
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:২৫
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু ও মেয়ে এস আরমিন রাখীর ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। এসব হিসাবে বর্তমানে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫৬ টাকা রয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য জানান। দুদকের পক্ষে এ আবেদন করেন উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান।
আবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানের সময় দেখা গেছে যে অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তি জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু এবং তাদের কন্যা এস. আমরীন রাখীর নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে মোট ৩২ কোটি ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭.৫৫ কোটি টাকা জমা এবং ১৪.৬২ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
তদন্তে ধারণা পাওয়া যায়, এই টাকার উৎস বৈধ নয় এবং দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থকে লুকাতে বা আড়াল করতে এ লেনদেন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং অপরাধের ইঙ্গিত দেয়।
তাছাড়া তাদের এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের টাকা অন্যত্র স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা রয়েছে বলে দেখা গেছে। এ কারণে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব ব্যাংক হিসাবের অর্থ অবরুদ্ধ (Freeze) করা প্রয়োজন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু ও মেয়ে এস আরমিন রাখীর ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। এসব হিসাবে বর্তমানে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫৬ টাকা রয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য জানান। দুদকের পক্ষে এ আবেদন করেন উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান।
আবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানের সময় দেখা গেছে যে অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তি জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু এবং তাদের কন্যা এস. আমরীন রাখীর নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে মোট ৩২ কোটি ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭.৫৫ কোটি টাকা জমা এবং ১৪.৬২ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
তদন্তে ধারণা পাওয়া যায়, এই টাকার উৎস বৈধ নয় এবং দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থকে লুকাতে বা আড়াল করতে এ লেনদেন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং অপরাধের ইঙ্গিত দেয়।
তাছাড়া তাদের এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের টাকা অন্যত্র স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা রয়েছে বলে দেখা গেছে। এ কারণে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব ব্যাংক হিসাবের অর্থ অবরুদ্ধ (Freeze) করা প্রয়োজন।

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৫৬

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৪২
ঘুমন্ত পুলিশের সঙ্গে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার সেলফি, ক্যাপশনে ‘ঘুম ভালোবাসিরে’
‘ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’ কথাগুলো পটিয়া থানার হেফাজতে থাকা গ্রেপ্তার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের (২১)। গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামের পটিয়া থানা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ পোস্ট করেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানায় আসামির ফেসবুকে সক্রিয় থাকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গ্রেপ্তার মহিম পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।
তবে গ্রেপ্তারের পরও মহিমকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ হেফাজতে থাকার পরও তাকে ওই সময় ফেসবুকে দিব্যি পোস্ট দিতে দেখা যায়। এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন। জয় বাংলা।’ পরে থানা-পুলিশের অফিসকক্ষে হাতকড়া পরা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এইদিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’
এছাড়া ডিউটিরত অবস্থায় ঘুমন্ত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন মহিম। ছবিটির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ঘুম ভালোবাসিরেএএএ...। জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’
আরেকটি ছবিতে তাকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তুহিনের সঙ্গে ভিডিওকলে যোগাযোগ করতে দেখা যায়। ওই ছবির ক্যাপশনে তুহিন লেখেন— ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপসহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারকৃত পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক কালবেলাকে বলেন, ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নেতা মহিমকে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে রাখা হয়। কিন্তু সেখানে সে পুলিশের অগোচরে তার মোবাইলটি নিজের কাছে লুকিয়ে রাখে। পরে সুযোগ বুঝে সেলফি তুলে ছেড়ে দেয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৮

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
বগুড়ায় একটি হিমাগারের পলাতক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে ঋণ পুনঃতফশিলের চেষ্টার অভিযোগে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বগুড়ার শেরপুরের খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মিল্লাত হোসেন সম্প্রতি বগুড়ার অবকাশকালীন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা করেন।
বিচারক সিনিয়র স্পেশাল জজ শাহজাহান কবির মামলাটি আমলে নিয়ে নথিপত্র ও প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়কে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওহাব ও দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাহফুজ ইকবাল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান ড. এম জুবায়দুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান, প্রধান কার্যালয়ের ইনচার্জ মাহমুদ হোসেন খান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সৈয়দ উল্লাহ, বগুড়ার জোনাল শাখার ইনচার্জ সিকদার শাহাবুদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (বিআরপিডি) ও সদস্য সচিব, নীতি সহায়তা প্রদান বাছাই কমিটি বায়েজিদ সরকার এবং বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক বাজারে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না (সভাপতি নাগরিক ঐক্য)।
মামলায় কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম নাজমুল কাদির শাহজাহান চৌধুরী ও পরিচালক তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজুসহ পাঁচজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা জালিয়াতি ও প্রতারণাকারী এবং আইন পরিপন্থি কাজের সঙ্গে জড়িত। তার সঙ্গে ২নং সাক্ষী এবিএম নাজমুল কাদির চৌধুরী ও ৩নং সাক্ষী ইসমত আরা লাইজুর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিনামা সম্পাদক হয়। চুক্তিনামা অনুযায়ী এরা দুজন ও ৭নং আসামি মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করে তা বিক্রির জন্য চুক্তি হয়। চুক্তির দিন সাক্ষী ১০ কোটি টাকা বুঝিয়ে দেন এবং অবশিষ্ট ১৫ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধের সময় পরিশোধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়েও সম্মতি প্রকাশ করেন।
পরে দেখা যায়, সাক্ষী এবিএম নাজমুল১ কাদির শাহজাহান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজু গত বছরের ১৯ আগস্ট আমেরিকা চলে যান। পলাতক অবস্থায় তাদের অনুপস্থিতিতে আসামি মাহমুদুর রহমান মান্না ওই দম্পতির স্বাক্ষর জাল করে ১ ডিসেম্বর বোর্ড সভার ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করেন। যেখানে ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আসামিরা এই জাল রেজুলেশনকে বৈধ রূপ দিয়ে তা বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকে দাখিল করে ঋণ পুনঃতফশিলের আবেদন করেন। পরে তারা পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে মিথ্যা কাগজপত্রের মাধ্যমে ঋণ পুনঃতফশিলের অনুমোদন আদায়ের চেষ্টা করেন।
গত ১১ ডিসেম্বর দাখিল করা ওই মামলায় আরও বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বগুড়ার বড়গোলা শাখা থেকে খেলাপি ৩৮ কোটি চার লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য আসামিদের ‘কল ব্যাক নোটিশ’ দেওয়া হয়।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। এরপরও আসামিরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে পুনঃতফশিলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওহাব বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিবগঞ্জের কিচক বাজারে আফাকু কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাহজাহান চৌধুরী, তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজুকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এরপরও তাদের উপস্থিত দেখিয়ে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিলের চেষ্টা করায় এ মামলা হয়েছে।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাহফুজ ইকবাল জানান, আদালতের আদেশের কপি বুধবার হাতে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার আদেশের অনুলিপিসহ নথিপত্র দুদক ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মামলার অন্যতম আসামি নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বগুড়ায় একটি হিমাগারের পলাতক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে ঋণ পুনঃতফশিলের চেষ্টার অভিযোগে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বগুড়ার শেরপুরের খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মিল্লাত হোসেন সম্প্রতি বগুড়ার অবকাশকালীন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা করেন।
বিচারক সিনিয়র স্পেশাল জজ শাহজাহান কবির মামলাটি আমলে নিয়ে নথিপত্র ও প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়কে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওহাব ও দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাহফুজ ইকবাল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি প্রধান কার্যালয়ের চেয়ারম্যান ড. এম জুবায়দুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান, প্রধান কার্যালয়ের ইনচার্জ মাহমুদ হোসেন খান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সৈয়দ উল্লাহ, বগুড়ার জোনাল শাখার ইনচার্জ সিকদার শাহাবুদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (বিআরপিডি) ও সদস্য সচিব, নীতি সহায়তা প্রদান বাছাই কমিটি বায়েজিদ সরকার এবং বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক বাজারে আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না (সভাপতি নাগরিক ঐক্য)।
মামলায় কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম নাজমুল কাদির শাহজাহান চৌধুরী ও পরিচালক তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজুসহ পাঁচজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা জালিয়াতি ও প্রতারণাকারী এবং আইন পরিপন্থি কাজের সঙ্গে জড়িত। তার সঙ্গে ২নং সাক্ষী এবিএম নাজমুল কাদির চৌধুরী ও ৩নং সাক্ষী ইসমত আরা লাইজুর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিনামা সম্পাদক হয়। চুক্তিনামা অনুযায়ী এরা দুজন ও ৭নং আসামি মাহমুদুর রহমান মান্নার প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করে তা বিক্রির জন্য চুক্তি হয়। চুক্তির দিন সাক্ষী ১০ কোটি টাকা বুঝিয়ে দেন এবং অবশিষ্ট ১৫ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধের সময় পরিশোধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়েও সম্মতি প্রকাশ করেন।
পরে দেখা যায়, সাক্ষী এবিএম নাজমুল১ কাদির শাহজাহান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজু গত বছরের ১৯ আগস্ট আমেরিকা চলে যান। পলাতক অবস্থায় তাদের অনুপস্থিতিতে আসামি মাহমুদুর রহমান মান্না ওই দম্পতির স্বাক্ষর জাল করে ১ ডিসেম্বর বোর্ড সভার ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করেন। যেখানে ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আসামিরা এই জাল রেজুলেশনকে বৈধ রূপ দিয়ে তা বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকে দাখিল করে ঋণ পুনঃতফশিলের আবেদন করেন। পরে তারা পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্ঘন করে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে মিথ্যা কাগজপত্রের মাধ্যমে ঋণ পুনঃতফশিলের অনুমোদন আদায়ের চেষ্টা করেন।
গত ১১ ডিসেম্বর দাখিল করা ওই মামলায় আরও বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বগুড়ার বড়গোলা শাখা থেকে খেলাপি ৩৮ কোটি চার লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য আসামিদের ‘কল ব্যাক নোটিশ’ দেওয়া হয়।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। এরপরও আসামিরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে পুনঃতফশিলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওহাব বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিবগঞ্জের কিচক বাজারে আফাকু কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাহজাহান চৌধুরী, তার স্ত্রী ইসমত আরা লাইজুকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এরপরও তাদের উপস্থিত দেখিয়ে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৩৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিলের চেষ্টা করায় এ মামলা হয়েছে।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাহফুজ ইকবাল জানান, আদালতের আদেশের কপি বুধবার হাতে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার আদেশের অনুলিপিসহ নথিপত্র দুদক ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মামলার অন্যতম আসামি নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘুমন্ত পুলিশের সঙ্গে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার সেলফি, ক্যাপশনে ‘ঘুম ভালোবাসিরে’
‘ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’ কথাগুলো পটিয়া থানার হেফাজতে থাকা গ্রেপ্তার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের (২১)। গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামের পটিয়া থানা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ পোস্ট করেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানায় আসামির ফেসবুকে সক্রিয় থাকা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গ্রেপ্তার মহিম পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।
তবে গ্রেপ্তারের পরও মহিমকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ হেফাজতে থাকার পরও তাকে ওই সময় ফেসবুকে দিব্যি পোস্ট দিতে দেখা যায়। এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন। জয় বাংলা।’ পরে থানা-পুলিশের অফিসকক্ষে হাতকড়া পরা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এইদিন দিন নয়, দিন আরও আছে।’
এছাড়া ডিউটিরত অবস্থায় ঘুমন্ত এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন মহিম। ছবিটির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ঘুম ভালোবাসিরেএএএ...। জীবন যেমনই হোক বিনোদন মিস করা যাবে না।’
আরেকটি ছবিতে তাকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তুহিনের সঙ্গে ভিডিওকলে যোগাযোগ করতে দেখা যায়। ওই ছবির ক্যাপশনে তুহিন লেখেন— ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপসহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারকৃত পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী মো. শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক কালবেলাকে বলেন, ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্রলীগ নেতা মহিমকে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে রাখা হয়। কিন্তু সেখানে সে পুলিশের অগোচরে তার মোবাইলটি নিজের কাছে লুকিয়ে রাখে। পরে সুযোগ বুঝে সেলফি তুলে ছেড়ে দেয়। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
বরিশালে একদিনে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজনকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অভিযোগ স্বজনদের। অপর দুজনের মধ্যে একজনের মরদেহ আবাসিক হোটেল এবং অপরজনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সাড়ে ১০টা থেকে দুপুরের মধ্যে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক, বরিশাল নগরীর এবং উজিরপুর উপজেলা থেকে পৃথকভাবে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক সাকিব হাওলাদার (১৮) পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার চরপাড়া ইউনিয়নের জসিম হাওলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। হোটেল কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কলকাঠি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম হাওলাদারের (৪৫)। তিনি নগরীর ফলপট্টি রোডের আবাসিক হোটেল পার্ক এর নাইটগার্ড ছিলেন। অপরজন আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উজিরপুর উপজেলার কচা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্ব স্ব থানার পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাটের পুল এলাকায় সাকিল হাওলাদার নামের যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
সাকিলের বাবা জসিম হাওলাদার জানান, গত দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিল শাকিল। এ বিষয়ে দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে। সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে থানা পুলিশ তার পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের স্বজনদের খবর দেয়।
সাকিলের বাবার অভিযোগ, নিখোঁজের সময় তার সঙ্গে অটোরিকশা ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে অটোরিকশা ছিনতাই করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেছেন জসিম হাওলাদার।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মুখমণ্ডল থ্যাঁতলানো এবং হাত-পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। নিহতের পরিবারকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর ফলপট্টি রোডের আবাসিক হোটেল পার্ক থেকে নাইটগার্ড আব্দুল হাকিম হাওলাদারের মদেহ উদ্ধার করেছে মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. সেলিম হাওলাদার হোটেল স্টাফসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, নাইটগার্ড আব্দুল হাকিম রাতে ডিউটিরত অবস্থায় অসুস্থতা বোধ করেন। এজন্য হোটেলের একটি রুমে বিশ্রাম নিতে যান তিনি। সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেলে থানা পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে আব্দুল হাকিমের মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল হাকিমের মরদেহ রুমের মধ্যে দরজার পাশে উপুড় হয়ে পড়া ছিল। তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে স্বাভাবিক মৃত্যু। তারপরও মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হতে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের মেয়ে নাহিদা আক্তার বলেন, বাবা রাতে অসুস্থবোধ করলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে নেওয়া বা চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেনি। এমনকি তারা আমাদের পরিবারের কাউকেও খবরটি জানায়নি। বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবেই হয়ে থাকলেও তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেউরী বাড়ি সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর শাখা কচা নদী থেকে ৩০ বছর বয়সি অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি রকিবুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা কচা নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম-পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
বরিশালে একদিনে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজনকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অভিযোগ স্বজনদের। অপর দুজনের মধ্যে একজনের মরদেহ আবাসিক হোটেল এবং অপরজনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সাড়ে ১০টা থেকে দুপুরের মধ্যে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক, বরিশাল নগরীর এবং উজিরপুর উপজেলা থেকে পৃথকভাবে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবক সাকিব হাওলাদার (১৮) পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার চরপাড়া ইউনিয়নের জসিম হাওলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। হোটেল কক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কলকাঠি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম হাওলাদারের (৪৫)। তিনি নগরীর ফলপট্টি রোডের আবাসিক হোটেল পার্ক এর নাইটগার্ড ছিলেন। অপরজন আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উজিরপুর উপজেলার কচা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্ব স্ব থানার পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাটের পুল এলাকায় সাকিল হাওলাদার নামের যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
সাকিলের বাবা জসিম হাওলাদার জানান, গত দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিল শাকিল। এ বিষয়ে দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে। সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে থানা পুলিশ তার পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের স্বজনদের খবর দেয়।
সাকিলের বাবার অভিযোগ, নিখোঁজের সময় তার সঙ্গে অটোরিকশা ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ ফেলে রেখে অটোরিকশা ছিনতাই করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেছেন জসিম হাওলাদার।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মুখমণ্ডল থ্যাঁতলানো এবং হাত-পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। নিহতের পরিবারকে থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল নগরীর ফলপট্টি রোডের আবাসিক হোটেল পার্ক থেকে নাইটগার্ড আব্দুল হাকিম হাওলাদারের মদেহ উদ্ধার করেছে মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. সেলিম হাওলাদার হোটেল স্টাফসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, নাইটগার্ড আব্দুল হাকিম রাতে ডিউটিরত অবস্থায় অসুস্থতা বোধ করেন। এজন্য হোটেলের একটি রুমে বিশ্রাম নিতে যান তিনি। সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেলে থানা পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে আব্দুল হাকিমের মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল হাকিমের মরদেহ রুমের মধ্যে দরজার পাশে উপুড় হয়ে পড়া ছিল। তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে স্বাভাবিক মৃত্যু। তারপরও মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হতে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের মেয়ে নাহিদা আক্তার বলেন, বাবা রাতে অসুস্থবোধ করলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে হাসপাতালে নেওয়া বা চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেনি। এমনকি তারা আমাদের পরিবারের কাউকেও খবরটি জানায়নি। বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবেই হয়ে থাকলেও তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেউরী বাড়ি সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর শাখা কচা নদী থেকে ৩০ বছর বয়সি অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি রকিবুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা কচা নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম-পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৫
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৪২
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০১:০৭
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:৪০