dreamliferupatolibarisal

পিরোজপুর

পিরোজপুরের কাউখালীতে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা একজন ডাক্তার : ভেঙ্গে পড়ছে চিকিৎসা সেবা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৫:৫৩

প্রিন্ট এন্ড সেভ

পিরোজপুরের কাউখালীতে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা একজন ডাক্তার : ভেঙ্গে পড়ছে চিকিৎসা সেবা

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সহ জনবল সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ভেঙ্গে পড়ছে চিকিৎসা সেবা। ১৪ জন চিকিৎসকের বিপরীতে আছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সহ২জন।

চিকিৎসকের অভাবে প্রতিদিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সেবাগৃহীতারা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীদের চাপে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর লোকজন হতাশ হয় ফিরে যাচ্ছে। পাঁচটি ইউনিয়নের সাব সেন্টারে পাঁচজন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও নেই একজনও।

ইউনিয়ন সাব সেন্টার বাদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জন মেডিকেল অফিসারের কথা থাকলে আছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সহ দুইজন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ সময় একজন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিচ্ছে।

রোগীদের প্রচন্ড ভিড়ে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওই একজন চিকিৎসকের। একজন চিকিৎসকের পক্ষে কি সম্ভব আউটডোর, ইনডোর ও জরুরী বিভাগের কাজ করার পরও নাইট ডিউটি করা।

উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সুব্রত কর্মকার আউটডোর, ইনডোর ও জরুরী বিভাগের কাজ একার পক্ষেই করতে হয়। প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন বিভিন্ন রোগীরা সেবা নিতে ভিড় করছে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালে ভর্তি রোগী নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে ডাক্তার আসে না, শুধু নার্স আপারা আসে।

দিনে একবার ডাক্তার আসলেও রাতের কোন ডাক্তার দেখা যায় না। উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুব্রত কর্মকার বলেন, ডাক্তার সংকটের কারণে বেশিরভাগ সময় আমাকে দিনে ও রাতে একাই চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।

ডিউটি করতে করতে নিজেই রোগী হওয়ার উপক্রম। আউটডোরে , আবার জরুরী বিভাগ ও রাতে নাইট ডিউটি করতে হবে। এটা কি কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব? তারপরও সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রশাসনিক কাজে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয় ।তারপরও আউটডোরে রোগী দেখার চেষ্টা করি।

চিকিৎসকসহ জনবল না থাকায় সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সমস্যাগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ মতিউর রহমান জানান, কাউখালীতে চিকিৎসক সংকটে কথা আমার জানা আছে। আশা করি কিছুদিনের ভিতরেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

পিরোজপুরে জামায়াতের এমপি প্রার্থীকে হারিয়ে সভাপতি ছাত্রদল নেতা

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:১০

প্রিন্ট এন্ড সেভ

পিরোজপুরে জামায়াতের এমপি প্রার্থীকে হারিয়ে সভাপতি ছাত্রদল নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পশ্চিম মিঠাখালী নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি। তিনি পিরোজপুর–৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত এমপি প্রার্থী ও উপজেলা জামায়াতের আমির শরীফ মো. আব্দুল জলিলকে পরাজিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাতজন সদস্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিজয়ী হয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার ও মঠবাড়িয়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলাম ভোটগ্রহণ শেষে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, দুজন শিক্ষক তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ শেষ করেছি। এর আগে সোমবার (১৩ অক্টোবর) মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ভোট দিয়ে সাতজন সদস্য নির্বাচিত করেন, যারা পরে সভাপতি নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। এ বিষয়ে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শরীফ মো. আব্দুল জলিল পক্ষে উপজেলা শাখা সেক্রেটারি মো. আবুল কালাম আজাদ মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

এতে মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মো. আব্দুল জলিল বৃহস্পতিবার ঢাকা গিয়েছেন। তাকে মোল্লাবাড়ি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী করা হয়েছে তা জলিল এবং মঠবাড়িয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামী অবগত নন। তার অনুমতি ছাড়া যারা এ কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, বিভিন্ন অনলাইন নিউজে যে নিউজটি ভাইরাল হয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভোট হওয়ার আগে কমিটিতে থাকার বিষয়ে অপারগতা জানিয়েছেন। তারপরও কমিটির পক্ষ থেকে দু-একজন মো. আব্দুল জলিলের নাম প্রস্তাব করেছেন।

তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। তিনি কোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর করেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। যেহেতু তিনি এমপি প্রার্থী তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য মহল কাজ করতেছে।

আর ছাত্রদল নেতা শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি বলেন, আমি নির্বাচিত হয়েছি এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমি নিরলসভাবে কাজ করে যেতে চাই। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাকে একটি মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।

জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়া করল ছেলে

বরিশালটাইমস

বরিশালটাইমস

১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৬:১০

প্রিন্ট এন্ড সেভ

জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়া করল ছেলে

পিরোজপুরের নেছারাবাদে এক পাষণ্ড ছেলের বিরুদ্ধে কৌশলে ২২ শতক জমি লিখে নেওয়ার পর মা-বাবাকে নির্মমভাবে মারধর ও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই প্রবীণ দম্পতি ১০ দিন ধরে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী বাবা মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) এবং মা মমতাজ বেগম (৫০) এ ঘটনায় তাঁদের বড় ছেলে মো. মিলন এবং পুত্রবধূ রুবি বেগমের বিরুদ্ধে নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে।

বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে মিলন বড়। স্ত্রীসহ চিকিৎসার খরচের জন্য ছেলের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন তিনি। সেই সুযোগে মিলন কৌশলে তাঁর ২২ শতক জমি নিজের নামে লিখে নেয়।

তিনি বলেন, আমরা এখন বাড়ি থেকে কোনো ফল-ফসল ধরতে পারি না। ৬ অক্টোবর সকালে বাগানের কিছু সুপারি পাড়তে গেলে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে নির্মমভাবে মারধর করে। মারধরের ঘটনায় আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে। এখন আবার বাকি জমিটুকুও লিখে দিতে বলছে।

মা মমতাজ বেগম বলেন, ছেলে কৌশলে জমি লিখে নিয়ে এখন আমাদের কাছ থেকে টাকা চাইছে, বাকি জমিও লিখে দিতে বলছে। সেদিন ওর বাপকে বেদম মারধর করেছে, আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও পিটিয়েছে।

আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাঁদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না, তাই আমি তাঁদের থানায় যেতে বলেছি।

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন বলেন, তাদের ছেলে অত্যন্ত খারাপ। জমির জন্য মা-বাবাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ওই পাষণ্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি বনি আমিন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। ভুক্তভোগীরা যেন থানায় এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‎পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার, পরিমাণেও কম

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২৫

প্রিন্ট এন্ড সেভ

‎পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিম্নমানের খাবার, পরিমাণেও কম

পিরোজপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিমাণে কম এবং অরুচিকর খাবার দেওয়ায় তা গ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছেন রোগীরা।

ফলে নিজেদের বাড়ি, আত্মীয়-স্বজন বা বাইরের রেস্টুরেন্ট থেকে তারা খাবার কিনে খাচ্ছেন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের।

‎মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ও এর রান্নাঘর ঘুরে দেখা যায়, রান্নাঘরের মেঝে ঝকঝকে, বাসনপত্র ধোয়া, খাবার রাখা হয়েছে পরিপাটি করে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে একটি আদর্শ রান্নাঘর।

কিন্তু এই নিখুঁত বাহ্যিকতার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অপ্রিয় সত্য। রোগীর প্লেটে যে খাবার পৌঁছায়, তার মান আর পরিমাণে রয়েছে বড়সড় গলদ। সকালের নাস্তার জন্য রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি ডিম, সামান্য চিনি ও একটি কলা দেওয়া হয়েছে।

যেখানে নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়ার অভিযোগ করেন রোগীরা। পাশাপাশি দেখা যায়, দরপত্র অনুযায়ী ৪ ইঞ্চি আকারের একটি সবরি জাতের কলা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ছোট একটি চিনিচাপা জাতের কলা।

দুপুরের খাবারে মাছ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় মুরগীর মাংস। ৬০ গ্রামের ওপরে একটুকরো মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ৫০ গ্রামের কম ওজনের মাংসের টুকরা। ভাতের চালও মানহীন।

‎রোগীরা অভিযোগ করে বলছেন, বাজারে মাছের দাম মুরগির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় মাছের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মুরগি। এদিকে হাসপাতালের বাবুর্চি লাইলি আক্তার বলেন, আজকে মাছ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু মাছের পরিবর্তে মাংস দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলছেন, “মাছ বাজারে পায়নি, তাই মাংস দিয়েছে”।

‎সবরি জাতের কলার পরিবর্তে চিনিচাপা জাতের কলা এবং আকারে ছোট কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার বলেন “বাজারে সবরি কলা নেই আকারেও বড় নেই। আমি সুপারভাইজারকে এ বিষয়ে জানিয়েছি”।

‎এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) নিজাম উদ্দিন। নিজের অফিস কক্ষ থেকে চলে আসেন খাবার বিতরণের জায়গায়। খাবার নিম্নমানের ও পরিমাণে কম দেওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পরেন।

‎তিনি প্রথমে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও পরে উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ‘খাবার নিম্নমানের না, খাবার ঠিকমতোই দেওয়া হচ্ছে। আজকে মাছের পরিবর্তে মাংস দিয়েছি। ঠিকাদার মাংসের দামই পাবে, মাছের দাম পাবে না।’ ওজনে কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার যতটুকু ওজন দিয়েছে সেই দামই পাবে।’

‎সকালের নাস্তায় নিম্নমানের পাউরুটি এবং দরপত্রে দেওয়া আকারের চেয়ে ছোট আকারের কলা কেন দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রুটি আমরা মেপে নিয়েছি, যে ওজনের দেওয়ার কথা সেই ওজনের দিয়েছে। কলা যেরকম দেওয়ার কথা সেরকম দিয়েছে। এখানে নিয়মের বাইরে কিছু হয়নি। ঠিকাদারকে কার্যাদেশে যে পরিমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই পরিমাণই দিয়েছে।’

‎জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দরপত্র মূল্যায়নে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি ছিল শেখ এন্ড সন্স ট্রেডার্স। বেশি দরে খাবার সরবরাহের দরপত্র বাগিয়ে নিলেও রোগীদের পাতে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের খাবার, এতে ক্ষুব্ধ রোগীরা।

২০২৩-২৪ অর্থ বছরের পরে আর কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে দরপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের খাবার সরবরাহ করছে।

‎এদিকে এ বছরের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করে খাবারের পরিমাণ কম দেওয়ার সত্যতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করেছিল। তবে সচেতন মহলের দাবি, দুদক থেকে সতর্ক করার পরেও কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ।

‎জানা যায়, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিভাগে ভর্তি রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা মূল্যের তিন বেলা খাবার (সকালে নাশতা, দুপুরে ও রাতে ভাত) দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশেষ দিবসে প্রতি রোগীকে ২০০ টাকার খাবার দেওয়া হয়।

দরপত্রের শর্ত অনুয়ায়ী, হাসপাতালে প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ২৮ ইরি চালের ৩৩০ গ্রাম ভাত, সপ্তাহে পাঁচ দিন মাছ ও মাংস ৬৩.৬৬ গ্রাম করে দুই বেলা দেওয়ার কথা। সপ্তাহে দুই দিন মাছ ও ডিম দেওয়ার কথা।

এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও একটি পাকা সবরি কলা দেওয়ার কথা। কিন্তু মাছ-মাংসের অংশ আকারে ছোট, কলাও ছোট ও নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। মসলা কম দিয়ে তরকারি রান্না করে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে, যেটি খেতে রোগীরা আগ্রহী হচ্ছে না।

‎হাসপাতালের রোগী সদর উপজেলার সিআই পাড়া এলাকার বাসিন্দা জিসান শিকদার বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট, পেটের ব্যথা নিয়ে ভর্তি আছি। হাসপাতালে দুইবার সামান্য ভাত, আলু দুই পিস, ছোট সাইজের মাছ-মাংস দেওয়া হয়। তরকারিতে মসলার পরিমাণ খুবই কম, মাছ-মাংস পুরোপুরিভাবে রান্না করা হয় না। খাবার মানসম্মত নয়।’

‎ভর্তি থাকা আরেক রোগীর স্বজন আসমা আক্তার বলেন, ‘দুপুরের খাবারের জন্য ভাত, সবজি, ডাল ও মাছের পরিবর্তে ছোট এক টুকরা মাংস দিয়েছে, তা রুচিসম্মত না। আমার মনে হয়েছে, এটা রোগীর খাবার না। আমরা খাবার ফিরিয়ে দিয়েছি, এখন বাইরে থেকে কিনে খাওয়াতে হবে।’

‎এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে আমরা নিয়মিত খাবার তদারকি করি, এ বিষয়ক একটা কমিটিও আছে। জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা মিটিংয়ের মাধ্যমে আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, সেই কমিটির মাধ্যমে মাসে এক থেকে দুবার এই খাবার মনিটরিং করা হয়।

আপনারা যে অভিযোগটা দিয়েছেন সে বিষয়ে অবশ্যই আমি তদারকি করব। আমি আগামীকালই আরএমও সাহেবসহ আমাদের যে ঠিকাদার আছে তাদের সঙ্গে কথা বলবো। প্রতিটি পয়েন্টে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। আশা করি, যদি কোনো ঘাটতি থাকে আগামীকাল থেকে অবশ্যই রিকভার হবে।’

‎স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি অর্থে পরিচালিত হাসপাতালগুলোর খাবারের মান নিয়ে নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তারা দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.