০৫ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৪৮
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।
সোমবার (৪ আগস্ট) উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সাঁটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনের দাবি, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয়; বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।’ এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
অনেকেই এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করছেন। আবার অনেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন ওই প্রধান শিক্ষিকাকে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ও অন্য একটি পক্ষ এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন দিলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছে আপনার একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে আমাদের কিছু বলেনি।’
নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রিপোর্ট প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। তদন্ত চলমান আছে, তদন্ত দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারে।’
গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।
সেই যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তাই আমার বিদ্যালয় থেকে এই ছবি সরাতে পারব না।
পরে জনগণের তোপের মুখে সেই ছবি নামাতে বাধ্য হন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্তে প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।
সোমবার (৪ আগস্ট) উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সাঁটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনের দাবি, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয়; বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।’ এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
অনেকেই এটিকে স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করছেন। আবার অনেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন ওই প্রধান শিক্ষিকাকে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ও অন্য একটি পক্ষ এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার মোবাইলে ফোন দিলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছে আপনার একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে আমাদের কিছু বলেনি।’
নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রিপোর্ট প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। তদন্ত চলমান আছে, তদন্ত দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারে।’
গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।
সেই যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তাই আমার বিদ্যালয় থেকে এই ছবি সরাতে পারব না।
পরে জনগণের তোপের মুখে সেই ছবি নামাতে বাধ্য হন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্তে প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
১৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৫:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পশ্চিম মিঠাখালী নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি। তিনি পিরোজপুর–৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত এমপি প্রার্থী ও উপজেলা জামায়াতের আমির শরীফ মো. আব্দুল জলিলকে পরাজিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাতজন সদস্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিজয়ী হয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন।
নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার ও মঠবাড়িয়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলাম ভোটগ্রহণ শেষে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, দুজন শিক্ষক তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ শেষ করেছি। এর আগে সোমবার (১৩ অক্টোবর) মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ভোট দিয়ে সাতজন সদস্য নির্বাচিত করেন, যারা পরে সভাপতি নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। এ বিষয়ে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শরীফ মো. আব্দুল জলিল পক্ষে উপজেলা শাখা সেক্রেটারি মো. আবুল কালাম আজাদ মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এতে মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মো. আব্দুল জলিল বৃহস্পতিবার ঢাকা গিয়েছেন। তাকে মোল্লাবাড়ি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী করা হয়েছে তা জলিল এবং মঠবাড়িয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামী অবগত নন। তার অনুমতি ছাড়া যারা এ কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, বিভিন্ন অনলাইন নিউজে যে নিউজটি ভাইরাল হয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভোট হওয়ার আগে কমিটিতে থাকার বিষয়ে অপারগতা জানিয়েছেন। তারপরও কমিটির পক্ষ থেকে দু-একজন মো. আব্দুল জলিলের নাম প্রস্তাব করেছেন।
তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। তিনি কোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর করেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। যেহেতু তিনি এমপি প্রার্থী তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য মহল কাজ করতেছে।
আর ছাত্রদল নেতা শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি বলেন, আমি নির্বাচিত হয়েছি এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমি নিরলসভাবে কাজ করে যেতে চাই। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাকে একটি মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পশ্চিম মিঠাখালী নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি। তিনি পিরোজপুর–৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত এমপি প্রার্থী ও উপজেলা জামায়াতের আমির শরীফ মো. আব্দুল জলিলকে পরাজিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাতজন সদস্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিজয়ী হয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন।
নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার ও মঠবাড়িয়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলাম ভোটগ্রহণ শেষে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, দুজন শিক্ষক তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ শেষ করেছি। এর আগে সোমবার (১৩ অক্টোবর) মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ভোট দিয়ে সাতজন সদস্য নির্বাচিত করেন, যারা পরে সভাপতি নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। এ বিষয়ে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শরীফ মো. আব্দুল জলিল পক্ষে উপজেলা শাখা সেক্রেটারি মো. আবুল কালাম আজাদ মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এতে মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মো. আব্দুল জলিল বৃহস্পতিবার ঢাকা গিয়েছেন। তাকে মোল্লাবাড়ি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রার্থী করা হয়েছে তা জলিল এবং মঠবাড়িয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামী অবগত নন। তার অনুমতি ছাড়া যারা এ কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, বিভিন্ন অনলাইন নিউজে যে নিউজটি ভাইরাল হয়েছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভোট হওয়ার আগে কমিটিতে থাকার বিষয়ে অপারগতা জানিয়েছেন। তারপরও কমিটির পক্ষ থেকে দু-একজন মো. আব্দুল জলিলের নাম প্রস্তাব করেছেন।
তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। তিনি কোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর করেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে একটি মহল। যেহেতু তিনি এমপি প্রার্থী তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য মহল কাজ করতেছে।
আর ছাত্রদল নেতা শাহাদাৎ হোসেন ফরাজি বলেন, আমি নির্বাচিত হয়েছি এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমি নিরলসভাবে কাজ করে যেতে চাই। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাকে একটি মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।
১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৬:১০
পিরোজপুরের নেছারাবাদে এক পাষণ্ড ছেলের বিরুদ্ধে কৌশলে ২২ শতক জমি লিখে নেওয়ার পর মা-বাবাকে নির্মমভাবে মারধর ও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই প্রবীণ দম্পতি ১০ দিন ধরে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী বাবা মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) এবং মা মমতাজ বেগম (৫০) এ ঘটনায় তাঁদের বড় ছেলে মো. মিলন এবং পুত্রবধূ রুবি বেগমের বিরুদ্ধে নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে।
বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে মিলন বড়। স্ত্রীসহ চিকিৎসার খরচের জন্য ছেলের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন তিনি। সেই সুযোগে মিলন কৌশলে তাঁর ২২ শতক জমি নিজের নামে লিখে নেয়।
তিনি বলেন, আমরা এখন বাড়ি থেকে কোনো ফল-ফসল ধরতে পারি না। ৬ অক্টোবর সকালে বাগানের কিছু সুপারি পাড়তে গেলে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে নির্মমভাবে মারধর করে। মারধরের ঘটনায় আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে। এখন আবার বাকি জমিটুকুও লিখে দিতে বলছে।
মা মমতাজ বেগম বলেন, ছেলে কৌশলে জমি লিখে নিয়ে এখন আমাদের কাছ থেকে টাকা চাইছে, বাকি জমিও লিখে দিতে বলছে। সেদিন ওর বাপকে বেদম মারধর করেছে, আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও পিটিয়েছে।
আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাঁদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না, তাই আমি তাঁদের থানায় যেতে বলেছি।
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন বলেন, তাদের ছেলে অত্যন্ত খারাপ। জমির জন্য মা-বাবাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ওই পাষণ্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি বনি আমিন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। ভুক্তভোগীরা যেন থানায় এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পিরোজপুরের নেছারাবাদে এক পাষণ্ড ছেলের বিরুদ্ধে কৌশলে ২২ শতক জমি লিখে নেওয়ার পর মা-বাবাকে নির্মমভাবে মারধর ও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই প্রবীণ দম্পতি ১০ দিন ধরে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী বাবা মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) এবং মা মমতাজ বেগম (৫০) এ ঘটনায় তাঁদের বড় ছেলে মো. মিলন এবং পুত্রবধূ রুবি বেগমের বিরুদ্ধে নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামে।
বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে মিলন বড়। স্ত্রীসহ চিকিৎসার খরচের জন্য ছেলের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন তিনি। সেই সুযোগে মিলন কৌশলে তাঁর ২২ শতক জমি নিজের নামে লিখে নেয়।
তিনি বলেন, আমরা এখন বাড়ি থেকে কোনো ফল-ফসল ধরতে পারি না। ৬ অক্টোবর সকালে বাগানের কিছু সুপারি পাড়তে গেলে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে নির্মমভাবে মারধর করে। মারধরের ঘটনায় আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে। এখন আবার বাকি জমিটুকুও লিখে দিতে বলছে।
মা মমতাজ বেগম বলেন, ছেলে কৌশলে জমি লিখে নিয়ে এখন আমাদের কাছ থেকে টাকা চাইছে, বাকি জমিও লিখে দিতে বলছে। সেদিন ওর বাপকে বেদম মারধর করেছে, আমি বাঁচাতে গেলে আমাকেও পিটিয়েছে।
আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাঁদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না, তাই আমি তাঁদের থানায় যেতে বলেছি।
ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমীন বলেন, তাদের ছেলে অত্যন্ত খারাপ। জমির জন্য মা-বাবাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ওই পাষণ্ড ছেলের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার ওসি বনি আমিন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। ভুক্তভোগীরা যেন থানায় এসে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২৫
পিরোজপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিমাণে কম এবং অরুচিকর খাবার দেওয়ায় তা গ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছেন রোগীরা।
ফলে নিজেদের বাড়ি, আত্মীয়-স্বজন বা বাইরের রেস্টুরেন্ট থেকে তারা খাবার কিনে খাচ্ছেন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ও এর রান্নাঘর ঘুরে দেখা যায়, রান্নাঘরের মেঝে ঝকঝকে, বাসনপত্র ধোয়া, খাবার রাখা হয়েছে পরিপাটি করে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে একটি আদর্শ রান্নাঘর।
কিন্তু এই নিখুঁত বাহ্যিকতার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অপ্রিয় সত্য। রোগীর প্লেটে যে খাবার পৌঁছায়, তার মান আর পরিমাণে রয়েছে বড়সড় গলদ। সকালের নাস্তার জন্য রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি ডিম, সামান্য চিনি ও একটি কলা দেওয়া হয়েছে।
যেখানে নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়ার অভিযোগ করেন রোগীরা। পাশাপাশি দেখা যায়, দরপত্র অনুযায়ী ৪ ইঞ্চি আকারের একটি সবরি জাতের কলা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ছোট একটি চিনিচাপা জাতের কলা।
দুপুরের খাবারে মাছ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় মুরগীর মাংস। ৬০ গ্রামের ওপরে একটুকরো মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ৫০ গ্রামের কম ওজনের মাংসের টুকরা। ভাতের চালও মানহীন।
রোগীরা অভিযোগ করে বলছেন, বাজারে মাছের দাম মুরগির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় মাছের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মুরগি। এদিকে হাসপাতালের বাবুর্চি লাইলি আক্তার বলেন, আজকে মাছ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু মাছের পরিবর্তে মাংস দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলছেন, “মাছ বাজারে পায়নি, তাই মাংস দিয়েছে”।
সবরি জাতের কলার পরিবর্তে চিনিচাপা জাতের কলা এবং আকারে ছোট কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার বলেন “বাজারে সবরি কলা নেই আকারেও বড় নেই। আমি সুপারভাইজারকে এ বিষয়ে জানিয়েছি”।
এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) নিজাম উদ্দিন। নিজের অফিস কক্ষ থেকে চলে আসেন খাবার বিতরণের জায়গায়। খাবার নিম্নমানের ও পরিমাণে কম দেওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পরেন।
তিনি প্রথমে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও পরে উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ‘খাবার নিম্নমানের না, খাবার ঠিকমতোই দেওয়া হচ্ছে। আজকে মাছের পরিবর্তে মাংস দিয়েছি। ঠিকাদার মাংসের দামই পাবে, মাছের দাম পাবে না।’ ওজনে কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার যতটুকু ওজন দিয়েছে সেই দামই পাবে।’
সকালের নাস্তায় নিম্নমানের পাউরুটি এবং দরপত্রে দেওয়া আকারের চেয়ে ছোট আকারের কলা কেন দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রুটি আমরা মেপে নিয়েছি, যে ওজনের দেওয়ার কথা সেই ওজনের দিয়েছে। কলা যেরকম দেওয়ার কথা সেরকম দিয়েছে। এখানে নিয়মের বাইরে কিছু হয়নি। ঠিকাদারকে কার্যাদেশে যে পরিমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই পরিমাণই দিয়েছে।’
