২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৪
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে একটি সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক, বরিশালে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক এই বিভাগীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এই সেমিনারটি সিরিজের সর্বশেষ সেমিনার ছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
এর আগে দেশের ৭ বিভাগীয় শহর, যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার (সিলেট), রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনায় এ সংক্রান্ত ৮টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এই আট সেমিনারের মধ্যে ঢাকায় আয়োজন করা হয় দুটি সেমিনার যার মধ্যে একটি আঞ্চলিক ও একটি জাতীয়। এ সংক্রান্ত জাতীয় সেমিনার ২২ জুন রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ -শীর্ষক সেমিনার সিরিজের প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরিশালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। এছাড়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মি. হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ্ কুক সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এক বছর পূর্বে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ফলে বদলে গিয়েছে আদালতের সংস্কৃতি, জনগণের প্রত্যাশা, এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা।
প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে সংস্কার যাত্রায় কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথা তুলে ধরেন। উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনজ্ঞ, গবেষক ও নাগরিকরা দাবি করে আসছিলেন একটি স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য এবং কলিজিয়ামভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার যার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল অর্ডিন্যান্স-২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে।এরইমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় ঐকমত্য আজ আইনে রূপান্তরিত হয়েছে এবং জনআস্থার যোগ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় হচ্ছে।
বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রায় সম্পূর্ণ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা অগ্রসর হচ্ছি একটি যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈতকাঠামো (পোস্টিং, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত) অবসানের পথে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে স্থবির থাকা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের শৃঙ্খলা ও অপসারণের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন কার হয়েছে।
বিচার প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং বিচারপ্রার্থীদের জন্য হেল্প-লাইন সার্ভিস চালুকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৮ বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলায় হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ সবকিছুর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সংস্কার রোডম্যাপের আরেকটি মাইলফলক হলো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণ। এছাড়া, জেলা পর্যায়ে ২৩২টি নতুন বিচারিক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে মর্মে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এগুলো ক্রমবর্ধমান মামলা জট নিরসন এবং মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতা নিরসন করবে।
বিশেষায়িত বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি কেবল বিশেষায়িত আদালতই নয়, বরং দক্ষ বিচারক, প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া- যার মাধ্যমে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধগুলোর দ্রুত ও নিশ্চিত সমাধান পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাংলাদেশে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ এর পরিবেশ আরও শক্তিশালী হবে।
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, তিনি ব্যাংকক থেকে দুবাই, জোহানেসবার্গ থেকে সাও পাওলোতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সংস্কার ও স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যেন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা তুলনামূলক, উন্মুক্ত ও বৈশ্বিক হয়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে স্টেফান লিলার দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি মহোদয় ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ মর্মে মন্তব্য করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই সেমিনারে বরিশাল জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারাসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা এবং ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সেমিনারে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌশুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর প্রমুখ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।'
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে একটি সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক, বরিশালে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক এই বিভাগীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এই সেমিনারটি সিরিজের সর্বশেষ সেমিনার ছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
এর আগে দেশের ৭ বিভাগীয় শহর, যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার (সিলেট), রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনায় এ সংক্রান্ত ৮টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এই আট সেমিনারের মধ্যে ঢাকায় আয়োজন করা হয় দুটি সেমিনার যার মধ্যে একটি আঞ্চলিক ও একটি জাতীয়। এ সংক্রান্ত জাতীয় সেমিনার ২২ জুন রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ -শীর্ষক সেমিনার সিরিজের প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরিশালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। এছাড়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মি. হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ্ কুক সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এক বছর পূর্বে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ফলে বদলে গিয়েছে আদালতের সংস্কৃতি, জনগণের প্রত্যাশা, এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা।
প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে সংস্কার যাত্রায় কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথা তুলে ধরেন। উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনজ্ঞ, গবেষক ও নাগরিকরা দাবি করে আসছিলেন একটি স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য এবং কলিজিয়ামভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার যার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল অর্ডিন্যান্স-২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে।এরইমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় ঐকমত্য আজ আইনে রূপান্তরিত হয়েছে এবং জনআস্থার যোগ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় হচ্ছে।
বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রায় সম্পূর্ণ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা অগ্রসর হচ্ছি একটি যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈতকাঠামো (পোস্টিং, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত) অবসানের পথে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে স্থবির থাকা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের শৃঙ্খলা ও অপসারণের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন কার হয়েছে।
বিচার প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং বিচারপ্রার্থীদের জন্য হেল্প-লাইন সার্ভিস চালুকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৮ বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলায় হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ সবকিছুর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সংস্কার রোডম্যাপের আরেকটি মাইলফলক হলো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণ। এছাড়া, জেলা পর্যায়ে ২৩২টি নতুন বিচারিক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে মর্মে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এগুলো ক্রমবর্ধমান মামলা জট নিরসন এবং মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতা নিরসন করবে।
বিশেষায়িত বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি কেবল বিশেষায়িত আদালতই নয়, বরং দক্ষ বিচারক, প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া- যার মাধ্যমে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধগুলোর দ্রুত ও নিশ্চিত সমাধান পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাংলাদেশে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ এর পরিবেশ আরও শক্তিশালী হবে।
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, তিনি ব্যাংকক থেকে দুবাই, জোহানেসবার্গ থেকে সাও পাওলোতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সংস্কার ও স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যেন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা তুলনামূলক, উন্মুক্ত ও বৈশ্বিক হয়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে স্টেফান লিলার দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি মহোদয় ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ মর্মে মন্তব্য করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।
এই সেমিনারে বরিশাল জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারাসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা এবং ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সেমিনারে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌশুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর প্রমুখ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।'
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:৪১
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুলতান খান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। মৃত সুলতান খান পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় ৫ জন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জন। বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন।
এছাড়া চলতি বছর গোটা বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ ও পটুয়াখালীকে ১ জন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুলতান খান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল। মৃত সুলতান খান পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় ৫ জন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে ২ জন। বর্তমানে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন।
এছাড়া চলতি বছর গোটা বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ ও পটুয়াখালীকে ১ জন।
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:০২
বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের সময় ১১ জেলেকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) হিজলার মেঘনা নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহযোগিতায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলিয়াস সিকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজনকে আট দিন করে কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া বাকিদের মধ্যে একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও চারজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকার মাধ্যমে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের সময় ১১ জেলেকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) হিজলার মেঘনা নদীতে কোস্ট গার্ড সদস্যদের সহযোগিতায় উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এ অভিযান পরিচালনা করে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম জানান, অভিযানে আটক ১১ জনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলিয়াস সিকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজনকে আট দিন করে কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া বাকিদের মধ্যে একজনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও চারজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকার মাধ্যমে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:২২
বরিশাল শহরের ঝুঁকিপূর্ণ সেই ৩৪টি ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের তিনতলা দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বে এই ভবনসমূহকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে বসবাসরতদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলে সিটি প্রশাসন ঘোষণা করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ভবনগুলো অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেপরে এনিয়ে দৈনির রূপালী বাংলাদেশসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়।
সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার তীরের শহর বরিশালের ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিসিসি। ২০১৩ সালের জরিপে এসব ভবনকে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ভবনের বেশিরভাগ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এবং ভবনগুলো যে আইনগতভাবে ভাঙতে না পারে তার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতা এড়াতে বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন তৎপরতা দেখায়নি বা নিশ্চুপ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সদর রোডসংলগ্ন বহুতল ভবন দুটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল অবৈধভাকে দখল করে রেখেছিলেন। এই কাজী কামলা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ শ্যালক। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বরিশালে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছেন। সদর রোডে ভবন দুটির নিচের দোকান দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজে দখল করে রাখেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে আছেন।
একটি ভবনের মালিক নজরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তাঁর চাচা উলফাত হাজি এবং শুককুর হাজি ১৯৬০ সালে একটি ভবন ও ৩০ বছর আগে আরেকটি ভবন সদর রোডে নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে একটি পাকা ভবনে ফাটল দেখা দেয় এবং পাশের ভবন ঘেঁষে হেলে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু প্রভাবশালী ভাড়াটেরা জোর করে দখলে রাখায় ওই সময় ভাঙার ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে ভবন ভাঙার জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দেন নজরুল ইসলাম। তারপর ভবনটি শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি অপসারণে কাজ শুরু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উলফাত এবং শাকুর ম্যানশন নামের ওই দুটি ভবন ইতিপূর্বে ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাড়াটেরা আদালতে গেছেন। আমরা কোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় পেয়েছি। এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সেখানে নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও ভাড়াটেরা দখল ছাড়েননি। শুক্রবার সকালে তাদের চূড়ান্তভাবে চলে যাওয়ার নোটিস দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। আশা করছি, সাত দিনের মধ্যে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা সম্ভব।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মহিলা কলেজসংলগ্ন মনু মিয়ার ভবন এবং সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবনসহ ৩৪টি ভবনই পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু অনুমোদনহীন এমন কিছু ভবনও রয়েছে।’
বরিশাল শহরের ঝুঁকিপূর্ণ সেই ৩৪টি ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে সিটি কর্পোরেশন। শুক্রবার সকালে শহরের সদর রোডের তিনতলা দুটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পূর্বে এই ভবনসমূহকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে বসবাসরতদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলে সিটি প্রশাসন ঘোষণা করে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে ভবনগুলো অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেপরে এনিয়ে দৈনির রূপালী বাংলাদেশসহ একাধিক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়।
সূত্র জানায়, কীর্তনখোলার তীরের শহর বরিশালের ৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে বিসিসি। ২০১৩ সালের জরিপে এসব ভবনকে বেহাল ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। এই ভবনের বেশিরভাগ তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ কয়েকবার ভাঙার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এবং ভবনগুলো যে আইনগতভাবে ভাঙতে না পারে তার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়। পরবর্তীতে আইনি জটিলতা এড়াতে বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন তৎপরতা দেখায়নি বা নিশ্চুপ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সদর রোডসংলগ্ন বহুতল ভবন দুটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল অবৈধভাকে দখল করে রেখেছিলেন। এই কাজী কামলা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ শ্যালক। তিনি আওয়ামী লীগের শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে বরিশালে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছেন। সদর রোডে ভবন দুটির নিচের দোকান দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে নিজে দখল করে রাখেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে তিনি একাধিক রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপনে আছেন।
একটি ভবনের মালিক নজরুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তাঁর চাচা উলফাত হাজি এবং শুককুর হাজি ১৯৬০ সালে একটি ভবন ও ৩০ বছর আগে আরেকটি ভবন সদর রোডে নির্মাণ করেন। ২০১৩ সালে একটি পাকা ভবনে ফাটল দেখা দেয় এবং পাশের ভবন ঘেঁষে হেলে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু প্রভাবশালী ভাড়াটেরা জোর করে দখলে রাখায় ওই সময় ভাঙার ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরে ভবন ভাঙার জন্য ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দেন নজরুল ইসলাম। তারপর ভবনটি শুক্রবার সকাল থেকে ভবনটি অপসারণে কাজ শুরু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উলফাত এবং শাকুর ম্যানশন নামের ওই দুটি ভবন ইতিপূর্বে ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাড়াটেরা আদালতে গেছেন। আমরা কোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রায় পেয়েছি। এর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে সেখানে নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও ভাড়াটেরা দখল ছাড়েননি। শুক্রবার সকালে তাদের চূড়ান্তভাবে চলে যাওয়ার নোটিস দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। আশা করছি, সাত দিনের মধ্যে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা সম্ভব।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, নগরের কাউনিয়া এলাকার জানুকি সিংহ রোডের মতি লস্করের বাড়ি, পূর্ব বগুড়া রোড কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডে মহিলা কলেজসংলগ্ন মনু মিয়ার ভবন এবং সদর রোডসংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউর হোটেল বাহাদুর ভবনসহ ৩৪টি ভবনই পর্যায়ক্রমে ভেঙে ফেলা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু অনুমোদনহীন এমন কিছু ভবনও রয়েছে।’
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.