https://jamunabankbd.com/

বরিশাল

যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈতকাঠামো অবসানের পথে অগ্রসর হচ্ছি: বরিশালে প্রধান বিচারপতি

বরিশালটাইমস

বরিশালটাইমস

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৪

প্রিন্ট এন্ড সেভ

যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈতকাঠামো অবসানের পথে অগ্রসর হচ্ছি: বরিশালে প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে একটি সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক, বরিশালে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক এই বিভাগীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এই সেমিনারটি সিরিজের সর্বশেষ সেমিনার ছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে দেশের ৭ বিভাগীয় শহর, যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার (সিলেট), রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনায় এ সংক্রান্ত ৮টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এই আট সেমিনারের মধ্যে ঢাকায় আয়োজন করা হয় দুটি সেমিনার যার মধ্যে একটি আঞ্চলিক ও একটি জাতীয়। এ সংক্রান্ত জাতীয় সেমিনার ২২ জুন রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জুডিশিয়াল ইনডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ -শীর্ষক সেমিনার সিরিজের প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরিশালে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। এছাড়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত মি. হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ্ কুক সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এক বছর পূর্বে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগ সংস্কারে যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল সেই রোডম্যাপ এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এর ফলে বদলে গিয়েছে আদালতের সংস্কৃতি, জনগণের প্রত্যাশা, এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা।

প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে সংস্কার যাত্রায় কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জনের কথা তুলে ধরেন। উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইনজ্ঞ, গবেষক ও নাগরিকরা দাবি করে আসছিলেন একটি স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য এবং কলিজিয়ামভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার যার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল অর্ডিন্যান্স-২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে।এরইমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় ঐকমত্য আজ আইনে রূপান্তরিত হয়েছে এবং জনআস্থার যোগ্য একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় হচ্ছে।

বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রায় সম্পূর্ণ।

প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আমরা অগ্রসর হচ্ছি একটি যুগপৎ প্রশাসনিক দ্বৈতকাঠামো (পোস্টিং, বদলি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত) অবসানের পথে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে স্থবির থাকা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের শৃঙ্খলা ও অপসারণের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন কার হয়েছে।

বিচার প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং বিচারপ্রার্থীদের জন্য হেল্প-লাইন সার্ভিস চালুকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৮ বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলায় হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এ সবকিছুর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সংস্কার রোডম্যাপের আরেকটি মাইলফলক হলো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণ। এছাড়া, জেলা পর্যায়ে ২৩২টি নতুন বিচারিক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে মর্মে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এগুলো ক্রমবর্ধমান মামলা জট নিরসন এবং মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতা নিরসন করবে।

বিশেষায়িত বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি কেবল বিশেষায়িত আদালতই নয়, বরং দক্ষ বিচারক, প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া- যার মাধ্যমে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধগুলোর দ্রুত ও নিশ্চিত সমাধান পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাংলাদেশে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ এর পরিবেশ আরও শক্তিশালী হবে।

প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, তিনি ব্যাংকক থেকে দুবাই, জোহানেসবার্গ থেকে সাও পাওলোতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সংস্কার ও স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন যেন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা তুলনামূলক, উন্মুক্ত ও বৈশ্বিক হয়।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে স্টেফান লিলার দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি মহোদয় ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ মর্মে মন্তব্য করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।

এই সেমিনারে বরিশাল জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারাসহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা এবং ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও সেমিনারে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌশুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর প্রমুখ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।'

আরও পড়ুন:

খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুজন ও হাঙ্গার প্রজেক্টের শোকবার্তা

আরিফ আহমেদ মুন্না

আরিফ আহমেদ মুন্না

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:৫৭

প্রিন্ট এন্ড সেভ

খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুজন ও হাঙ্গার প্রজেক্টের শোকবার্তা

বাবুগঞ্জের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল ওহাব খানের সহধর্মিণী বাংলাদেশ প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান খালেদা ওহাবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকবার্তা দিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখা এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়। এসব সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে প্রেরিত পৃথক শোকবার্তায় তারা খালেদা ওহাবের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

শোকবার্তায় বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদার বলেন, 'খালেদা ওহাব দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অতি আপনজন। তাঁর স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন বেইজ কমান্ডার। ১৯৮৯ সালে আততায়ীর গুলিতে আব্দুল ওহাব খান নিহত হওয়ার পরে খালেদা ওহাব একজন গৃহবধূ থেকে নিজের মেধা যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি থেকে জনগণের নেত্রী হয়ে ওঠেন। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন কাজ করে গেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাবুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাদের একজন স্বজন হারিয়েছে।'