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দরপত্র মূল্যায়নে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি ছিল শেখ এন্ড সন্স ট্রেডার্স। বেশি দরে খাবার সরবরাহের দরপত্র বাগিয়ে নিলেও রোগীদের পাতে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের খাবার, এতে ক্ষুব্ধ রোগীরা।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের পরে আর কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে দরপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের খাবার সরবরাহ করছে।
এদিকে এ বছরের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করে খাবারের পরিমাণ কম দেওয়ার সত্যতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করেছিল। তবে সচেতন মহলের দাবি, দুদক থেকে সতর্ক করার পরেও কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিভাগে ভর্তি রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা মূল্যের তিন বেলা খাবার (সকালে নাশতা, দুপুরে ও রাতে ভাত) দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশেষ দিবসে প্রতি রোগীকে ২০০ টাকার খাবার দেওয়া হয়।
দরপত্রের শর্ত অনুয়ায়ী, হাসপাতালে প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ২৮ ইরি চালের ৩৩০ গ্রাম ভাত, সপ্তাহে পাঁচ দিন মাছ ও মাংস ৬৩.৬৬ গ্রাম করে দুই বেলা দেওয়ার কথা। সপ্তাহে দুই দিন মাছ ও ডিম দেওয়ার কথা।
এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও একটি পাকা সবরি কলা দেওয়ার কথা। কিন্তু মাছ-মাংসের অংশ আকারে ছোট, কলাও ছোট ও নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। মসলা কম দিয়ে তরকারি রান্না করে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে, যেটি খেতে রোগীরা আগ্রহী হচ্ছে না।
হাসপাতালের রোগী সদর উপজেলার সিআই পাড়া এলাকার বাসিন্দা জিসান শিকদার বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট, পেটের ব্যথা নিয়ে ভর্তি আছি। হাসপাতালে দুইবার সামান্য ভাত, আলু দুই পিস, ছোট সাইজের মাছ-মাংস দেওয়া হয়। তরকারিতে মসলার পরিমাণ খুবই কম, মাছ-মাংস পুরোপুরিভাবে রান্না করা হয় না। খাবার মানসম্মত নয়।’
ভর্তি থাকা আরেক রোগীর স্বজন আসমা আক্তার বলেন, ‘দুপুরের খাবারের জন্য ভাত, সবজি, ডাল ও মাছের পরিবর্তে ছোট এক টুকরা মাংস দিয়েছে, তা রুচিসম্মত না। আমার মনে হয়েছে, এটা রোগীর খাবার না। আমরা খাবার ফিরিয়ে দিয়েছি, এখন বাইরে থেকে কিনে খাওয়াতে হবে।’
এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে আমরা নিয়মিত খাবার তদারকি করি, এ বিষয়ক একটা কমিটিও আছে। জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা মিটিংয়ের মাধ্যমে আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, সেই কমিটির মাধ্যমে মাসে এক থেকে দুবার এই খাবার মনিটরিং করা হয়।
আপনারা যে অভিযোগটা দিয়েছেন সে বিষয়ে অবশ্যই আমি তদারকি করব। আমি আগামীকালই আরএমও সাহেবসহ আমাদের যে ঠিকাদার আছে তাদের সঙ্গে কথা বলবো। প্রতিটি পয়েন্টে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। আশা করি, যদি কোনো ঘাটতি থাকে আগামীকাল থেকে অবশ্যই রিকভার হবে।’
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি অর্থে পরিচালিত হাসপাতালগুলোর খাবারের মান নিয়ে নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তারা দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পিরোজপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিমাণে কম এবং অরুচিকর খাবার দেওয়ায় তা গ্রহণে আগ্রহ হারাচ্ছেন রোগীরা।
ফলে নিজেদের বাড়ি, আত্মীয়-স্বজন বা বাইরের রেস্টুরেন্ট থেকে তারা খাবার কিনে খাচ্ছেন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীদের।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সরেজমিনে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ও এর রান্নাঘর ঘুরে দেখা যায়, রান্নাঘরের মেঝে ঝকঝকে, বাসনপত্র ধোয়া, খাবার রাখা হয়েছে পরিপাটি করে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে একটি আদর্শ রান্নাঘর।
কিন্তু এই নিখুঁত বাহ্যিকতার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অপ্রিয় সত্য। রোগীর প্লেটে যে খাবার পৌঁছায়, তার মান আর পরিমাণে রয়েছে বড়সড় গলদ। সকালের নাস্তার জন্য রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি ডিম, সামান্য চিনি ও একটি কলা দেওয়া হয়েছে।
যেখানে নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়ার অভিযোগ করেন রোগীরা। পাশাপাশি দেখা যায়, দরপত্র অনুযায়ী ৪ ইঞ্চি আকারের একটি সবরি জাতের কলা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ছোট একটি চিনিচাপা জাতের কলা।
দুপুরের খাবারে মাছ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় মুরগীর মাংস। ৬০ গ্রামের ওপরে একটুকরো মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয় ৫০ গ্রামের কম ওজনের মাংসের টুকরা। ভাতের চালও মানহীন।
