২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালে মাদরাসার জমি দখলের পায়তারা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩৮ অপরাহ্ণ, ২৩ এপ্রিল ২০১৮

বরিশাল আল জামিয়া মাহমুদিয়া মাদরাসার কোটি টাকা মুল্যের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি পরিবারের বিরুদ্ধে। শহরের বাংলাবাজার এলাকার খাদেম আলী সড়কের ওই জমিতে স্থানীয় জাকির নামে এক ব্যক্তি ঘর তুলেছেন। এমনকি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের টাঙানো সাইনবোর্ডও ভেঙে ফেলে দিয়েছেন। প্রথমে পরিবারটি অল্প কিছু জমিতে থাকলেও এখন পুরো ৩৪ শতাংশ সম্পত্তি দাবি করছেন। তাদের এই দখল মিশন বাস্তবায়ন করতে বরিশাল আদালতে একটি মিথ্যে মামলাও ঠুকে দিয়েছেন। যদিও ২ দফা আদালতে ওই জমির ওপরে সকল ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন জাকির। আদালত দুইবারই তার আবেদনে সাড়া দেয়নি। এখানে ব্যর্থ হয়ে সর্বশেষ তিনি সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়ে টাঙানো সাইনবোর্ডটি ফেলে দিয়েছেন। এসব অভিযোগ সোমবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন মাহমুদিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান মাহবুব।

শহরের বেলতলা এলাকায় মাদরাসাটির সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আরও জানানো হয়েছে, বরিশাল শহরের তৎকালীন প্রতাপশালী আদম আলী হাজী মাদরাসাটির নামে বগুড়া আলেকান্দা মৌজার ৪৩০০ নম্বর খতিয়ানের ৫৬৮৬ নম্বর দাগে মোট ৩৪ শতাংশ জমি দান করে যান। কিন্তু এই বিষয়টি মাদরাসার অনেকেরই জানা ছিল না। ২০১৩ সালে বরিশাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা বিষয়টি তাদের অবহিত করলে ২৭ বছরের বকেয়া খাজনা একসাথে পরিশোধ করেন। ওই সময় মাদরাসার জমিতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসা জাকির হোসেন সেখানে থাকতে দৌড়ঝাপ শুরু করেন।

এমনকি তখন পুরো সম্পত্তিটি হাতাতে ভুমি অফিসের দারস্থ হন। কিন্তু কাগজপত্র পুরোটাই মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অনুকুলে থাকায় তিনি সুবিধা করতে পারেননি। তাছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি তার আয়েত্বের বাইরে চলে যাওয়ায় তিনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৪ শতাংশ জমি বসতি গড়ার জন্য দাবি করেন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে ৪ শতাংশ জমি ২০১৪ সালের ২৭ফেব্রুয়ারি আপোষরফা ও চুক্তিপত্র করে তাকে হস্তান্তরের অঙ্গীকার করে। কিন্তু সেই জমি বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই পুরো ৩৪ শতাংশ আটকে ভবন নির্মাণ করেন জাকির হোসেন।

এই বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সাম্প্রতিকালে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জমিটিতে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রাখে। এতে জাকির হোসেনের পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে সাইনবোর্ডটি ফেলে দেয়। এই ঘটনার কয়েকদিনের মাথায় পুরো সম্পত্তি নিজের দাবি করে জাকির হোসেন বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন। তাছাড়া মাদরাসার জমিটি আলী আহম্মেদ সরদারের কাছ থেকে খন্দকার ডা. আব্দুর মোনায়েম ক্রয় করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এমনকি ওই জমিতে সম্প্রতি তিনি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়াই স্থাপনা নির্মাণ করলে তা বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই জাকির হোসেনের গোটা পরিবার মামলা দিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে হয়রানি ও বিতর্কে জড়ানোর জোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এই ভুমি সন্ত্রাসদের বিরুদ্ধে মাদরাসার কর্তৃপক্ষ আগামী ২ থেকে ৪ দিনের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান মাহবুব।

সেই সাথে তিনি এই বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান রিন্টুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তবে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অভিযোগের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন দখলকারী জাকির হোসেন।’’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন