২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশালে বিনামূল্যের সাতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতেও ‘স্কোপ’র দুর্নীতি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:৩৫ অপরাহ্ণ, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

বরিশালে শিশু বান্ধব নগরী কর্মসূচির আওতায় বিসিসি ও ইউনিসেফ’র অর্থায়নে শিশুদের সাঁতার শেখানো কার্যক্রম নিয়ে দুর্নীতি করছে বাস্তবায়নকারী বেসরকারী সংস্থা সেভ দি কোস্ট্যাল পিপল’র (স্কোপ)। সাঁতার শিখতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ উত্তোলন করছে সংস্থাটির কর্ণধররা।

যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিনামুল্যে সাতার শেখানো কার্যক্রমের অর্থ বরাদ্দকারী নগর ভবন ও ইউনিসেফ। স্কোপ নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু’র দুর্নীতির কারণে প্রকল্প’র কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকিতে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১০ সালে তৎকালীন মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন নগরীকে শিশু বান্ধব হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে নগরীতে শিশুদের সমস্যা চিহিৃত ও সমাধানের জন্য নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। ধারাবাহিকতায় নগর ভবন ও ইউনিসেফের সহায়তায় গত ২৭ মার্চ থেকে নগরীর শিশুদের সাতার শেখানো কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় এনজিও স্কোপ।

এ কার্যক্রমের মাধ্যমে নগরীর ১ হাজার ৮০০ শিশুকে সাঁতার শেখানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ছেলেদের জন্য বঙ্গবন্ধু উদ্যানের ডিসি লেক এবং মেয়েদের জন্য বান্দ রোডের ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুরে সাঁতার শেখানো কার্যক্রম চলছে। এতে প্রায় ১২০ জনকে সাতার শেখানো হচ্ছে। প্রকল্পে সাতার শেখাতে দুই জন প্রশিক্ষক রাখা হয়েছে। কিন্তু স্কোপ পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু নিজেসহ অতিরিক্ত সাতজন প্রশিক্ষক নিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- নগর ভবন ও ইউনিসেফের অর্থায়নে বিনামূল্যে সাতার শেখানো হবে। কিন্তু স্কোপ পরিচালক সাতার শিখতে আসা শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে উত্তোলন শুরু করে। এখন পর্যন্ত ১০ অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন।

এ বিষয়ে সাতার শেখানো কার্যক্রমের টিম লিডার ইউনিসেফের নাসরিন নাহার জানান, ওই অভিযোগ পেয়ে স্কোপ’র নির্বাহী পরিচালক শিপলুকে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুই দিনের মধ্যে সকলের টাকা ফেরত দেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। তাই পুনরায় আজ মঙ্গলবারের মধ্যে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে স্কোপ পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন শিপলু বলেন, প্রকল্প’র স্থায়িত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। কোন পথশিশু সাতার শেখানো কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। তাই প্রকল্প শেষ হলেও তাদের সাতার শেখানো হবে। এই জন্য টাকা আদায় করা হয়েছে। একপর্যায়ে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তার কাছে গিয়ে প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য দেখে যাওয়ার জন্য বলেন স্কোপ পরিচালক।

এ বিষয়ে নগর ভবনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, সাতার শেখানো কার্যক্রমে অংশ নেয়াদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার কোন সুযোগ নেই। এ প্রকল্পের অর্থ সিটি কর্পোরেশন ও ইউনিসেফ থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদি অর্থ নিয়ে থাকে সেটা লজ্জাজনক ও অপরাধ। এতে প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার হুমকিতে পড়বে।

তিনি আরও জানান, অর্থ নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

ইউনিসেফের বরিশাল বিভাগীয় প্রধান এএইচএম তৌফিক আহম্মেদ বলেন, টাকা আদায় করা লজ্জাজনক ঘটনা ও প্রকল্পটির জন্য ক্ষতিকারক। তাই প্রকল্পের বাইরে টাকা আদায় করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

সূত্র: সাউথভয়েসবিডি

16 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন