
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:০৫
দেশের নানা প্রান্তে চলছে প্রতিভার উৎসব—মার্কস অলরাউন্ডার। ‘দেখাও যত প্রতিভা তোমার’ স্লোগানকে সঙ্গে নিয়ে দেশের অন্যতম বড় এই প্ল্যাটফর্ম শিশু–কিশোরদের জন্য হয়ে উঠেছে নিজেদের প্রতিভা ও সম্ভাবনা প্রকাশের এক অনন্য মঞ্চ। বরাবরের মতো এবারও আয়োজনে অংশ নিচ্ছে অসংখ্য প্রতিযোগী।
আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে চলবে এ প্রতিযোগিতা। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে আঞ্চলিক পর্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে উঠে এসেছে অসংখ্য নতুন মুখ ও নতুন গল্প।
শুক্রবার ও শনিবার (১৪ ও ১৫ নভেম্বর) বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নিম্নলিখিত প্রতিটি ভেন্যুতে সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা।
তারিখ: ১৪ নভেম্বর, শুক্রবার
ভেন্যু: ব্রজমোহন বিদ্যালয় (বিএম স্কুল), কালীবাড়ি রোড, বরিশাল।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কোতোয়ালি থানার একাংশ (কাশীপুর, রহমতপুর, নতুন বাজার, বিএম কলেজ, নবগ্রাম, কড়াপুর ও রায়পাশা এলাকা)।
ভেন্যু: কাউনিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়া হাউজিং রোড, বরিশাল।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কাউনিয়া, বন্দর, বিমানবন্দর, আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর ও মুলাদী থানা।
তারিখ: ১৫ নভেম্বর, শনিবার
ভেন্যু: আছমত আলী খান (এ কে) ইনস্টিটিউশন, গির্জা মহল্লা, বরিশাল সদর।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কোতোয়ালি থানার একাংশ (রূপাতলী, কালিজিরা, ধপধপিয়া, কোয়েরচর, ব্যান্ড রোড, জাগুয়া এরিয়া), কাজীরহাট, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, বাকেরগঞ্জ থানা এবং ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা।
ভেন্যু: লতিফ মিউনিসিপ্যাল সেমিনারী, লতিফ স্কুল রোড, পটুয়াখালী।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা।
প্রতিযোগিতার গ্রুপ ও বিষয়—
প্লে থেকে ৪র্থ শ্রেণি—জুনিয়র স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, গল্প বলা) ; ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণি—মিডল স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা) এবং ৯ম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি—হাইস্কুল ও কলেজ (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা।)
পর্যায়ক্রমে দেশের ১০০টি স্থানে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ (প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। ইতিমধ্যে ৪২টি জেলায় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।
পুরস্কার
মার্কস অলরাউন্ডারে তিনটি গ্রুপ থেকে সেরা তিন অলরাউন্ডারের প্রত্যেকে পাবে ১৫ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। আর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবে মোট ১ কোটি টাকার বেশি উপহার ও শিক্ষাবৃত্তি।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে তিনটি গ্রুপের ফার্স্ট রানার্সআপ এবং সেকেন্ড রানার্সআপের প্রত্যেকে পাবে ৫ লাখ এবং ৩ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। তিনটি গ্রুপের ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে সেরা ৩ জন করে মোট ৫৪ জন সেরা পারফর্মারের প্রত্যেকে পাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবে একটি করে কম্পিউটার।
আয়োজকদের মতে, ‘মার্কস অলরাউন্ডার’ কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি বাংলাদেশের শিশু–কিশোরদের প্রতিভা, মেধা, সংস্কৃতি ও আত্মবিশ্বাস বিকাশের এক বিস্তৃত পরিসর। আঞ্চলিক থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত এই আয়োজন প্রতিটি অংশগ্রহণকারীর জন্য হয়ে উঠেছে শেখার এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি নিজেকে নতুনভাবে চিনে নেওয়ার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার এক শক্ত প্রেরণা।
বিস্তারিত জানতে ফোন করা যাবে (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) ০৯৬১৪৫১৬১৭১ নম্বরে।
দেশের নানা প্রান্তে চলছে প্রতিভার উৎসব—মার্কস অলরাউন্ডার। ‘দেখাও যত প্রতিভা তোমার’ স্লোগানকে সঙ্গে নিয়ে দেশের অন্যতম বড় এই প্ল্যাটফর্ম শিশু–কিশোরদের জন্য হয়ে উঠেছে নিজেদের প্রতিভা ও সম্ভাবনা প্রকাশের এক অনন্য মঞ্চ। বরাবরের মতো এবারও আয়োজনে অংশ নিচ্ছে অসংখ্য প্রতিযোগী।
আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে চলবে এ প্রতিযোগিতা। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে আঞ্চলিক পর্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে উঠে এসেছে অসংখ্য নতুন মুখ ও নতুন গল্প।
শুক্রবার ও শনিবার (১৪ ও ১৫ নভেম্বর) বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নিম্নলিখিত প্রতিটি ভেন্যুতে সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা।
তারিখ: ১৪ নভেম্বর, শুক্রবার
ভেন্যু: ব্রজমোহন বিদ্যালয় (বিএম স্কুল), কালীবাড়ি রোড, বরিশাল।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কোতোয়ালি থানার একাংশ (কাশীপুর, রহমতপুর, নতুন বাজার, বিএম কলেজ, নবগ্রাম, কড়াপুর ও রায়পাশা এলাকা)।
ভেন্যু: কাউনিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়া হাউজিং রোড, বরিশাল।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কাউনিয়া, বন্দর, বিমানবন্দর, আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর ও মুলাদী থানা।
তারিখ: ১৫ নভেম্বর, শনিবার
ভেন্যু: আছমত আলী খান (এ কে) ইনস্টিটিউশন, গির্জা মহল্লা, বরিশাল সদর।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: বরিশালের কোতোয়ালি থানার একাংশ (রূপাতলী, কালিজিরা, ধপধপিয়া, কোয়েরচর, ব্যান্ড রোড, জাগুয়া এরিয়া), কাজীরহাট, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, বাকেরগঞ্জ থানা এবং ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা।
ভেন্যু: লতিফ মিউনিসিপ্যাল সেমিনারী, লতিফ স্কুল রোড, পটুয়াখালী।
যে এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে: পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা।
প্রতিযোগিতার গ্রুপ ও বিষয়—
প্লে থেকে ৪র্থ শ্রেণি—জুনিয়র স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, গল্প বলা) ; ৫ম থেকে ৮ম শ্রেণি—মিডল স্কুল (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা) এবং ৯ম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি—হাইস্কুল ও কলেজ (গান, নাচ, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা।)
পর্যায়ক্রমে দেশের ১০০টি স্থানে আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ (প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। ইতিমধ্যে ৪২টি জেলায় প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।
পুরস্কার
মার্কস অলরাউন্ডারে তিনটি গ্রুপ থেকে সেরা তিন অলরাউন্ডারের প্রত্যেকে পাবে ১৫ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। আর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজয়ীরা পাবে মোট ১ কোটি টাকার বেশি উপহার ও শিক্ষাবৃত্তি।
গ্র্যান্ড ফিনালেতে তিনটি গ্রুপের ফার্স্ট রানার্সআপ এবং সেকেন্ড রানার্সআপের প্রত্যেকে পাবে ৫ লাখ এবং ৩ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি। তিনটি গ্রুপের ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে সেরা ৩ জন করে মোট ৫৪ জন সেরা পারফর্মারের প্রত্যেকে পাবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক। জাতীয় পর্যায়ে তিনটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাবে একটি করে কম্পিউটার।
আয়োজকদের মতে, ‘মার্কস অলরাউন্ডার’ কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি বাংলাদেশের শিশু–কিশোরদের প্রতিভা, মেধা, সংস্কৃতি ও আত্মবিশ্বাস বিকাশের এক বিস্তৃত পরিসর। আঞ্চলিক থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত এই আয়োজন প্রতিটি অংশগ্রহণকারীর জন্য হয়ে উঠেছে শেখার এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি নিজেকে নতুনভাবে চিনে নেওয়ার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার এক শক্ত প্রেরণা।
বিস্তারিত জানতে ফোন করা যাবে (সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা) ০৯৬১৪৫১৬১৭১ নম্বরে।
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৪
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:০৯
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:১৮

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:৪০
সামাজিকমাধ্যম খুললেই চোখে পড়ছে এক অদ্ভুত ছবি। দেশের জনপ্রিয় নারী তারকাদের পোস্টে হঠাৎ করেই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সংখ্যা। হাতে, গালে; শরীরের বিভিন্ন অংশে কেউ লিখেছেন ‘৯’, কারও ‘২৪’, কেউবা লিখছেন ‘১০০০’ বা ‘৯৯+’। এই সংখ্যাগুলোর মানে কী, তা নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
অনেকেই ভেবেছিলেন এটি হয়তো নতুন কোনো প্রজেক্ট বা কোনো নির্মাণের প্রচারণা। কিন্তু না। এই সংখ্যার নেপথ্যে লুকিয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতা। যার প্রতিবাদেই একত্রিত হয়েছেন তারকারা।
ডিজিটাল সহিংসতা ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা ছড়াতে ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ নামে নতুন এক আন্দোলনে একযোগে যুক্ত হয়েছেন অভিনেত্রী, মডেল, সংগীতশিল্পীসহ দেশীয় বিনোদন অঙ্গনের অসংখ্য পরিচিত মুখ। প্রতিদিন অনলাইনে তারা কতবার হয়রানির মুখে পড়েন সেই সংখ্যাই প্রকাশ করছেন নিজেদের ছবির সঙ্গে।
এই অভিযানে প্রথম আওয়াজ তোলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। ২৫ নভেম্বর নিজের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায় তার গালে বড় করে লেখা ‘৯’। ক্যাপশনে জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৯টি সাইবার হয়রানির শিকার হন তিনি। নিজের কণ্ঠস্বরকে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে লেখেন, ‘মানুষ হয়তো কেবল একটি সংখ্যা দেখছে, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে আমার প্রতিদিনের সংগ্রাম, ভয়, অপমান, এবং সে সবকিছু কাটিয়ে ওঠার গল্প।’
তিশার পর একে একে যোগ দেন আরও অনেকে। অভিনেত্রী রুনা খান প্রকাশ করেন ‘২৪’; শবনম ফারিয়া জানান ‘১০০০’; প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ‘৩’; মৌসুমী হামিদ ‘৭২’; সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল ও আশনা হাবিব ভাবনা পোস্ট করেন ‘৯’ এবং ‘৯৯+’। সংখ্যাগুলো ভয়াবহ হলেও বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি। নারীরা প্রতিদিন অনলাইনে কী ভয়াবহ অপমান, কটূক্তি ও মানসিক নির্যাতনের মধ্যে থাকেন সেটিই সামনে আনছেন তারা।
রুনা খান তার হাতের তালুতে লিখেছেন ‘২৪’। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানি নিয়ে বলেন, ‘তারকা তো বটেই, সাধারণ নারীও প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় অগণিত হয়রানির শিকার হন। গত দশ বছরে সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের হাতে যত দ্রুত পৌঁছেছে, তার ব্যবহারবিধি শেখেনি অনেকেই।’
গালে ৯৯+ লিখে ভাবনা ক্যাপশনে নারীদের উৎসাহিত করতে লিখেছেন, ‘তোমার নম্বরের গল্প বলো, আরো জোরে আওয়াজ তোলো’।
তিনি আরও জানান, বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর নারীদের অনলাইন পরিবেশ আরও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিকভাবেও চলমান ডিজিটাল সহিংসতা বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ আন্দোলন বাংলাদেশে ১৬ দিনব্যাপী চলবে। তারকারা চাইছেন, নিজেদের অভিজ্ঞতা সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করে আরও বড় করে তুলতে সমাজের ভেতরকার সমস্যাকে।
সবার উদ্দেশে আহ্বান একটাই চুপ না থেকে সংখ্যাই হোক প্রতিবাদের ভাষা।
সামাজিকমাধ্যম খুললেই চোখে পড়ছে এক অদ্ভুত ছবি। দেশের জনপ্রিয় নারী তারকাদের পোস্টে হঠাৎ করেই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সংখ্যা। হাতে, গালে; শরীরের বিভিন্ন অংশে কেউ লিখেছেন ‘৯’, কারও ‘২৪’, কেউবা লিখছেন ‘১০০০’ বা ‘৯৯+’। এই সংখ্যাগুলোর মানে কী, তা নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
অনেকেই ভেবেছিলেন এটি হয়তো নতুন কোনো প্রজেক্ট বা কোনো নির্মাণের প্রচারণা। কিন্তু না। এই সংখ্যার নেপথ্যে লুকিয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতা। যার প্রতিবাদেই একত্রিত হয়েছেন তারকারা।
ডিজিটাল সহিংসতা ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা ছড়াতে ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ নামে নতুন এক আন্দোলনে একযোগে যুক্ত হয়েছেন অভিনেত্রী, মডেল, সংগীতশিল্পীসহ দেশীয় বিনোদন অঙ্গনের অসংখ্য পরিচিত মুখ। প্রতিদিন অনলাইনে তারা কতবার হয়রানির মুখে পড়েন সেই সংখ্যাই প্রকাশ করছেন নিজেদের ছবির সঙ্গে।
এই অভিযানে প্রথম আওয়াজ তোলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। ২৫ নভেম্বর নিজের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায় তার গালে বড় করে লেখা ‘৯’। ক্যাপশনে জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৯টি সাইবার হয়রানির শিকার হন তিনি। নিজের কণ্ঠস্বরকে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে লেখেন, ‘মানুষ হয়তো কেবল একটি সংখ্যা দেখছে, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে আমার প্রতিদিনের সংগ্রাম, ভয়, অপমান, এবং সে সবকিছু কাটিয়ে ওঠার গল্প।’
তিশার পর একে একে যোগ দেন আরও অনেকে। অভিনেত্রী রুনা খান প্রকাশ করেন ‘২৪’; শবনম ফারিয়া জানান ‘১০০০’; প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ‘৩’; মৌসুমী হামিদ ‘৭২’; সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল ও আশনা হাবিব ভাবনা পোস্ট করেন ‘৯’ এবং ‘৯৯+’। সংখ্যাগুলো ভয়াবহ হলেও বাস্তবতারই প্রতিচ্ছবি। নারীরা প্রতিদিন অনলাইনে কী ভয়াবহ অপমান, কটূক্তি ও মানসিক নির্যাতনের মধ্যে থাকেন সেটিই সামনে আনছেন তারা।
রুনা খান তার হাতের তালুতে লিখেছেন ‘২৪’। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানি নিয়ে বলেন, ‘তারকা তো বটেই, সাধারণ নারীও প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় অগণিত হয়রানির শিকার হন। গত দশ বছরে সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের হাতে যত দ্রুত পৌঁছেছে, তার ব্যবহারবিধি শেখেনি অনেকেই।’
গালে ৯৯+ লিখে ভাবনা ক্যাপশনে নারীদের উৎসাহিত করতে লিখেছেন, ‘তোমার নম্বরের গল্প বলো, আরো জোরে আওয়াজ তোলো’।
তিনি আরও জানান, বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর নারীদের অনলাইন পরিবেশ আরও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিকভাবেও চলমান ডিজিটাল সহিংসতা বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ আন্দোলন বাংলাদেশে ১৬ দিনব্যাপী চলবে। তারকারা চাইছেন, নিজেদের অভিজ্ঞতা সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করে আরও বড় করে তুলতে সমাজের ভেতরকার সমস্যাকে।
সবার উদ্দেশে আহ্বান একটাই চুপ না থেকে সংখ্যাই হোক প্রতিবাদের ভাষা।

২০ নভেম্বর, ২০২৫ ১৬:০২
সেদিন ছিল বুধবার। ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর। সেদিন ধানমন্ডিতে সঞ্জীবদার সাথে আমার শেষ দেখা হয়। ধানমন্ডি বত্রিশ নাম্বারে আমরা তখন নিয়মিত আড্ডা দেই। আমরা তিন বন্ধু অর্কিড প্লাজায় মোবাইল সেটের দাম পরখ করতে গিয়েছিলাম। অর্কিড প্লাজা থেকে বের হয়ে আমরা মিরপুর রোড ধরে হেঁটে হেঁটে বত্রিশ নাম্বারের দিকে যাচ্ছিলাম।
সোবহানবাগ মসজিদের সামনে থেকে আসার সময় উল্টোপাশে ডেন্টাল কলেজের গেটে সঞ্জীবদা আমাদের আসতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন! আমরা রাস্তা ক্রোস করে এপার এসে সঞ্জীবদার সাথে যোগ দিলাম। তারপর হেঁটে হেঁটে নিউ মডেল কলেজের সামনে এসে আমরা চা খেলাম। তারপর সঞ্জীবদা রিক্সা নিয়ে পান্থপথ ধরে চলে গেলেন। আর আমরা রাস্তা ক্রস করে বত্রিশ নাম্বারে গিয়ে ধানমন্ডি নদীর পারে রেগুলার আড্ডায় যোগ দিলাম।
পরদিন ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে আঘাত হানলো স্মরণকালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল একেবারে লণ্ডভণ্ড। ১৭ ও ১৮ নভেম্বর আমি প্রচণ্ড ব্যস্ত ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সিডর এলাকায় গবেষণার কাজে ইউএন হ্যাবিট্যাট টিমের সাথে আমাকে যেতে হবে সেখানে। ধানমন্ডিতে প্রফেসর নজরুল ইসলাম স্যারের সেন্টার ফর আরবান স্ট্যাডিজ (সিইউএস) অফিস এবং আগারগাঁয়ে আইডিবি ভবনে ইউএন অফিস, এই দুই জায়গায় আমার দিনভর দৌড়ঝাঁপ।
১৯ নভেম্বর রাতে আমাদের টিম বরিশাল রওনা হবো। আমার সাথে যাবেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে ইউএন হ্যাবিট্যাটের প্রতিনিধি মারিকো সাতো। মারিকো রাত বারোটার পর আমাকে পিক করবেন। তাই বরিশাল যাবার আগে সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
১৯ নভেম্বর ২০০৭, সোমবার। সন্ধ্যায় ধানমন্ডি লেক তীরের আমাদের আড্ডায় শামীম ভাইয়ের (ভোরের কাগজের শামীম আহমেদ) মোবাইলে একটা ফোন আসলো। শামীম ভাই ফোন রেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। শামীম ভাই ফোন রেখে জানালেন সঞ্জীবদা আর নেই! জলজ্যান্ত তাগড়া মানুষটা মাত্র কয়দিনের মাথায় নাই হয়ে গেল! আমরা তখনো কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে সঞ্জীবদা নাই! রাত বাড়ার সাথে সাথে সব ঘটনা রাষ্ট্র হয়ে গেল!
রাত ১১টা নাগাদ আমি ধানমন্ডি থেকে কাঁঠালবাগানের বাসায় চলে আসি। তারপর লাগেজসহ ফয়সলের সাথে ইস্কাটনে মামুনের বাসায় যাই। মালিবাগ থেকে মারিকো আমাকে পিক করবেন। তাই একটু এগিয়ে থাকা। মারিকো ফোন করে জানালেন রাত তিনটায় আমাকে পিক করবেন। রাত দুইটায় আমি আর ফয়সল মালিবাগের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। রাত সাড়ে তিনটায় মারিকো আমাকে পিক করেন।
মারিকোর সাথে কুশল বিনিময়ের পর বরিশাল যেতে যেতে গোটা পথ আমার মাথায় ছিলেন কেবল সঞ্জীবদা। সঞ্জীবদার সাথে আমার কত রকম স্মৃতি। সব ফ্ল্যাশব্যাকের মত একটার পর একটা মনে পড়ছিল। মাঝে মাঝে মারিকোর প্রশ্নে আমি বাস্তবতায় ফিরে আসছিলাম। আবার সঞ্জীবদার সাথে স্মৃতিগুলোতে ফিরে যাচ্ছিলাম।
সঞ্জীবদার সাথে আমার সম্পর্ক ১৯৯৬ সাল থেকে। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রায় এগারো বছরের সম্পর্ক। সঞ্জীবদার মাধ্যমেই ভো্রের কাগজে আমি প্রথম লিখতে শুরু করি। ভোরের কাগজের সাপ্লিমেন্ট 'মেলা' তখন তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয়। মেলা সম্পাদনা করতেন সঞ্জীবদা।
আমি তখন থাকি এলিফ্যান্ট রোডে। কাঁটাবন ঢালে। সংবাদের সাংবাদিক অভিদা, অভিদার এসিসট্যান্ট সুমন, আমার বন্ধু কমল আর আমি থাকি একসাথে। অভিদা আমাকে সংবাদে লেখার জন্য প্রায়ই অনুরোধ করতেন। কিন্তু আলসেমিতে আমার লেখা হতো না। পরে অভিদা বললেন, আপনার পছন্দ হবে এমন কারো কাছে পাঠাই। প্লিজ না করবেন না। একবার অন্তত দেখা করুন। তারপর সিদ্ধান্ত আপনি নিয়েন।
তারপর অভিদা একটা কাগজে লিখলেন, সঞ্জীবদা, রেজা ভাই খুব ভালো লেখেন। ছেলেটিকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন। অভি।
এক লাইনের সেই চিঠি নিয়ে আমি বাংলামটর ভোরের কাগজের অফিসে যাই। চারতলায় গিয়ে এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করি সঞ্জীবদা কোথায় বসেন। শামীম ভাই পোস্টিং রুমে ডেকে নিয়ে খুব খাতির করে জিজ্ঞেস করলেন, সঞ্জীবদার কাছে আসছেন। আসেন আমার সাথে। বলেন কাহিনী কী? আমি অভিদার চিঠিটা শামীম ভাইকে দেখালাম।
শামীম ভাই লাল চা খাওয়ালেন। আর বললেন, সঞ্জীবদার পাল্লায় একবার পড়লে আর কিন্তু রক্ষা নাই। সাহস আছে তো? দেখেন দাদা কী বলেন! কিন্তু ভুলেও চিঠি দেখায়েন না! শামীম ভাইয়ের কথায় আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। আমার দশা দেখে শামীম ভাই বললেন, ঘাবড়ানোর কিছু নাই। ওই যে সঞ্জীবদা। দাদার সাথে খাতির হবার পর এই অভাগারে আবার ভুইলা যাইয়েন না। যাবার সময় দেখা কইরা যাইয়েন।
সঞ্জীবদার টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। টেবিলের চারপাশে একদল ভক্ত নিয়ে সঞ্জীবদা ভীষণ ব্যস্ত। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কার কাছে আসছেন? বললাম আপনার কাছে। সঞ্জীবদার আশেপাশে কোনো চেয়ার খালি নাই। সঞ্জীবদার বামপাশে পুরাতন পেপারের একটা ঢিবি। বললেন, তুই এখানে বয়।
প্রথম বাক্যে 'আপনি' আর দ্বিতীয় বাক্যে 'তুই' সম্বোধন! জীবনে এই প্রথম আমার সঙ্গে এমনটি ঘটলো। আমি যা বোঝার বুঝে গেলাম। পকেট থেকে অভিদার লেখা একলাইনের চিঠি বের করার আর প্রয়োজন হলো না। সঞ্জীবদার আড্ডা আর শেষ হয় না। কাউকে নতুন কী লিখবে তা নিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন। কাউকে আগের কোনো লেখা নিয়ে আচ্ছামত ঝাড়ি দিচ্ছেন। আবার পরক্ষণেই হোহো হোহো করে হেসে উঠছেন। আবার সুর করে গানের লাইন আওরাচ্ছেন।
এভাবে ঘণ্টাখানেক পর টেবিলের ভিড়টা কমলো। তারপর সঞ্জীবদা সরাসরি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী চাই? বললাম, আপনার পাতায় লিখতে চাই। কী লিখবি? আপনি যা এসাইন করবেন? বাপরে বাপ! সাহস আছে ছেলের! কাল সকালে পুরান ঢাকায় গিয়ে তোর পছন্দের যে কোনো একটা বিষয়ের ওপর লেখা দিবি। ঠিক আছে? আমি মাথা নাড়ালাম।
সঞ্জীবদা আমাকে বললেন, চল আমার সাথে। আমাকে নিয়ে সোজা অ্যাকাউন্টস সেকশনে। আমাকে দেখিয়ে বললেন, ওর একটা লেখার বিল আছে। ৬০০ টাকা। অ্যাকাউন্টস সেকশন ৬০০ টাকা দিয়ে দিল। দাদা আমাকে ইসারা করলো তাকে ফলো করতে।
অফিসের নিচে এসে সঞ্জীবদা বললেন, পুরান ঢাকায় যাওয়া আসার রিক্সা ভাড়া আর লাঞ্চের জন্য এই ধর ২০০। আর তোর ৪০০ টাকা আমার কাছে জমা থাকলো। তোর লেখার বিলটা অফিস থেকে অ্যাডভান্স নিলাম আরকি। কাল তুই লেখা জমা দিয়ে বাকি ৪০০ নিয়ে নিস। ঠিক আছে? আমি মাথা দুলিয়ে সায় দিলাম।
সঞ্জীবদা বললেন, এখন কী করবি? বললাম কোনো কাজ নাই, বাসায় যাব। দাদা বললেন, চল আমার সাথে। একটা রিকশা নিয়ে আমরা ইস্টার্ন প্লাজার পাশে শ্যালেতে গিয়ে আলো আঁধারীতে বসলাম। সঞ্জীবদা বুঝিয়ে দিলেন কীভাবে কী কী বিষয় জানতে হবে। আর কীভাবে লেখা শুরু আর শেষ করব। প্রথম দিনের স্বল্প পরিচয় থেকেই আমাদের গ্লাস ঠোকাঠুকি। তারপর সঞ্জীবদার পাতায় আমি অনেক লিখেছি। প্রায় সময় দাদা অ্যাডভান্স বিল আদায় করে দিতেন।
পরে সঞ্জীবদা যখন দৈনিক যায় যায় দিনে যোগ দেন, তখন তেজগাঁও যাযাদি অফিসে যেতাম ভালো ভালো সিনেমা দেখতে। সঞ্জীবদার কল্যাণে যাযাদি অফিসে প্রচুর সিনেমা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। মাঝে মাঝে সঞ্জীবদা ফোন করে ডাকতেন। দুপুর বারোটার আগে গেলে একটা সিনেমা বেশি দেখা যেত। তখন সঞ্জীবদা যাযাদি অফিসে আমাকে লাঞ্চ করাতেন। তারপর বিকালে আরেক দফা সিনেমা দেখতাম। ফেরার সময় দাদা জোর করে রিকশা ভাড়া দিয়ে দিতেন।
সঞ্জীবদা সবসময় ভেতরের ইচ্ছা শক্তিটাকে জাগিয়ে দিতেন। সবসময় বলতেন চেষ্টা কর, পারবি। প্রাণশক্তি বাড়িয়ে দেবার মত এমন বড় মনের বড়ভাই-বন্ধু আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি। সঞ্জীবদা ছিলেন বিরল গোত্রের এক ক্রিয়েটিভ মানুষ। সবসময় আমাদের মত কমবয়সীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দাদা পছন্দ করতেন।
বয়সে সঞ্জীবদা আমার চেয়ে পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। আমাকে ডাকতেন তুই বলে আর আমি ডাকতাম তুমি। সঞ্জীবদার সাথে দেখা হলে কখন যে এক-দুই ঘণ্টা চলে যেত একদম টেরই পেতাম না। সঞ্জীবদার সাথে আড্ডায় আমি অনেক কিছু শিখতাম। সঞ্জীবদা প্রায়ই নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা বলতেন। নতুন নতুন আইডিয়া দিতেন। আর আমরা হাভাতের মত সেসব গিলতাম।
অফিসের বাইরে সঞ্জীবদার আলো-আঁধারী আড্ডায় যারা নিয়মিত তাদের মধ্যে শামীম ভাই ছিলেন অন্যতম। আহসান কবির মানে আমাদের টাকলা কবির ভাই, অমিতদা, পুলকদা আরো কতজনের সাথে আমার পরিচয় সঞ্জীবদার মাধ্যমে। সঞ্জীবদা লেখার জন্য আমার ভেতরে যে নেশাটি জাগিয়ে দিলেন, সেটি তারপর থেকে আর থামেনি। লেখালেখি একটা চর্চার ব্যাপার। সেই চর্চা করার বিষয়টি সঞ্জীবদা জাগিয়ে দিয়েছেন। ফলে সঞ্জীবদা আমার একজন গুরু।
প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর আসলে সঞ্জীবদাকে খুব মনে পড়ে। মনে হয় রাস্তায় বের হলেই হয়তো কোথাও থেকে দাদা ডাক দিবেন। সন্ধ্যার পর চা খেতে দেখলে অট্টহাসি দিয়ে দাদা বলতেন, তোরা পুরুষ জাতির কলংক! তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না! আহা কতদিন সেই আদুরে কণ্ঠের ঠাট্টা শুনি না। কতদিন গলির মুখে দাদাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি না। কতদিন শুনি না সেই মায়ার ডাক, চল আমার সাথে।
তোমাকে খুব মিস করি দাদা। লাভ ইউ সঞ্জীবদা।
লেখক: রেজা ঘটক, গল্পকার ও চলচ্চিত্রকার।
সেদিন ছিল বুধবার। ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর। সেদিন ধানমন্ডিতে সঞ্জীবদার সাথে আমার শেষ দেখা হয়। ধানমন্ডি বত্রিশ নাম্বারে আমরা তখন নিয়মিত আড্ডা দেই। আমরা তিন বন্ধু অর্কিড প্লাজায় মোবাইল সেটের দাম পরখ করতে গিয়েছিলাম। অর্কিড প্লাজা থেকে বের হয়ে আমরা মিরপুর রোড ধরে হেঁটে হেঁটে বত্রিশ নাম্বারের দিকে যাচ্ছিলাম।
সোবহানবাগ মসজিদের সামনে থেকে আসার সময় উল্টোপাশে ডেন্টাল কলেজের গেটে সঞ্জীবদা আমাদের আসতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন! আমরা রাস্তা ক্রোস করে এপার এসে সঞ্জীবদার সাথে যোগ দিলাম। তারপর হেঁটে হেঁটে নিউ মডেল কলেজের সামনে এসে আমরা চা খেলাম। তারপর সঞ্জীবদা রিক্সা নিয়ে পান্থপথ ধরে চলে গেলেন। আর আমরা রাস্তা ক্রস করে বত্রিশ নাম্বারে গিয়ে ধানমন্ডি নদীর পারে রেগুলার আড্ডায় যোগ দিলাম।
পরদিন ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে আঘাত হানলো স্মরণকালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল একেবারে লণ্ডভণ্ড। ১৭ ও ১৮ নভেম্বর আমি প্রচণ্ড ব্যস্ত ছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সিডর এলাকায় গবেষণার কাজে ইউএন হ্যাবিট্যাট টিমের সাথে আমাকে যেতে হবে সেখানে। ধানমন্ডিতে প্রফেসর নজরুল ইসলাম স্যারের সেন্টার ফর আরবান স্ট্যাডিজ (সিইউএস) অফিস এবং আগারগাঁয়ে আইডিবি ভবনে ইউএন অফিস, এই দুই জায়গায় আমার দিনভর দৌড়ঝাঁপ।
১৯ নভেম্বর রাতে আমাদের টিম বরিশাল রওনা হবো। আমার সাথে যাবেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে ইউএন হ্যাবিট্যাটের প্রতিনিধি মারিকো সাতো। মারিকো রাত বারোটার পর আমাকে পিক করবেন। তাই বরিশাল যাবার আগে সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
১৯ নভেম্বর ২০০৭, সোমবার। সন্ধ্যায় ধানমন্ডি লেক তীরের আমাদের আড্ডায় শামীম ভাইয়ের (ভোরের কাগজের শামীম আহমেদ) মোবাইলে একটা ফোন আসলো। শামীম ভাই ফোন রেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। শামীম ভাই ফোন রেখে জানালেন সঞ্জীবদা আর নেই! জলজ্যান্ত তাগড়া মানুষটা মাত্র কয়দিনের মাথায় নাই হয়ে গেল! আমরা তখনো কেউ বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে সঞ্জীবদা নাই! রাত বাড়ার সাথে সাথে সব ঘটনা রাষ্ট্র হয়ে গেল!
রাত ১১টা নাগাদ আমি ধানমন্ডি থেকে কাঁঠালবাগানের বাসায় চলে আসি। তারপর লাগেজসহ ফয়সলের সাথে ইস্কাটনে মামুনের বাসায় যাই। মালিবাগ থেকে মারিকো আমাকে পিক করবেন। তাই একটু এগিয়ে থাকা। মারিকো ফোন করে জানালেন রাত তিনটায় আমাকে পিক করবেন। রাত দুইটায় আমি আর ফয়সল মালিবাগের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। রাত সাড়ে তিনটায় মারিকো আমাকে পিক করেন।
মারিকোর সাথে কুশল বিনিময়ের পর বরিশাল যেতে যেতে গোটা পথ আমার মাথায় ছিলেন কেবল সঞ্জীবদা। সঞ্জীবদার সাথে আমার কত রকম স্মৃতি। সব ফ্ল্যাশব্যাকের মত একটার পর একটা মনে পড়ছিল। মাঝে মাঝে মারিকোর প্রশ্নে আমি বাস্তবতায় ফিরে আসছিলাম। আবার সঞ্জীবদার সাথে স্মৃতিগুলোতে ফিরে যাচ্ছিলাম।
সঞ্জীবদার সাথে আমার সম্পর্ক ১৯৯৬ সাল থেকে। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রায় এগারো বছরের সম্পর্ক। সঞ্জীবদার মাধ্যমেই ভো্রের কাগজে আমি প্রথম লিখতে শুরু করি। ভোরের কাগজের সাপ্লিমেন্ট 'মেলা' তখন তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয়। মেলা সম্পাদনা করতেন সঞ্জীবদা।
আমি তখন থাকি এলিফ্যান্ট রোডে। কাঁটাবন ঢালে। সংবাদের সাংবাদিক অভিদা, অভিদার এসিসট্যান্ট সুমন, আমার বন্ধু কমল আর আমি থাকি একসাথে। অভিদা আমাকে সংবাদে লেখার জন্য প্রায়ই অনুরোধ করতেন। কিন্তু আলসেমিতে আমার লেখা হতো না। পরে অভিদা বললেন, আপনার পছন্দ হবে এমন কারো কাছে পাঠাই। প্লিজ না করবেন না। একবার অন্তত দেখা করুন। তারপর সিদ্ধান্ত আপনি নিয়েন।
তারপর অভিদা একটা কাগজে লিখলেন, সঞ্জীবদা, রেজা ভাই খুব ভালো লেখেন। ছেলেটিকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন। অভি।
এক লাইনের সেই চিঠি নিয়ে আমি বাংলামটর ভোরের কাগজের অফিসে যাই। চারতলায় গিয়ে এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করি সঞ্জীবদা কোথায় বসেন। শামীম ভাই পোস্টিং রুমে ডেকে নিয়ে খুব খাতির করে জিজ্ঞেস করলেন, সঞ্জীবদার কাছে আসছেন। আসেন আমার সাথে। বলেন কাহিনী কী? আমি অভিদার চিঠিটা শামীম ভাইকে দেখালাম।
শামীম ভাই লাল চা খাওয়ালেন। আর বললেন, সঞ্জীবদার পাল্লায় একবার পড়লে আর কিন্তু রক্ষা নাই। সাহস আছে তো? দেখেন দাদা কী বলেন! কিন্তু ভুলেও চিঠি দেখায়েন না! শামীম ভাইয়ের কথায় আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। আমার দশা দেখে শামীম ভাই বললেন, ঘাবড়ানোর কিছু নাই। ওই যে সঞ্জীবদা। দাদার সাথে খাতির হবার পর এই অভাগারে আবার ভুইলা যাইয়েন না। যাবার সময় দেখা কইরা যাইয়েন।
সঞ্জীবদার টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। টেবিলের চারপাশে একদল ভক্ত নিয়ে সঞ্জীবদা ভীষণ ব্যস্ত। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কার কাছে আসছেন? বললাম আপনার কাছে। সঞ্জীবদার আশেপাশে কোনো চেয়ার খালি নাই। সঞ্জীবদার বামপাশে পুরাতন পেপারের একটা ঢিবি। বললেন, তুই এখানে বয়।
প্রথম বাক্যে 'আপনি' আর দ্বিতীয় বাক্যে 'তুই' সম্বোধন! জীবনে এই প্রথম আমার সঙ্গে এমনটি ঘটলো। আমি যা বোঝার বুঝে গেলাম। পকেট থেকে অভিদার লেখা একলাইনের চিঠি বের করার আর প্রয়োজন হলো না। সঞ্জীবদার আড্ডা আর শেষ হয় না। কাউকে নতুন কী লিখবে তা নিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন। কাউকে আগের কোনো লেখা নিয়ে আচ্ছামত ঝাড়ি দিচ্ছেন। আবার পরক্ষণেই হোহো হোহো করে হেসে উঠছেন। আবার সুর করে গানের লাইন আওরাচ্ছেন।
এভাবে ঘণ্টাখানেক পর টেবিলের ভিড়টা কমলো। তারপর সঞ্জীবদা সরাসরি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী চাই? বললাম, আপনার পাতায় লিখতে চাই। কী লিখবি? আপনি যা এসাইন করবেন? বাপরে বাপ! সাহস আছে ছেলের! কাল সকালে পুরান ঢাকায় গিয়ে তোর পছন্দের যে কোনো একটা বিষয়ের ওপর লেখা দিবি। ঠিক আছে? আমি মাথা নাড়ালাম।
সঞ্জীবদা আমাকে বললেন, চল আমার সাথে। আমাকে নিয়ে সোজা অ্যাকাউন্টস সেকশনে। আমাকে দেখিয়ে বললেন, ওর একটা লেখার বিল আছে। ৬০০ টাকা। অ্যাকাউন্টস সেকশন ৬০০ টাকা দিয়ে দিল। দাদা আমাকে ইসারা করলো তাকে ফলো করতে।
অফিসের নিচে এসে সঞ্জীবদা বললেন, পুরান ঢাকায় যাওয়া আসার রিক্সা ভাড়া আর লাঞ্চের জন্য এই ধর ২০০। আর তোর ৪০০ টাকা আমার কাছে জমা থাকলো। তোর লেখার বিলটা অফিস থেকে অ্যাডভান্স নিলাম আরকি। কাল তুই লেখা জমা দিয়ে বাকি ৪০০ নিয়ে নিস। ঠিক আছে? আমি মাথা দুলিয়ে সায় দিলাম।
সঞ্জীবদা বললেন, এখন কী করবি? বললাম কোনো কাজ নাই, বাসায় যাব। দাদা বললেন, চল আমার সাথে। একটা রিকশা নিয়ে আমরা ইস্টার্ন প্লাজার পাশে শ্যালেতে গিয়ে আলো আঁধারীতে বসলাম। সঞ্জীবদা বুঝিয়ে দিলেন কীভাবে কী কী বিষয় জানতে হবে। আর কীভাবে লেখা শুরু আর শেষ করব। প্রথম দিনের স্বল্প পরিচয় থেকেই আমাদের গ্লাস ঠোকাঠুকি। তারপর সঞ্জীবদার পাতায় আমি অনেক লিখেছি। প্রায় সময় দাদা অ্যাডভান্স বিল আদায় করে দিতেন।
পরে সঞ্জীবদা যখন দৈনিক যায় যায় দিনে যোগ দেন, তখন তেজগাঁও যাযাদি অফিসে যেতাম ভালো ভালো সিনেমা দেখতে। সঞ্জীবদার কল্যাণে যাযাদি অফিসে প্রচুর সিনেমা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। মাঝে মাঝে সঞ্জীবদা ফোন করে ডাকতেন। দুপুর বারোটার আগে গেলে একটা সিনেমা বেশি দেখা যেত। তখন সঞ্জীবদা যাযাদি অফিসে আমাকে লাঞ্চ করাতেন। তারপর বিকালে আরেক দফা সিনেমা দেখতাম। ফেরার সময় দাদা জোর করে রিকশা ভাড়া দিয়ে দিতেন।
সঞ্জীবদা সবসময় ভেতরের ইচ্ছা শক্তিটাকে জাগিয়ে দিতেন। সবসময় বলতেন চেষ্টা কর, পারবি। প্রাণশক্তি বাড়িয়ে দেবার মত এমন বড় মনের বড়ভাই-বন্ধু আমি জীবনে খুব কম পেয়েছি। সঞ্জীবদা ছিলেন বিরল গোত্রের এক ক্রিয়েটিভ মানুষ। সবসময় আমাদের মত কমবয়সীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দাদা পছন্দ করতেন।
বয়সে সঞ্জীবদা আমার চেয়ে পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। আমাকে ডাকতেন তুই বলে আর আমি ডাকতাম তুমি। সঞ্জীবদার সাথে দেখা হলে কখন যে এক-দুই ঘণ্টা চলে যেত একদম টেরই পেতাম না। সঞ্জীবদার সাথে আড্ডায় আমি অনেক কিছু শিখতাম। সঞ্জীবদা প্রায়ই নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা বলতেন। নতুন নতুন আইডিয়া দিতেন। আর আমরা হাভাতের মত সেসব গিলতাম।
অফিসের বাইরে সঞ্জীবদার আলো-আঁধারী আড্ডায় যারা নিয়মিত তাদের মধ্যে শামীম ভাই ছিলেন অন্যতম। আহসান কবির মানে আমাদের টাকলা কবির ভাই, অমিতদা, পুলকদা আরো কতজনের সাথে আমার পরিচয় সঞ্জীবদার মাধ্যমে। সঞ্জীবদা লেখার জন্য আমার ভেতরে যে নেশাটি জাগিয়ে দিলেন, সেটি তারপর থেকে আর থামেনি। লেখালেখি একটা চর্চার ব্যাপার। সেই চর্চা করার বিষয়টি সঞ্জীবদা জাগিয়ে দিয়েছেন। ফলে সঞ্জীবদা আমার একজন গুরু।
প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর আসলে সঞ্জীবদাকে খুব মনে পড়ে। মনে হয় রাস্তায় বের হলেই হয়তো কোথাও থেকে দাদা ডাক দিবেন। সন্ধ্যার পর চা খেতে দেখলে অট্টহাসি দিয়ে দাদা বলতেন, তোরা পুরুষ জাতির কলংক! তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না! আহা কতদিন সেই আদুরে কণ্ঠের ঠাট্টা শুনি না। কতদিন গলির মুখে দাদাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি না। কতদিন শুনি না সেই মায়ার ডাক, চল আমার সাথে।
তোমাকে খুব মিস করি দাদা। লাভ ইউ সঞ্জীবদা।
লেখক: রেজা ঘটক, গল্পকার ও চলচ্চিত্রকার।

২০ নভেম্বর, ২০২৫ ১৩:২৯
বলিউডের ভাইজান সালমান খানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত এবং কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ছোট ভাই আনমোল বিষ্ণোইকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতে প্রত্যার্পণের পরপরই বুধবার (১৯ নভেম্বর) দিল্লি বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)।
গ্রেপ্তারের পর আনমোলকে দিল্লির একটি আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) পাঠানোর নির্দেশ দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক এই গ্যাংস্টারকে ধরতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তৎপর ছিল পুলিশ।
চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় তাকে আটক করা হয়েছিল। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার তাকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। আনমোল বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন থানায় অন্তত ৩১টি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো- জনপ্রিয় পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যাকাণ্ড এবং সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকির খুনের ঘটনা।
এসব হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বড় ভাই লরেন্স বিষ্ণোই কারাগারে যাওয়ার পর গ্যাংয়ের হাল ধরেন আনমোল। ২০২২ সালে ভুয়া পাসপোর্টে নেপাল হয়ে প্রথমে দুবাই এবং পরে কেনিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। সেখান থেকেই গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিনোদন জগতে আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠা এই গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে গত বছরের এপ্রিলে সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাসভবন ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট’-এর বাইরে গুলিবর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই তাকে খুঁজছিল মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও দিল্লি পুলিশ।
বলিউডের ভাইজান সালমান খানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত এবং কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ছোট ভাই আনমোল বিষ্ণোইকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতে প্রত্যার্পণের পরপরই বুধবার (১৯ নভেম্বর) দিল্লি বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)।
গ্রেপ্তারের পর আনমোলকে দিল্লির একটি আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) পাঠানোর নির্দেশ দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক এই গ্যাংস্টারকে ধরতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তৎপর ছিল পুলিশ।
চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় তাকে আটক করা হয়েছিল। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বুধবার তাকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়। আনমোল বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন থানায় অন্তত ৩১টি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো- জনপ্রিয় পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যাকাণ্ড এবং সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকির খুনের ঘটনা।
এসব হাইপ্রোফাইল হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বড় ভাই লরেন্স বিষ্ণোই কারাগারে যাওয়ার পর গ্যাংয়ের হাল ধরেন আনমোল। ২০২২ সালে ভুয়া পাসপোর্টে নেপাল হয়ে প্রথমে দুবাই এবং পরে কেনিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। সেখান থেকেই গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিনোদন জগতে আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠা এই গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে গত বছরের এপ্রিলে সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাসভবন ‘গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট’-এর বাইরে গুলিবর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকেই তাকে খুঁজছিল মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও দিল্লি পুলিশ।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.