২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চের ছাদে চড়ে বরিশালে আসছে মানুষ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ, ১৫ জুন ২০১৮

শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে। সুতরাং রাত পোহালেই শনিবার ঈদ। সময় যেন একদমই নেই! তাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। পথঘাটের সব দুর্ভোগ উপেক্ষা করেই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন তারা। পথের ভোগান্তিও তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে আনন্দের কাছে।

শুক্রবার (১৫ জুন) রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাসটার্মিনাল, ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট) এবং কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন যাত্রীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। আগাম টিকেট সংগ্রহ করতে না-পারা যাত্রীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে চড়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন। আবার অনেকেই বিকল্প ব্যবস্থায় গাড়ি রিজার্ভ করে কিংবা নিজস্ব গাড়িতে বাড়ি ফিরেছেন। বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়ি ফেরায় অনেকটাই ফাঁকা রাজধানী ঢাকা। ফাঁকা রাজধানীতে থাকা মানুষদের পড়তে হয় যানবাহন সঙ্কটে। অধিকাংশ যাত্রীবাহী গাড়ি হাইওয়ে রুটে চলাচল করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।

যানবাহনের চাপ থাকলেও মহাসড়কে যানজট নেই বললেই চলে। এদিন সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জ অংশে দাউদকান্দি থেকে শুরু করে মেঘনা-গোমতী সেতু পর্যন্ত সাত কিলোমিটার এলাকায় যান চলাচলে ছিল ধীরগতি। আর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটেও যানবাহনের বাড়তি চাপ ছিল না।

এদিন যাত্রীদের চাপ থাকলেও যানের আধিক্য থাকায় তা তেমন অসুবিধার সৃষ্টি করেনি। যাত্রী বিশ্রামাগারে বাসের জন্য অপেক্ষারত সাগর খান জানান, ঈগল পরিবহনে করে ঝালকাঠিতে যাবেন তিনি। কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়েই গতকাল সকালে তিনি এখানে এসেছেন। অগ্রিম টিকেট না কাটায় কাউন্টারে এসে তিনি কোনো ঝামেলা ছাড়াই টিকেট পেয়ে গেছেন।

জেআর পরিবহনের জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রী আবদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মেহেরপুর যাওয়ার জন্য তিনি সকাল ১০টার দিকে এখানে এসেছেন। এসে গাড়ি পাননি, তবে বাড়তি ভাড়া ছাড়াই দুপুর ১২টার বাসের টিকেট পেয়ে গেছেন তিনি।

শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাজিব মিয়া বলেন, বছরের অন্য সময়ে চাপ না থাকলেও ঈদের আগ মুহূর্তে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। এখন যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি থাকায় তাদের ডাকাডাকিও বেশি করা লাগে। এ সময় আমাদের একটু বেশি সচেতন হতে হয়। না হলে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে।

সদরঘাট : লঞ্চ টার্মিনালেও ছিল ঘরমুখী মানুষের ভিড়। আইন অনুযায়ী লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহন নিষিদ্ধ হলেও এদিন ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট) থেকে ছেড়ে যাওয়া সব ক’টি লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। সুন্দরবন, পারাবত, সুরভীসহ অন্য লঞ্চগুলোতে যাত্রী ভরপুর হওয়ার পরও না ছাড়ায় রোদ ও গরমে অতিষ্ঠ যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সদরঘাট বন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম মেনেই লঞ্চ ছাড়া হচ্ছে। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। কোনো লঞ্চে যাত্রী ভরে গেলেই তা নির্ধারিত সময়ের আগে ছাড়তে বলা হচ্ছে।

এদিকে এবারের ঈদযাত্রায় কোথাও যানজট নেই বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল সকালে রাজধানীর মহাখালী আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এবার যাত্রীরা ভালোভাবে ঘরে ফিরছে।

রাস্তার জন্য কোথাও কোনো যানজট নেই। তবে বৃষ্টির কারণে দেশের মহাসড়কগুলোর কোথাও কোথাও যানবাহন চলাচলে ধীরগতি ছিল।’

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন