২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল আ’লীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের আভাস

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১৮ অপরাহ্ণ, ১৯ মার্চ ২০১৮

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বরিশালে বিশেষ দৃষ্টি ফেলতে শুরু করেছে। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী নিশ্চিত করতে এখানকার সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখছেন। বিশেষ করে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ধরে তাদের ব্যাগ্রাউন্ড এবং পারিপার্শ্বিক বিষয়াদীও জানতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি দলীয় অবস্থানের বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে দেখছে।

তাছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের বায়োডাটা ইতিমধ্যে হাতেও নিয়েছে বলে জানা গেছে। সার্বিক বিষয়াদী হচ্ছে- আগামী নির্বাচনে আ’লীগ চাইছে বরিশাল সিটিতে একজন সৎ যোগ্য ত্যাগী ও শিক্ষিত মেয়র প্রার্থী। সেই সাথে মাঠ পর্যায়েও ওই প্রার্থীর শক্তপোক্ত অবস্থান। কেন্দ্রীয় আ’লীগের একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে- প্রার্থীতা পাওয়ার দৌড়ে থাকা বরিশাল আ’লীগের অন্তত হাফডজন নেতা রয়েছেন।

যাদের বায়োডাটা হাইকমান্ডে বিবেচনার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে দুইজন সম্ভাব্য প্রার্থী অর্থাৎ বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও আ’লীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুন এবং জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীমকে বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যদিও এই দুজনার চেয়ে বরিশাল মহানগর আ’লীগের রাজনীতিতে সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল­াহর ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল­াহ বিশেষ ভুমিকা রাখছেন। ফলে বলা চলে- পুরো বরিশাল মহানগর আ’লীগের নিয়ন্ত্রক তিনি। তাছাড়া এখানকার আ’লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীও তাকে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন।

যেই বিষয়টি সাম্প্রতিকালে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু ওই সময় প্রাধানমন্ত্রী তাকে কোন গ্রীণসিগনাল দেননি। ফলে সাকিদের অনুসারীদের মধ্যে একরকমের হতাশ বিরাজ করছে। তাছাড়া সাদিকের চাচা আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতও এখানে প্রার্থী হতে তার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাদের নিয়ে কেন্দ্রে অতটা ভাবনা নেই। ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- তাহলে কি বরিশাল আ’লীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটতে যাচ্ছে। যদিও এই প্রশ্নের উত্তর তৎক্ষণাত নেই শীর্ষ নেতাদের কাছে। তাদের অভিব্যক্তি হচ্ছে- সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা অনেক আগেই কেন্দ্রে এসেছে।

সেইগুলো প্রধানমন্ত্রী আ’লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তবে দুই প্রার্থী অর্থাৎ মাহমুদুল হক খান মামুন ও জাহিদ ফারুক শামীমের কাগজপত্র ইতিমধ্যে দলীয় প্রধানের টেবিলে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। কারণ তাদের দুজনের বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নিজেই খোঁজ-খবর রাখছেন। তবে এর মধ্যে খান মামুনকে নিয়ে তার ভাবনার বিষয়টি লক্ষ্যণীয় বলে জানা গেছে। এমন বাস্তবাতায় রাজনৈতিক কুশীলবদের ভাষ্য হচ্ছে- রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক কাজে বিশেষ ভুমিকা রাখায় বরিশালে খান মামুনের জনপ্রিয়তা কোন অংশে কম নয়। তাছাড়া শিক্ষিত ও ত্যাগী নেতা হিসেবে সবসময়ই তার রয়েছে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা।

যে কারণে তার দিকে সুনজর থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় একটি সূত্র জানিয়েছে- ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে খান মামুনের বরিশালের অবস্থানের বিষয়টি অনেক আগেই থেকেই প্রধানমন্ত্রীর জানা রয়েছে। তাছাড়া বরিশালে বিএনপির শক্তপোক্ত অবস্থান সম্পর্কেও হাইকমান্ড প্রধানমন্ত্রীকে ধারণা দিয়েছেন। যে কারণে আগামী নির্বাচনে শক্তপোক্ত অবস্থান রাখতে ত্যাগী নেতা খান মামুনকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে। যদিও মনোনয়ন কে পাচ্ছেন সেই বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করতে পারছে না কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে খুব শীঘ্রই সবকিছু বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থীর নামটি ঘোষণা করতে পারেন বলে সূত্রটি জানিয়েছেন।

এদিকে এই বিষয়টি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবাহান গোলাপ নিশ্চিত করে না বললেও দীর্ঘক্ষণের আলাপচারিতায় নতুন মেরুকরণের বিষয়টি আভাস পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে তার ভাষ্য হচ্ছে- প্রার্থীদের বায়োডাটা ও অতীত ইতিহাস ফাইল আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সবকিছু বিশ্লেষণ করে যথা সময়ে তিনি নিজেই প্রার্থীতা ঘোষণা করবেন। উল্লেখ্য- সাম্প্রতিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা ঘোষণা দিয়েছে বরিশালসহ ৫ সিটি কর্পোরেশনে মেয়াদ আগামী অক্টোবর মাসের শেষ হতে যাচ্ছে। ফলে নতুন করে আইনী কোন জটিলতা না থাকলে এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে তোড়জোড় চলছে।’’

17 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন