেয়া হয় তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারত না। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল ছিল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই বছরের ৭ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ফিরে যায় আদুরি।

আদুরিকে উদ্ধারের তিনদিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনির নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।

মামলার পর ওইদিনই গ্রেফতার করা হয় নদীকে। সেই থেকে নদী কারাগারে আছেন। তবে জামিনে আছেন তার মা ইসরাত জাহান।

গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার।

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন