
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪:৪৪
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে সৈকত এলাকাজুড়ে দেখা গেছে পর্যটকশূন্য পরিবেশ। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট সব জায়গাতেই বিরাজ করছে এক ধরনের নিস্তব্ধতা।
সাধারণত সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়েও কুয়াকাটায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা ভ্রমণ থেকে বিরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
হোটেল-মোটেল, ঝিনুক ও আচার মার্কেট, খাবার হোটেল রেস্তোরাঁ, অটোচালক, মোটরবাইক, ফটোগ্রাফারসহ মোট ১৬টি পেশার মানুষ বর্তমানে পর্যটক না আসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয় দোকানিরা জানিয়েছেন, পর্যটক না থাকায় বিক্রি প্রায় বন্ধ। অনেকেই দোকান খোলার আগ্রহও হারিয়েছেন।
কুয়াকাটা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাঈনুল ইসলাম বলেন, দিনে দোকান খুলে বসে থাকি, কোনো ক্রেতা পাই না। পর্যটকই না থাকলে আমাদের ব্যবসা চলবে কীভাবে?”
ফটোগ্রাফার সাইফুল মুন্সী বলেন, সৈকতে এখন কেউ আসে না ছবি তুলতে। আগে প্রতিদিন অন্তত ৫-১০ জনের ছবি তুলতাম, এখন পুরো দিনেও একজন পর্যটক মেলে না।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, পর্যটক না থাকায় হোটেলের অনেক কর্মচারী বেকার হয়ে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অনেক হোটেল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়ায় কেউ বুকিং দিচ্ছে না। ১৩ তারিখে তো একেবারেই ফাঁকা সৈকত দেখলাম। এমন অবস্থা আমরা আগে দেখিনি।
কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব টোয়াক সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুশার বলেন, এখন পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে উপলক্ষে পর্যটকের উপস্থিতি এখন বেশি থাকার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটক কম আসছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কুয়াকাটা নির্ভরশীল একটি শহর, এখানে ৭০ শতাংশ মানুষ পর্যটন সংশ্লিষ্ট পেশায় জড়িত।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশের পর্যটন শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। কুয়াকাটার মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকায় দ্রুত স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে পর্যটকদের আগমন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে সৈকত এলাকাজুড়ে দেখা গেছে পর্যটকশূন্য পরিবেশ। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট সব জায়গাতেই বিরাজ করছে এক ধরনের নিস্তব্ধতা।
সাধারণত সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়েও কুয়াকাটায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা ভ্রমণ থেকে বিরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
হোটেল-মোটেল, ঝিনুক ও আচার মার্কেট, খাবার হোটেল রেস্তোরাঁ, অটোচালক, মোটরবাইক, ফটোগ্রাফারসহ মোট ১৬টি পেশার মানুষ বর্তমানে পর্যটক না আসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয় দোকানিরা জানিয়েছেন, পর্যটক না থাকায় বিক্রি প্রায় বন্ধ। অনেকেই দোকান খোলার আগ্রহও হারিয়েছেন।
কুয়াকাটা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাঈনুল ইসলাম বলেন, দিনে দোকান খুলে বসে থাকি, কোনো ক্রেতা পাই না। পর্যটকই না থাকলে আমাদের ব্যবসা চলবে কীভাবে?”
ফটোগ্রাফার সাইফুল মুন্সী বলেন, সৈকতে এখন কেউ আসে না ছবি তুলতে। আগে প্রতিদিন অন্তত ৫-১০ জনের ছবি তুলতাম, এখন পুরো দিনেও একজন পর্যটক মেলে না।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, পর্যটক না থাকায় হোটেলের অনেক কর্মচারী বেকার হয়ে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অনেক হোটেল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়ায় কেউ বুকিং দিচ্ছে না। ১৩ তারিখে তো একেবারেই ফাঁকা সৈকত দেখলাম। এমন অবস্থা আমরা আগে দেখিনি।
কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব টোয়াক সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুশার বলেন, এখন পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে উপলক্ষে পর্যটকের উপস্থিতি এখন বেশি থাকার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটক কম আসছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পর্যটন ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কুয়াকাটা নির্ভরশীল একটি শহর, এখানে ৭০ শতাংশ মানুষ পর্যটন সংশ্লিষ্ট পেশায় জড়িত।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশের পর্যটন শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। কুয়াকাটার মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকায় দ্রুত স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে পর্যটকদের আগমন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:৩৩
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:১১
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:৪৫
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:৩২

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪:৩২
আমার দেশ তোমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ। আমি কে? তুমি কে? হাদী হাদী” এই স্লোগানে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাব চত্বরে কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বক্তারা জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুর খবরে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি কুয়াকাটা প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষ একই স্থানে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, পর্যটকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের মুখপাত্র মো. মোজাহিদ সিফাত, আহ্বায়ক মো. মহিন এবং সদস্য সচিব আরিফুল ইসলামসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আমার দেশ তোমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ। আমি কে? তুমি কে? হাদী হাদী” এই স্লোগানে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাব চত্বরে কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের ব্যানারে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বক্তারা জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুর খবরে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি কুয়াকাটা প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষ একই স্থানে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, পর্যটকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা স্টুডেন্ট এলায়েন্সের মুখপাত্র মো. মোজাহিদ সিফাত, আহ্বায়ক মো. মহিন এবং সদস্য সচিব আরিফুল ইসলামসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:২১
১৯৭১ সালের ৮ মে, শনিবার। সারা দেশে তখন পাক হানাদার বাহিনীর তাণ্ডব চলছিল। তবুও অন্য দিনের মতোই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে পূজোয় বসেন সদ্য বিবাহিত নিখিল দাসের স্ত্রী মিনতি দাস। পূজা শেষ করে রান্নার কাজে মনোযোগ দেন। হঠাৎ দূর থেকে হট্টগোলের শব্দ শুনে ঘর থেকে বাইরে আসেন। তখনই বাড়ির অদূরে খালের পাড়ে দেখতে পান সেনাবাহিনীর বড় একটি গানবোট ঘাটে ভিড়েছে। সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে একে নেমে আসে সৈন্যরা। এক মুহূর্ত দেরি না করে বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে বাড়ির পেছনে থাকা ঘন কলাগাছের ঝোপে পালিয়ে লুকিয়ে পড়েন। খানিক বাদেই শুরু হয় গুলির শব্দ।
প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ গুলির শব্দের পর দুপুরের আজানের আওয়াজ শোনা যায়। তখন ঝোপ থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন, বাড়ির পাশে দুলাল দাস (২৫), পিতা শচীন্দ্র দাসের নিথর দেহ পড়ে আছে। কথাগুলো বলতে বলতে মিনতি দাসের কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে আসে, আর নিজের অজান্তেই চোখের কোণে জল জমে ওঠে। মিনতি দাস আরও বলেন, ভগবানের কৃপায় ওই দিন আমার স্বামী বাড়িতে ছিল না। সকালে তার অসুস্থ মামাকে দেখতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফলে গিয়েছিল।
জানা যায়, সময়টা ছিল আনুমানিক সকাল ১১টা, ১৯৭১ সালের ৮ মে। খরস্রোতা কমলাকান্ত খালের ঘাটে পাক হানাদার বাহিনীর একটি গানবোট এসে নোঙর করে। এই খালের দুই পাশেই ছিল হিন্দু অধ্যুষিত দুটি গ্রাম—সুতাবাড়িয়া ও কুন্ডপাড়া (মাঝগ্রাম)। প্রায় ২০-২৫ জন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য স্থানীয় কয়েকজন রাজাকার ও আলবদরের সহযোগিতায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর মেশিনগানের গুলি ছুড়তে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দিগ্বিদিক ছুটে যাওয়া মানুষগুলো। এরপর একে একে ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিছু কিছু বাড়িতে রাজাকাররা লুটপাট চালায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেখা যায় অর্ধশত নিরীহ মানুষের গুলিবিদ্ধ লাশ। প্রতিবেশী গ্রামের লোকজন সন্ধ্যার আগে এসে লাশগুলো যার যার বাড়িতে নিয়ে মাটি চাপা দেয়। বর্বরোচিত এ গণহত্যায় অনেকের নাম-পরিচয় আজও পাওয়া যায়নি।
সুতাবাড়িয়া গ্রামের রবিন মালাকার জানান, ওই দিন গোলাগুলির শব্দ শুনে এলোপাতাড়ি ছুটে অনেক দূরে চলে যান। ভাগ্য ভালো যে গুলি লাগেনি। বিকেলে ফিরে এসে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের লাশ দেখতে পান। পরে তারা সৎকার না করে মাটি চাপা দিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, এই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গণকবর রয়েছে। এর মধ্যে নায়েবের বাড়িতে ৬টি, শশীদাসের বাড়িতে ৫টি, ঠাকুরবাড়িতে ৩টি, সন্নামত বাড়িতে ২টি, ভুমালি বাড়িতে ২টিসহ মোট ১৮টি গণকবর রয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন জায়গায় আরও অনেক কবর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। গণহত্যায় ২৭ জনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও বাকিদের শনাক্ত করা যায়নি। স্বাধীনতার ৫৪-৫৫ বছর পার হলেও সেখানে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। স্মৃতি হিসেবে যতটুকু সমাধি সংরক্ষণ হয়েছে, তা পরিবারের অর্থায়নেই হয়েছে।
শহীদ হওয়া পরিবারের সদস্য বাবু রঞ্জন সমাদ্দার জানান, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য অনেক বছর আগে জমির কাগজপত্র জমা দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত তা নির্মাণ করা হয়নি। শুধু ২৫ মার্চ এলেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ফুলের তোড়া দেওয়া হয়।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, প্রতি বছরই আমরা ওই গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি। অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুতাবাড়িয়া বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৯৭১ সালের ৮ মে, শনিবার। সারা দেশে তখন পাক হানাদার বাহিনীর তাণ্ডব চলছিল। তবুও অন্য দিনের মতোই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে পূজোয় বসেন সদ্য বিবাহিত নিখিল দাসের স্ত্রী মিনতি দাস। পূজা শেষ করে রান্নার কাজে মনোযোগ দেন। হঠাৎ দূর থেকে হট্টগোলের শব্দ শুনে ঘর থেকে বাইরে আসেন। তখনই বাড়ির অদূরে খালের পাড়ে দেখতে পান সেনাবাহিনীর বড় একটি গানবোট ঘাটে ভিড়েছে। সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে একে নেমে আসে সৈন্যরা। এক মুহূর্ত দেরি না করে বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে বাড়ির পেছনে থাকা ঘন কলাগাছের ঝোপে পালিয়ে লুকিয়ে পড়েন। খানিক বাদেই শুরু হয় গুলির শব্দ।
প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ গুলির শব্দের পর দুপুরের আজানের আওয়াজ শোনা যায়। তখন ঝোপ থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন, বাড়ির পাশে দুলাল দাস (২৫), পিতা শচীন্দ্র দাসের নিথর দেহ পড়ে আছে। কথাগুলো বলতে বলতে মিনতি দাসের কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে আসে, আর নিজের অজান্তেই চোখের কোণে জল জমে ওঠে। মিনতি দাস আরও বলেন, ভগবানের কৃপায় ওই দিন আমার স্বামী বাড়িতে ছিল না। সকালে তার অসুস্থ মামাকে দেখতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফলে গিয়েছিল।
জানা যায়, সময়টা ছিল আনুমানিক সকাল ১১টা, ১৯৭১ সালের ৮ মে। খরস্রোতা কমলাকান্ত খালের ঘাটে পাক হানাদার বাহিনীর একটি গানবোট এসে নোঙর করে। এই খালের দুই পাশেই ছিল হিন্দু অধ্যুষিত দুটি গ্রাম—সুতাবাড়িয়া ও কুন্ডপাড়া (মাঝগ্রাম)। প্রায় ২০-২৫ জন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য স্থানীয় কয়েকজন রাজাকার ও আলবদরের সহযোগিতায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর মেশিনগানের গুলি ছুড়তে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দিগ্বিদিক ছুটে যাওয়া মানুষগুলো। এরপর একে একে ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিছু কিছু বাড়িতে রাজাকাররা লুটপাট চালায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দেখা যায় অর্ধশত নিরীহ মানুষের গুলিবিদ্ধ লাশ। প্রতিবেশী গ্রামের লোকজন সন্ধ্যার আগে এসে লাশগুলো যার যার বাড়িতে নিয়ে মাটি চাপা দেয়। বর্বরোচিত এ গণহত্যায় অনেকের নাম-পরিচয় আজও পাওয়া যায়নি।
সুতাবাড়িয়া গ্রামের রবিন মালাকার জানান, ওই দিন গোলাগুলির শব্দ শুনে এলোপাতাড়ি ছুটে অনেক দূরে চলে যান। ভাগ্য ভালো যে গুলি লাগেনি। বিকেলে ফিরে এসে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের লাশ দেখতে পান। পরে তারা সৎকার না করে মাটি চাপা দিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, এই গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গণকবর রয়েছে। এর মধ্যে নায়েবের বাড়িতে ৬টি, শশীদাসের বাড়িতে ৫টি, ঠাকুরবাড়িতে ৩টি, সন্নামত বাড়িতে ২টি, ভুমালি বাড়িতে ২টিসহ মোট ১৮টি গণকবর রয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন জায়গায় আরও অনেক কবর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। গণহত্যায় ২৭ জনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও বাকিদের শনাক্ত করা যায়নি। স্বাধীনতার ৫৪-৫৫ বছর পার হলেও সেখানে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। স্মৃতি হিসেবে যতটুকু সমাধি সংরক্ষণ হয়েছে, তা পরিবারের অর্থায়নেই হয়েছে।
শহীদ হওয়া পরিবারের সদস্য বাবু রঞ্জন সমাদ্দার জানান, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য অনেক বছর আগে জমির কাগজপত্র জমা দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত তা নির্মাণ করা হয়নি। শুধু ২৫ মার্চ এলেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ফুলের তোড়া দেওয়া হয়।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, প্রতি বছরই আমরা ওই গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি। অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুতাবাড়িয়া বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:১০
কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘আলীশান’ নামের আবাসিক হোটেলের ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নারীর নাম ফাহিমা আক্তার (২৪)। হোটেলের রেজিস্টার সূত্রে জানা গেছে, তিনি কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ ডিসেম্বর ফাহিমা আক্তার ও আরিফ হোসেন নামের এক যুবক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কুয়াকাটায় আসেন। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলের ১০৫ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন।
ঘটনার দিন বিকাল থেকে কক্ষটির দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের সময় কক্ষটির ভেতর থেকে দরজার ছিটকানি লাগানো ছিল।
ঘটনার পর থেকে স্বামী পরিচয়দানকারী আরিফ হোসেন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার পরিচয় ও অবস্থান শনাক্তে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহব্বত খান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘আলীশান’ নামের আবাসিক হোটেলের ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নারীর নাম ফাহিমা আক্তার (২৪)। হোটেলের রেজিস্টার সূত্রে জানা গেছে, তিনি কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ ডিসেম্বর ফাহিমা আক্তার ও আরিফ হোসেন নামের এক যুবক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কুয়াকাটায় আসেন। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলের ১০৫ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন।
ঘটনার দিন বিকাল থেকে কক্ষটির দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের সময় কক্ষটির ভেতর থেকে দরজার ছিটকানি লাগানো ছিল।
ঘটনার পর থেকে স্বামী পরিচয়দানকারী আরিফ হোসেন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার পরিচয় ও অবস্থান শনাক্তে তদন্ত জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহব্বত খান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.
Google AdSense
This is a demo ad. Your live ads will be displayed here once AdSense is properly configured.