৩১ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:০২
বরিশাল থেকে ঢাকা আসেন লঞ্চে এক কাপড়ে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। চলার মতো অর্থ ছিল না। ছিল না খাবার টাকা। শেখ সেলিমের ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় চাকরি নেন বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের। রাতে ঘুমাতেন বাংলার বাণী অফিসেই নিউজ প্রিন্ট বিছিয়ে। বাংলার বাণীতে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। বেতনও ঠিকঠাক মতো হতো না। অভাব-অনটনে কাটত জীবন। কাগজে কলমে আইনের ডিগ্রি থাকলেও কোনো দিন আইন পেশায় যুক্ত থাকেননি। কিন্তু গত ৫০ বছরে গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রী ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেই চাকরি পান রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবুকে ধরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি নেন। সেই টাকায় চলত সংসার। নিজের কোনো বৈধ উপার্জন ছিল না। কিন্তু রাজনীতিই তার কাছে ছিল দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রধান উপায়। রাজনীতি করেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। লুটের টাকায় কাটাচ্ছেন বিলাসী জীবন। বৈধ কোনো উপার্জন ছাড়াই তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন ব্যাপকভাবে। দলের ভিতর কমিটি বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন লাগামহীন। দুর্নীতির দাম কমিশনের প্রাথমিক হিসাব মতে, গত ১৫ বছরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ গুণ। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন যে, এই হিসাবটি খুবই তুচ্ছ এবং হাস্যকর। বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ আরও কয়েকশ গুণ বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী নানক ও তার স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সময় হলফনামায় নানক সম্পদের যে বৈধ হিসাব দিয়েছিলেন তার পরিমাণ ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকা। শুধু দেখানো হিসাবেই তার সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ। আওয়ামী লীগের এই নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। তাহলে সম্পদ বাড়ল কীভাবে? একমাত্র উপায় রাজনীতি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথমে মন্ত্রী হতে পারেননি। কয়েক দিন পরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফ মন্ত্রণালয়ে যেতেন না। মন্ত্রণালয়ের কাজেও তার মনোযোগ ছিল না। আর এই সুযোগ নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিভিন্ন টেন্ডার এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর নানক আরও ক্ষমতা কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, হয়ে পড়েন বেপরোয়া। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তার সম্পৃক্ততা ছিল। সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক সম্পদ গড়তে থাকেন। নিঃস্ব রিক্ত থেকে তিনি হয়ে যান হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম বড় দুর্নীতি আসে ডেসটিনির ঘটনায়। ডেসটিনির কাছ থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কোনো সহায়তা করেননি নানক। ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ডেসটিনি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানককে প্রায় দুই শ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়েছিল। সেই সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পল্লী উন্নয়ন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার যৌথভাবে এই টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেসটিনি ছাড়াও এই সময় নানক এরকম আরও কয়েকটি কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘যুবক’। ‘যুবক’ সমবায় সারা দেশে প্রচুর জমি-জমা এবং সম্পদ করেছিল। ঢাকা শহরেও তাদের বিপুল সম্পদ ছিল। যুবকের ধানমন্ডির জমিটি জাহাঙ্গীর কবির নানক দেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর মির্জা আজমকে। নামমাত্র মূল্যে ধানমন্ডির এক বিঘা জমি মির্জা আজম গ্রহণ করেন। যেখানে তিনি এখন বহুতল ভবন করেছেন এবং একটি ফ্ল্যাটে নিজে থাকতেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, বসিলা, কেরানীগঞ্জে যুবকের বিভিন্ন সম্পদ দখল করে নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। যুবকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হবে, যুবককে নতুন করে কাজ করতে দেওয়া হবে- এরকম আশ্বাস দিয়েও নানক বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের আরেকটা টার্গেট ছিল আর্থ ফাউন্ডেশন। আর্থ ফাউন্ডেশনেও কোঅপারেটিভ সোসাইটি ছিল, যারা জনগণকে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা গ্রহণ করত। আর্থ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যাদের কাছ থেকে তিনি অর্থ নিয়েছেন, তাদেরকেই তিনি ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। কারও কোনো উপকার করেননি। এটি ছিল নানকের অভিনব একটি কৌশল। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নামে সেই প্রকল্পটির দিকে নজর দেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রিয় এই প্রকল্প ছিল, যেখানে গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তাদেরকে একখণ্ড জমি এবং সেই জমির ওপর বাড়ি এবং একটি খামার করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে’র নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালের সময় সেখানে মোট ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ কোনো গরু বা বাড়িঘর দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুরো টাকাই প্রায় লুটপাট হয়ে গেছে। এ সময় ‘একটি বাড়ি একটি খামারে’র নাম হয় ‘অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার’।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশান্ত কুমার হালদার নামে একজন প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি মিলে এই প্রকল্প লুণ্ঠন করেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিল্কভিটা সমবায় সমিতি ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানকের অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম জায়গা। মিল্কভিটাতে হস্তক্ষেপ করে, মিল্কভিটার বিভিন্ন বিষয় তদারকি করে বানিয়ে ফেলেন বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বিভাগ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় প্রচুর। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখানে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি কে প্রধান প্রকৌশলী হবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে কারা প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তদারকি শুরু করেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
২০০৯ থেকে ২০১৫ সালে নানকের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারি ছিল যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্প দুর্নীতিপূর্ণ এবং অযৌক্তিক হিসেবে ফাইল আটকে দেন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্পকে অনুমতি না দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ নোট লিখেছিলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রকল্পটি যেন পাস হয় সেজন্য শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তার সঙ্গে এক দিন দেনদরবার করেন। জানা যায়, এই প্রকল্প পাস করানোর জন্য নানককে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার বিনিময়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হাসিনাকে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফকে ডেকে নিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এই ফ্লাইওভারের ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের একটি বড় দুর্নীতির ঘটনা। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এখন একটি বিষফোঁড়া হিসেবে জাতির সামনে এসেছে। নানকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার কথা সবাই জানত। এ কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রী না হলে কী হবে? জাহাঙ্গীর কবির নানক তার দুর্নীতি এবং লুটপাট অব্যাহত রাখেন। হিসাব করে দেখা গেছে যে, পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে টাকা দিয়ে তিনি বেনামে দেশেবিদেশে সম্পদ করেছেন। এসব অধিকাংশ সম্পদের হিসাব তিনি গোপন করেছেন। তার ব্যক্তি চাকর-বাকর, দেহরক্ষীর নামে ফ্ল্যাট, জমি কিনে তিনি নিজেকে নিরাপদে রেখেছেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম পাঁচ বছরেই নানক হয়ে যান অন্যতম ধনী। যিনি এক সময় দুবেলা খেতে পারতেন না, তিনি পাঁচ বছরের মধ্যেই হয়ে ওঠেন এক ধনাঢ্য হাজার কোটি টাকার মালিক।
সংবাদসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বরিশাল থেকে ঢাকা আসেন লঞ্চে এক কাপড়ে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। চলার মতো অর্থ ছিল না। ছিল না খাবার টাকা। শেখ সেলিমের ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকায় চাকরি নেন বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের। রাতে ঘুমাতেন বাংলার বাণী অফিসেই নিউজ প্রিন্ট বিছিয়ে। বাংলার বাণীতে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। বেতনও ঠিকঠাক মতো হতো না। অভাব-অনটনে কাটত জীবন। কাগজে কলমে আইনের ডিগ্রি থাকলেও কোনো দিন আইন পেশায় যুক্ত থাকেননি। কিন্তু গত ৫০ বছরে গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। স্ত্রী ব্যাংকে চাকরি করতেন। সেই চাকরি পান রাজনৈতিক বিবেচনায়। প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবুকে ধরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি নেন। সেই টাকায় চলত সংসার। নিজের কোনো বৈধ উপার্জন ছিল না। কিন্তু রাজনীতিই তার কাছে ছিল দুর্নীতি এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রধান উপায়। রাজনীতি করেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। বর্তমানে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। লুটের টাকায় কাটাচ্ছেন বিলাসী জীবন। বৈধ কোনো উপার্জন ছাড়াই তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন ব্যাপকভাবে। দলের ভিতর কমিটি বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন লাগামহীন। দুর্নীতির দাম কমিশনের প্রাথমিক হিসাব মতে, গত ১৫ বছরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ গুণ। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা মনে করেন যে, এই হিসাবটি খুবই তুচ্ছ এবং হাস্যকর। বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ আরও কয়েকশ গুণ বেশি। ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী নানক ও তার স্ত্রীর যৌথ সম্পদের পরিমাণ ছিল ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫১ টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের সময় হলফনামায় নানক সম্পদের যে বৈধ হিসাব দিয়েছিলেন তার পরিমাণ ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ টাকা। শুধু দেখানো হিসাবেই তার সম্পদ বেড়েছে ৩০ গুণ। আওয়ামী লীগের এই নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। তাহলে সম্পদ বাড়ল কীভাবে? একমাত্র উপায় রাজনীতি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথমে মন্ত্রী হতে পারেননি। কয়েক দিন পরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সৈয়দ আশরাফ মন্ত্রণালয়ে যেতেন না। মন্ত্রণালয়ের কাজেও তার মনোযোগ ছিল না। আর এই সুযোগ নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিভিন্ন টেন্ডার এবং বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর নানক আরও ক্ষমতা কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হয়ে যান, হয়ে পড়েন বেপরোয়া। অনেকেই অভিযোগ করেন যে, বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তার সম্পৃক্ততা ছিল। সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের অন্যতম নীতিনির্ধারকে পরিণত হন। এরপর থেকেই তিনি একের পর এক সম্পদ গড়তে থাকেন। নিঃস্ব রিক্ত থেকে তিনি হয়ে যান হাজার কোটি টাকার মালিক। ২০০৯ সালে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম বড় দুর্নীতি আসে ডেসটিনির ঘটনায়। ডেসটিনির কাছ থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কোনো সহায়তা করেননি নানক। ডেসটিনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ডেসটিনি নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য নানককে প্রায় দুই শ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়েছিল। সেই সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পল্লী উন্নয়ন সচিব মিহির কান্তি মজুমদার যৌথভাবে এই টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ডেসটিনি ছাড়াও এই সময় নানক এরকম আরও কয়েকটি কোঅপারেটিভ সোসাইটির কাছ থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘যুবক’। ‘যুবক’ সমবায় সারা দেশে প্রচুর জমি-জমা এবং সম্পদ করেছিল। ঢাকা শহরেও তাদের বিপুল সম্পদ ছিল। যুবকের ধানমন্ডির জমিটি জাহাঙ্গীর কবির নানক দেন তার ঘনিষ্ঠ সহচর মির্জা আজমকে। নামমাত্র মূল্যে ধানমন্ডির এক বিঘা জমি মির্জা আজম গ্রহণ করেন। যেখানে তিনি এখন বহুতল ভবন করেছেন এবং একটি ফ্ল্যাটে নিজে থাকতেন। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, বসিলা, কেরানীগঞ্জে যুবকের বিভিন্ন সম্পদ দখল করে নেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। যুবকের লাইসেন্স নবায়ন করে দেওয়া হবে, যুবককে নতুন করে কাজ করতে দেওয়া হবে- এরকম আশ্বাস দিয়েও নানক বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানকের আরেকটা টার্গেট ছিল আর্থ ফাউন্ডেশন। আর্থ ফাউন্ডেশনেও কোঅপারেটিভ সোসাইটি ছিল, যারা জনগণকে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা গ্রহণ করত। আর্থ ফাউন্ডেশনের কাছ থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা নেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যাদের কাছ থেকে তিনি অর্থ নিয়েছেন, তাদেরকেই তিনি ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। কারও কোনো উপকার করেননি। এটি ছিল নানকের অভিনব একটি কৌশল। এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ নামে সেই প্রকল্পটির দিকে নজর দেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রিয় এই প্রকল্প ছিল, যেখানে গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তাদেরকে একখণ্ড জমি এবং সেই জমির ওপর বাড়ি এবং একটি খামার করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই পুরো টাকাই লুটপাট করা হয়। ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে’র নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পাঁচ বছরের মন্ত্রিত্বকালের সময় সেখানে মোট ৪ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অথচ কোনো গরু বা বাড়িঘর দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুরো টাকাই প্রায় লুটপাট হয়ে গেছে। এ সময় ‘একটি বাড়ি একটি খামারে’র নাম হয় ‘অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার’।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রশান্ত কুমার হালদার নামে একজন প্রকল্প পরিচালকের যোগসাজশে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আরও কতিপয় ব্যক্তি মিলে এই প্রকল্প লুণ্ঠন করেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিল্কভিটা সমবায় সমিতি ছিল জাহাঙ্গীর কবির নানকের অর্থ উপার্জনের একটি অন্যতম জায়গা। মিল্কভিটাতে হস্তক্ষেপ করে, মিল্কভিটার বিভিন্ন বিষয় তদারকি করে বানিয়ে ফেলেন বিপুল পরিমাণ টাকা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অন্যতম বিভাগ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর। স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় প্রচুর। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখানে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি কে প্রধান প্রকৌশলী হবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোতে কারা প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ে তদারকি শুরু করেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
২০০৯ থেকে ২০১৫ সালে নানকের অন্যতম বড় কেলেঙ্কারি ছিল যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার প্রকল্প। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্প দুর্নীতিপূর্ণ এবং অযৌক্তিক হিসেবে ফাইল আটকে দেন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রকল্পকে অনুমতি না দেওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ নোট লিখেছিলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক এই প্রকল্পটি যেন পাস হয় সেজন্য শেখ হাসিনার কাছে যান এবং তার সঙ্গে এক দিন দেনদরবার করেন। জানা যায়, এই প্রকল্প পাস করানোর জন্য নানককে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। এই টাকার বিনিময়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ হাসিনাকে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফকে ডেকে নিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এই ফ্লাইওভারের ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশের একটি বড় দুর্নীতির ঘটনা। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার এখন একটি বিষফোঁড়া হিসেবে জাতির সামনে এসেছে। নানকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম এবং মন্ত্রণালয়ের স্বেচ্ছাচারিতার কথা সবাই জানত। এ কারণেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর জাহাঙ্গীর কবির নানককে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়নি। কিন্তু মন্ত্রী না হলে কী হবে? জাহাঙ্গীর কবির নানক তার দুর্নীতি এবং লুটপাট অব্যাহত রাখেন। হিসাব করে দেখা গেছে যে, পাঁচ বছর প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর কবির নানক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যে টাকা দিয়ে তিনি বেনামে দেশেবিদেশে সম্পদ করেছেন। এসব অধিকাংশ সম্পদের হিসাব তিনি গোপন করেছেন। তার ব্যক্তি চাকর-বাকর, দেহরক্ষীর নামে ফ্ল্যাট, জমি কিনে তিনি নিজেকে নিরাপদে রেখেছেন। এভাবেই আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম পাঁচ বছরেই নানক হয়ে যান অন্যতম ধনী। যিনি এক সময় দুবেলা খেতে পারতেন না, তিনি পাঁচ বছরের মধ্যেই হয়ে ওঠেন এক ধনাঢ্য হাজার কোটি টাকার মালিক।
সংবাদসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:৪১
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুলতান খান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। মৃত সুলতান খান পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় ৫ জন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জন। বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন।
এছাড়া চলতি বছর গোটা বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ ও পটুয়াখালীকে ১ জন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুলতান খান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। মৃত সুলতান খান পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় ৫ জন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জন। বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন।
এছাড়া চলতি বছর গোটা বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ ও পটুয়াখালীকে ১ জন।
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:০২
বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের সময় ১১ জেলেকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) হিজলার মেঘনা নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহযোগিতায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলিয়াস সিকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজনকে আট দিন করে কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া বাকিদের মধ্যে একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও চারজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকার মাধ্যমে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের সময় ১১ জেলেকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) হিজলার মেঘনা নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহযোগিতায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলিয়াস সিকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজনকে আট দিন করে কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া বাকিদের মধ্যে একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও চারজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকার মাধ্যমে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:২২
বরিশাল শহরের ঝুঁকিপূর্ণ সেই ৩৪টি ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের তিনতলা দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বে এই ভবনসমূহকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে বসবাসরতদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলে সিটি প্রশাসন ঘোষণা করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ভবনগুলো অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেপরে এনিয়ে দৈনির রূপালী বাংলাদেশসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়।
সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার তীরের শহর বরিশালের ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিসিসি। ২০১৩ সালের জরিপে এসব ভবনকে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ভবনের বেশিরভাগ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এবং ভবনগুলো যে আইনগতভাবে ভাঙতে না পারে তার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতা এড়াতে বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন তৎপরতা দেখায়নি বা নিশ্চুপ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সদর রোডসংলগ্ন বহুতল ভবন দুটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল অবৈধভাকে দখল করে রেখেছিলেন। এই কাজী কামলা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ শ্যালক। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বরিশালে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছেন। সদর রোডে ভবন দুটির নিচের দোকান দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজে দখল করে রাখেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে আছেন।
একটি ভবনের মালিক নজরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তাঁর চাচা উলফাত হাজি এবং শুককুর হাজি ১৯৬০ সালে একটি ভবন ও ৩০ বছর আগে আরেকটি ভবন সদর রোডে নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে একটি পাকা ভবনে ফাটল দেখা দেয় এবং পাশের ভবন ঘেঁষে হেলে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু প্রভাবশালী ভাড়াটেরা জোর করে দখলে রাখায় ওই সময় ভাঙার ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে ভবন ভাঙার জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দেন নজরুল ইসলাম। তারপর ভবনটি শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি অপসারণে কাজ শুরু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উলফাত এবং শাকুর ম্যানশন নামের ওই দুটি ভবন ইতিপূর্বে ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাড়াটেরা আদালতে গেছেন। আমরা কোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় পেয়েছি। এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সেখানে নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও ভাড়াটেরা দখল ছাড়েননি। শুক্রবার সকালে তাদের চূড়ান্তভাবে চলে যাওয়ার নোটিস দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। আশা করছি, সাত দিনের মধ্যে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা সম্ভব।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মহিলা কলেজসংলগ্ন মনু মিয়ার ভবন এবং সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবনসহ ৩৪টি ভবনই পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু অনুমোদনহীন এমন কিছু ভবনও রয়েছে।’
বরিশাল শহরের ঝুঁকিপূর্ণ সেই ৩৪টি ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের তিনতলা দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বে এই ভবনসমূহকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে বসবাসরতদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলে সিটি প্রশাসন ঘোষণা করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ভবনগুলো অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেপরে এনিয়ে দৈনির রূপালী বাংলাদেশসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়।
সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার তীরের শহর বরিশালের ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিসিসি। ২০১৩ সালের জরিপে এসব ভবনকে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ভবনের বেশিরভাগ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এবং ভবনগুলো যে আইনগতভাবে ভাঙতে না পারে তার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতা এড়াতে বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন তৎপরতা দেখায়নি বা নিশ্চুপ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সদর রোডসংলগ্ন বহুতল ভবন দুটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল অবৈধভাকে দখল করে রেখেছিলেন। এই কাজী কামলা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ শ্যালক। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বরিশালে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছেন। সদর রোডে ভবন দুটির নিচের দোকান দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজে দখল করে রাখেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে আছেন।
একটি ভবনের মালিক নজরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তাঁর চাচা উলফাত হাজি এবং শুককুর হাজি ১৯৬০ সালে একটি ভবন ও ৩০ বছর আগে আরেকটি ভবন সদর রোডে নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে একটি পাকা ভবনে ফাটল দেখা দেয় এবং পাশের ভবন ঘেঁষে হেলে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু প্রভাবশালী ভাড়াটেরা জোর করে দখলে রাখায় ওই সময় ভাঙার ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে ভবন ভাঙার জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দেন নজরুল ইসলাম। তারপর ভবনটি শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি অপসারণে কাজ শুরু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উলফাত এবং শাকুর ম্যানশন নামের ওই দুটি ভবন ইতিপূর্বে ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাড়াটেরা আদালতে গেছেন। আমরা কোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় পেয়েছি। এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সেখানে নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও ভাড়াটেরা দখল ছাড়েননি। শুক্রবার সকালে তাদের চূড়ান্তভাবে চলে যাওয়ার নোটিস দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। আশা করছি, সাত দিনের মধ্যে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা সম্ভব।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মহিলা কলেজসংলগ্ন মনু মিয়ার ভবন এবং সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবনসহ ৩৪টি ভবনই পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু অনুমোদনহীন এমন কিছু ভবনও রয়েছে।’
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.