রোগীরা অভিযোগ করে বলছেন, বাজারে মাছের দাম মুরগির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় মাছের পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মুরগি। এদিকে হাসপাতালের বাবুর্চি লাইলি আক্তার বলেন, আজকে মাছ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু মাছের পরিবর্তে মাংস দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি বলছেন, “মাছ বাজারে পায়নি, তাই মাংস দিয়েছে”।
সবরি জাতের কলার পরিবর্তে চিনিচাপা জাতের কলা এবং আকারে ছোট কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার বলেন “বাজারে সবরি কলা নেই আকারেও বড় নেই। আমি সুপারভাইজারকে এ বিষয়ে জানিয়েছি”।
এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) নিজাম উদ্দিন। নিজের অফিস কক্ষ থেকে চলে আসেন খাবার বিতরণের জায়গায়। খাবার নিম্নমানের ও পরিমাণে কম দেওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পরেন।
তিনি প্রথমে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও পরে উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ‘খাবার নিম্নমানের না, খাবার ঠিকমতোই দেওয়া হচ্ছে। আজকে মাছের পরিবর্তে মাংস দিয়েছি। ঠিকাদার মাংসের দামই পাবে, মাছের দাম পাবে না।’ ওজনে কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদার যতটুকু ওজন দিয়েছে সেই দামই পাবে।’
সকালের নাস্তায় নিম্নমানের পাউরুটি এবং দরপত্রে দেওয়া আকারের চেয়ে ছোট আকারের কলা কেন দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রুটি আমরা মেপে নিয়েছি, যে ওজনের দেওয়ার কথা সেই ওজনের দিয়েছে। কলা যেরকম দেওয়ার কথা সেরকম দিয়েছে। এখানে নিয়মের বাইরে কিছু হয়নি। ঠিকাদারকে কার্যাদেশে যে পরিমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই পরিমাণই দিয়েছে।’
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দরপত্র মূল্যায়নে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি ছিল শেখ এন্ড সন্স ট্রেডার্স। বেশি দরে খাবার সরবরাহের দরপত্র বাগিয়ে নিলেও রোগীদের পাতে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের খাবার, এতে ক্ষুব্ধ রোগীরা।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের পরে আর কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে দরপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের খাবার সরবরাহ করছে।
এদিকে এ বছরের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে দুদকের পাঁচ সদস্যের একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করে খাবারের পরিমাণ কম দেওয়ার সত্যতা পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করেছিল। তবে সচেতন মহলের দাবি, দুদক থেকে সতর্ক করার পরেও কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিভাগে ভর্তি রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি প্রতিদিন সরকারিভাবে ১৭৫ টাকা মূল্যের তিন বেলা খাবার (সকালে নাশতা, দুপুরে ও রাতে ভাত) দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশেষ দিবসে প্রতি রোগীকে ২০০ টাকার খাবার দেওয়া হয়।
দরপত্রের শর্ত অনুয়ায়ী, হাসপাতালে প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ২৮ ইরি চালের ৩৩০ গ্রাম ভাত, সপ্তাহে পাঁচ দিন মাছ ও মাংস ৬৩.৬৬ গ্রাম করে দুই বেলা দেওয়ার কথা। সপ্তাহে দুই দিন মাছ ও ডিম দেওয়ার কথা।
এ ছাড়া প্রতিদিন সকালে রোগীদের দুটি পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও একটি পাকা সবরি কলা দেওয়ার কথা। কিন্তু মাছ-মাংসের অংশ আকারে ছোট, কলাও ছোট ও নিম্নমানের পাউরুটি দেওয়া হচ্ছে। মসলা কম দিয়ে তরকারি রান্না করে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে, যেটি খেতে রোগীরা আগ্রহী হচ্ছে না।
হাসপাতালের রোগী সদর উপজেলার সিআই পাড়া এলাকার বাসিন্দা জিসান শিকদার বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট, পেটের ব্যথা নিয়ে ভর্তি আছি। হাসপাতালে দুইবার সামান্য ভাত, আলু দুই পিস, ছোট সাইজের মাছ-মাংস দেওয়া হয়। তরকারিতে মসলার পরিমাণ খুবই কম, মাছ-মাংস পুরোপুরিভাবে রান্না করা হয় না। খাবার মানসম্মত নয়।’
ভর্তি থাকা আরেক রোগীর স্বজন আসমা আক্তার বলেন, ‘দুপুরের খাবারের জন্য ভাত, সবজি, ডাল ও মাছের পরিবর্তে ছোট এক টুকরা মাংস দিয়েছে, তা রুচিসম্মত না। আমার মনে হয়েছে, এটা রোগীর খাবার না। আমরা খাবার ফিরিয়ে দিয়েছি, এখন বাইরে থেকে কিনে খাওয়াতে হবে।’
এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে আমরা নিয়মিত খাবার তদারকি করি, এ বিষয়ক একটা কমিটিও আছে। জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা মিটিংয়ের মাধ্যমে আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, সেই কমিটির মাধ্যমে মাসে এক থেকে দুবার এই খাবার মনিটরিং করা হয়।
আপনারা যে অভিযোগটা দিয়েছেন সে বিষয়ে অবশ্যই আমি তদারকি করব। আমি আগামীকালই আরএমও সাহেবসহ আমাদের যে ঠিকাদার আছে তাদের সঙ্গে কথা বলবো। প্রতিটি পয়েন্টে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। আশা করি, যদি কোনো ঘাটতি থাকে আগামীকাল থেকে অবশ্যই রিকভার হবে।’
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি অর্থে পরিচালিত হাসপাতালগুলোর খাবারের মান নিয়ে নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তারা দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.