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বাবুগঞ্জ উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া শোকবার্তায় সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, 'খালেদা ওহাব শুধু একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন মানবাধিকার কর্মী। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে গেছেন। ১৯৮৯ সালে স্বামী শহীদ আব্দুল ওহাব খানের মৃত্যুর পরে তিনি তাঁর স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পুরো একটা জীবন তিনি অবলীলায় খরচ করেছেন মানুষ ও মানবতার কল্যাণে। তিনি ছিলেন নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তিনি শিখিয়ে গেছেন কীভাবে একজন সাধারণ গৃহবধূ নারীকে সমাজের সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জীবনযুদ্ধে জয়ী এবং সফল হতে হয়। তিনি অদম্য ও জীবন সংগ্রামী নারীদের কাছে একজন আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।'

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেহের আফরোজ মিতা বলেন, 'বাবুগঞ্জে নারীর অগ্রযাত্রা এবং নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। জীবদ্দশায় তিনি বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। তিনি আমৃত্যু বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, রান্নাবান্না এবং অতিথি আপ্যায়নে ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন অনন্য। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন কীর্তিমতী নারী হিসেবে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।'

উল্লেখ্য, বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারিণী খালেদা ওহাব ১৯৮৯ সালের উপ-নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় পরবর্তী এরশাদ সরকারের উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তনের পরে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রথম চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব খান আততায়ীর গুলিতে নিহত হলে ওই বছরই অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তিনি। যে সময়ে নারীরা ঠিকভাবে ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না সেই সময়ে একজন নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিল অকল্পনীয় একটা ঘটনা। দেশের প্রথম নারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনি একাধিকবার বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টির বাবুগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন খালেদা ওহাব। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির বাবুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছাড়াও পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট পরিচালিত বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার বাবুগঞ্জ উপজেলা সভানেত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাড়ি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামে।

গত মঙ্গলবার খালেদা ওহাব পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শান্তি সহায়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল থেকে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে তিনি রামপুরা এলাকায় তার ছোটবোনের বাসায় বেড়াতে গেলে বুধবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাকে নিকটস্থ ফরাজি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৪টার দিকে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, খালেদা ওহাব স্ট্রোকজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। তিনি উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আছর চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজ মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। #

আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি আর নয় - চরমোনাই পীর

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২১:৩১

প্রিন্ট এন্ড সেভ

আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি আর নয় - চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘আমরা বুঝে ফেলেছি, পুরোনো বউকে নতুন শাড়ি দিয়ে ঘোমটা দিয়ে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। এ ধোঁকায় বাংলাদেশের মানুষ আর পড়বে না। আমরা ৫৩ বছর ধোঁকা খেয়েছি, আর নয়। দেশকে মুক্ত করতে হবে।’

চরমোনাইয়ের ঐতিহাসিক অগ্রহায়ণের মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে অনুষ্ঠিত উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সৈয়দ রেজাউল করীম।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। মাহফিলে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের আলেম-ওলমারা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে জাতীয় উলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নতুন সভাপতি হিসেবে দেশের শীর্ষ আলেম মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের নাম ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।

আগামীর নির্বাচনে পরিবর্তন আসতেই হবে জানিয়ে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, ‘৫৩ বছর দেশ যারা পরিচালনা করেছে, যেই নীতি-আদর্শের মাধ্যমে চলছে। এ নীতি-আদর্শে চোরের দিক থেকে আমরা চ্যাম্পিয়ান হয়েছি। হাজার হাজার মা সন্তান হারা হয়েছে। এখন নতুনভাবে দেশ পরিচালনার জন্য তারা পাগলের মতো হয়ে গেছে। কখন ক্ষমতায় যাবে, আবার সেই চরিত্র বাস্তবায়ন করবে।’

এ সময় চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমি কিন্তু কোথাও প্রার্থী হইনি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে হবও না। সারা দেশে আমার সফর করতে হবে।’ তিনি বলেন, দিন-রাত নিজের পকটের টাকা খরচ করে পাগলের মতো ঘুরছি। এর পেছনে একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। সেটা হলো—আমরা এ দেশকে ভালোবাসি। আমরা ইসলামকে ভালোবাসি, মানুষকে ভালোবাসি।’

আট দফা দাবি আদায়ে বরিশালে নার্স বিক্ষোভ

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

বরিশালটাইমস রিপোর্ট

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:০৬

প্রিন্ট এন্ড সেভ

আট দফা দাবি আদায়ে বরিশালে নার্স বিক্ষোভ

ভিন্ন অধিদপ্তরের অধীনে স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনসহ আট দফা দাবিতে বরিশালে কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নার্সরা।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নার্স ও মিডওয়াইফরা ব্যানার, ফেস্টুন ও বিভিন্ন স্লোগানে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি খাত দেশের স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এই খাত চরম অবহেলায় রয়েছে। স্বতন্ত্র নার্সিং অধিদপ্তর বাতিলের সিদ্ধান্ত পেশাগত মর্যাদা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বিএনএ বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি আলী আজগর, সহ-সভাপতি মো. শাহআলম, সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ শামীমা ইয়াসমিন, আনোয়ারা খানম, হাফিজা আক্তার প্রমুখ।

বরিশাল নার্সিং কলেজ ও শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও মিডওয়াইফরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

custom sidebar ads

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.

জনপ্রিয়

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.